X
সোমবার, ০৬ মে ২০২৪
২৩ বৈশাখ ১৪৩১

শীতের মৌসুমে চাহিদা বেড়েছে স্ট্রিট ফুডের

আতিক হাসান শুভ
২৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:১০আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:১০

বিকাল হলেই পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকার ফুটপাতে সারি সারি বসে বাহারি রকমের খাবারের (ফাস্ট ফুড) দোকান। বিভিন্ন রেস্তোরাঁর তুলনায় কম দামে পাওয়া যায় বলে এসব দোকানে প্রতিনিয়তই বাড়ছে ভোজনরসিক মানুষের সংখ্যা। মুখরোচক খাবার খেতে এসব দোকানে ভিড় জমায় শিশু-কিশোর ও বয়স্করা। তবে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাই এখানকার নিয়মিত ক্রেতা। এখন শীত মৌসুম হওয়ায় আগের তুলনায় চাহিদা বেড়েছে স্ট্রিট ফুডের।

সরেজমিন দেখা যায়, ফুটপাতের দোকানগুলোতে ভিড় লেগেই আছে। কেউ দাঁড়িয়ে খাবার খাচ্ছেন, কেউ বা বসে। আবার কেউ খাবারের জন্য অপেক্ষায় আছেন। কী নেই এসব স্ট্রিট ফুডের দোকানে! ফুচকা-চটপটি থেকে শুরু করে বার্গার, পিৎজা, জিলাপিসহ রেস্টুরেন্টের প্রায় সকল প্রকার খাবার পাওয়া যায় ফুটপাতে। স্বল্প মূল্যে ফুটপাতের দোকানগুলোতে যেকোনও খাবার পাচ্ছেন ভোজনরশিক মানুষেরা।

গরম গরম চপ ও অন্যান্য খাবার খেতে নিয়ম মেনে লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষায় থাকতে হয়

পুরান ঢাকার লক্ষ্মীবাজার এলাকায় স্ট্রিট ফুডের মধ্যে সবচেয়ে বেশি চাহিদা এখন ভাপা পিঠা, চিতই পিঠা, পুলি পিঠাসহ নানান ধরনের শীতের পিঠার। এসবের পাশাপাশি ভুট্টা, ঝালমুড়ি, পানিপুরি, রোল, বিভিন্ন ধরনের চপ ও ভাজাপোড়া খাবারের চাহিদা বেড়েছে। শীতের মৌসুমে ভাজাপোড়া খাবারের চাহিদা এতোটাই বেড়েছে যে, কড়াই থেকে নামানো গরম গরম চপ ও অন্যান্য খাবার খেতে নিয়ম মেনে লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষায় থাকতে হয়।

মোনালিসা নামে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী বলেন, স্ট্রিট ফুডের নানান ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে জানা সত্ত্বেও এসব লোভনীয় খাবার দেখলে না খেয়ে থাকতে পারি না। তবে গরমকালে এই স্বভাবটা ছিল না। শীত আসার পর থেকে এই স্বভাব হয়েছে। কারণ ক্যাম্পাস থেকে যখন পড়াশোনা শেষ করে বের হয়ে বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে আড্ডা দেই, তখন সবাই বলবে চল গরম কিছু খাই। আর তখনই এসব খাবার খাওয়া হয়।

রেস্টুরেন্টের সব আইটেম এখানে সুলভ মূল্যে পাওয়া যায়

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষার্থী ১৫তম ব্যাচের হৃদয় বলেন, শীত এসেছে বলে আমাদের এখানে আনাগোনা বেড়েছে বিষয়টা এমন না, আমরা সবসময় স্ট্রিট ফুডের খাবার খেতে অভ্যস্ত। বান্ধবী নিয়া বা গার্লফ্রেন্ড নিয়ে সবসময় রেস্টুরেন্টে খাওয়ার মুরদ নেই। তাছাড়া রেস্টুরেন্টের সব আইটেম এখানে পাওয়া যায়। তাই আর ওদিকে অতো ঝোঁক নেই। বেশিরভাগ সময় ফুটপাতের এসব খাবার খেয়েই দিন পার। শীত আসায় এখন গরম আর মুখরোচক খাবারের চাহিদা বেড়েছে। আর তারাও তা পূরণ করছে।

শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি নানা বয়সী মানুষের আনাগোনা এসব স্ট্রিট ফুডের দোকানে। অনেকে পরিবার নিয়ে এসব দোকানে খেতে এসেছেন। তাদের একজন বলেন, সারাদিন অফিসের কারণে বাচ্চাদের নিয়ে তেমন বের হতে পারি না। ছুটির দিন ছাড়া তেমন কোথাও ঘুরতেও যাওয়া হয় না। তাই মাঝে মধ্যেই অফিস শেষ করে বিকালে বা সন্ধ্যায় চেষ্টা করি বউ বাচ্চাদের একটু সময় দিতে। আর বের হলে বেশিরভাগ সময় এই স্ট্রিট ফুডের খাবার খাওয়া হয়। মোটামুটি সাধ্যের মধ্যে এসব খাবার হয় আর মানও অতো বেশি খারাপ না।

কবি নজরুল কলেজ, সোহরাওয়ার্দী কলেজ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বেশি আসেন

শীত উপলক্ষে বেচাকেনা কেমন বেড়েছে? এমন প্রশ্নের জবাবে ভ্রাম্যমাণ জিলাপি বিক্রেতা রবিন বলেন, আমাদের এখন মূলত বেচাকেনা হয় বিকাল বেলায়। কারণ কবি নজরুল কলেজ, সোহরাওয়ার্দী কলেজ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিকালে আড্ডা দেয় এখানে, আর তারাই আমাদের মূল ক্রেতা। শীত আসায় ছাত্র-ছাত্রীরা একটু গরম খাবার পছন্দ করেন বেশি, তাই বেচাবিক্রি ভালো হচ্ছে। অন্যান্য দিনের তুলনায় ছুটির দিনে আরও বেশি ভিড় থাকে। আর তখন বেচাকেনাও ভালো হয়।

কবি নজরুল কলেজের সামনে থাকা আরেকটি ভ্রাম্যমাণ পিৎজার দোকানি জালাল। রেস্টুরেন্টের মতো নানা ধরনের পিৎজা তৈরি করেন তিনি। সেই পিৎজা খেতে ভিড় জমেছে অনেকের। শীত আসায় কাস্টমার বেড়েছে দ্বিগুণ, বিক্রিও আগের চেয়ে বেড়েছে বলে দাবি করেছেন এই বিক্রেতা। জালাল জানান, রেস্টুরেন্টে যেই ধরনের পিৎজা তৈরি করা হয় এখানেও একই পিৎজা তৈরি করা হয়। নাগালের মধ্যে হওয়ায় এসব দোকানে সবসময় ভিড় থাকে। তাছাড়া এখন শীতের মধ্যে চাহিদা আরও বেড়েছে।

ছাত্র-ছাত্রীরা একটু গরম খাবার পছন্দ করেন বেশি, তাই বেচাবিক্রি ভালো হচ্ছে

লক্ষ্মীবাজার এলাকার চটপটি-ফুচকার দোকানি মো. রাসেল বলেন, শীতে আমাদের একটু বেশি কাস্টমারের চাপ থাকে। বিক্রিও ভালো। কাস্টমারের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য আমরা সর্বোচ্চটুকু চেষ্টা করি। তাই পরিবেশ ও খাবারের মান দুটিই ভালো রাখার চেষ্টা করি। ছাত্র-ছাত্রীসহ সব বয়সের কাস্টমার এখানে খেতে আসেন। চটপটি-ফুচকা আগে মেয়েদের বেশি পছন্দের ছিল। এখন ছেলে-মেয়ে-বৃদ্ধ সবার পছন্দ।

/আরআইজে/
সম্পর্কিত
পরিকল্পনাবিহীন ডিগ্রি অর্জনের কারণে বেকার থাকতে হচ্ছে: সালমান এফ রহমান 
কামরাঙ্গীরচর থেকে কাউকে উচ্ছেদ করা হবে না: মেয়র তাপস
নির্মাণাধীন ভবনে এডিসের লার্ভা, লক্ষাধিক টাকা জরিমানা
সর্বশেষ খবর
লাইসেন্সবিহীন টিভি চ্যানেল বন্ধে কার্যক্রম শুরু
লাইসেন্সবিহীন টিভি চ্যানেল বন্ধে কার্যক্রম শুরু
হামাসের রকেট হামলার জবাবে রাফাহ শহরে ইসরায়েলি অভিযান
হামাসের রকেট হামলার জবাবে রাফাহ শহরে ইসরায়েলি অভিযান
সুন্দরবনে আগুন লাগা স্থানে ধোঁয়া দেখলেই পানি দেওয়া হচ্ছে
সুন্দরবনে আগুন লাগা স্থানে ধোঁয়া দেখলেই পানি দেওয়া হচ্ছে
আজও ঝোড়ো হাওয়াসহ শিলাবৃষ্টির আভাস
আজও ঝোড়ো হাওয়াসহ শিলাবৃষ্টির আভাস
সর্বাধিক পঠিত
‘টর্চার সেলে’ নিজ হাতে অপারেশনের নামে পৈশাচিক আনন্দ পেতো মিল্টন, জানালেন হারুন
‘টর্চার সেলে’ নিজ হাতে অপারেশনের নামে পৈশাচিক আনন্দ পেতো মিল্টন, জানালেন হারুন
চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা নিয়ে যা বললেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী
চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা নিয়ে যা বললেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী
নিজেদের তৈরি ভেহিকেল পেরুকে উপহার দিলো সেনাবাহিনী
নিজেদের তৈরি ভেহিকেল পেরুকে উপহার দিলো সেনাবাহিনী
অভিযোগের শেষ নেই মাদ্রাসায়, চলছে শুদ্ধি অভিযান
অভিযোগের শেষ নেই মাদ্রাসায়, চলছে শুদ্ধি অভিযান
কোন পথে এগোচ্ছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ?
কোন পথে এগোচ্ছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ?