বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে বসে প্রায় ২০ মিনিট বিচারকার্য পর্যবেক্ষণ করেছেন ভারতের প্রধান বিচারপতি ধনঞ্জয় যশবন্ত চন্দ্রচূড়। রবিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগে বিচারকার্য পর্যবেক্ষণ করেন তিনি।
এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন– ভারতের সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি অনিরুদ্ধ বোস, বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত, প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগে বিচারপতি বোরহান উদ্দিন, বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম, বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম, বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী ও বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন।
এ দিন আদালতের কার্যক্রমের শুরুতে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি মমতাজ উদ্দিন ফকির ভারতের প্রধান বিচারপতি ও অপর বিচারপতিদের অভিনন্দন জানান।
এরপর কার্যতালিকা অনুযায়ী বিচারকার্য শুরু হলে তা পর্যবেক্ষণ করেন ভারতের প্রধান বিচারপতি।
পরে আদালত কক্ষ থেকে বিদায় নেওয়ার আগে ধনঞ্জয় যশবন্ত চন্দ্রচূড় বলেন, ‘বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালতে আমাদের নিয়ে আসায় আমরা সম্মানিত বোধ করছি। ভারত ও বাংলাদেশের বিচারিক সংস্কৃতি একই ধরনের। আমি বিচারপতি ও আইনজীবীদের ভারতে সুপ্রিম কোর্টে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।’
এর আগে, গত ২২ ফেব্রুয়ারি ‘ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন সাউথ এশিয়ান কনস্টিটিউশনাল কোর্টস ইন দ্য টুয়েন্টি-র্ফাস্ট সেঞ্চুরি: লেসন্স ফ্রম বাংলাদেশ অ্যান্ড ইন্ডিয়া’ শীর্ষক দুই দিনব্যাপী সম্মেলনে যোগ দিতে বাংলাদেশে আসেন ধনঞ্জয় যশবন্ত চন্দ্রচূড়।
ভারতের সুপ্রিম কোর্টের ৫০তম প্রধান বিচারপতি ধনঞ্জয় যশবন্ত চন্দ্রচূড় ১৯৫৯ সালের ১১ নভেম্বর মুম্বইয়ে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা যশবন্ত বিষ্ণু চন্দ্রচূড়ও ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি। ১৯৭৮ সাল থেকে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত তিনি দেশের প্রধান বিচারপতি ছিলেন। এখন পর্যন্ত তিনিই ছিলেন ভারতের সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদি প্রধান বিচারপতি।
মুম্বাইয়ের ক্যাথিড্রাল অ্যান্ড জন কোনন স্কুল থেকে পড়াশোনা শেষ করার পর বিচারপতি চন্দ্রচূড় দিল্লির সেন্ট কলম্বাস স্কুলে ভর্তি হন। ১৯৭৯ সালে দিল্লির সেন্ট স্টিফেন্স কলেজ থেকে অঙ্ক এবং অর্থনীতিতে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন।
১৯৮২ সালে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন বিচারপতি চন্দ্রচূড়। পরে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। আইন নিয়ে গবেষণাও করেন হার্ভার্ড থেকেই।
সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হিসাবে অনেক আলোচিত রায় দিয়েছেন বিচারপতি চন্দ্রচূড়। বাবার দেওয়া রায়কেও খণ্ডন করেছিলেন এই বিচারপতি। বাবার ঘোষণা করা রায়ে ‘গুরুতর খামতি’ ছিল বলেও মন্তব্য করেন বিচারপতি চন্দ্রচূড়।