X
সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪
১৫ বৈশাখ ১৪৩১

সবজিতে স্বস্তি ফিরছে, মাংসের বাজার নিয়ন্ত্রণহীন

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
২২ মার্চ ২০২৪, ১৪:২০আপডেট : ২৫ মার্চ ২০২৪, ১৪:১১

অনেক দিন ধরে চলে আসা ঊর্ধ্বমুখী বাজারে কমতে শুরু করেছে সবজির দাম। এতে কিছুটা হলেও স্বস্তির নিশ্বাস ফেলতে পারছে সাধারণ মানুষ। যদিও এই দাম কমে যাওয়াকে ক্রেতারা ক্ষণস্থায়ী বলছেন। ক্রেতাদের দাবি, আজকে কম দামে পাচ্ছি, এটা আজকের জন্য শান্তি দিচ্ছে। আগামীকাল কী হবে আমরা তা জানি না।

আজকের বাজারে সবজি বিক্রি হচ্ছে তুলনামূলক কম দামে। তবে সবজি কম হলেও মাংসের বাজার রয়েছে চড়া। সরকার গরুর মাংস, মুরগির মাংসের দাম নির্ধারণ করে দিলেও তার কোনও তোয়াক্কাই করছে না বিক্রেতারা। তারা বিভিন্ন অজুহাতে এসব মাংস বিক্রি করছে উচ্চমূল্যে। এদিকে গত সপ্তাহেও সব গরুর মাংসের দোকানে মূল্য তালিকা থাকলেও আজকে কোনও দোকানেই তা দেখা যায়নি। মূল্য তালিকা না থাকার কারণ জানতে চাইলে বিক্রেতাদের উত্তপ্ত উত্তর—‘কোনও মূল্য তালিকা নাই’।

শুক্রবার (২২ মার্চ) রাজধানীর মিরপুর ১ নম্বর কাঁচা বাজার সরেজমিন দেখা যায় বাজারের  চিত্র। সবজির বাজার রয়েছে আগের তুলনায় নিম্নমুখী। মুদি দোকানের পরিস্থিতি রয়েছে অপরিবর্তিত। আর মাংসের বাজার রয়েছে নিয়ন্ত্রণহীন।

আজকের বাজারে শিম ৫০ টাকা, টমেটো ৫০ টাকা, মুলা ৫০ টাকা, দেশি গাজর ৫০ টাকা, লম্বা বেগুন ৬০ টাকা, সাদা গোল বেগুন ৬০ টাকা, কালো গোল বেগুন ৮০ টাকা, শসা ১০০-৬০ টাকা, খিরাই ৫০ টাকা, উচ্ছে ৮০ টাকা, করলা ১০০ টাকা, পেঁপে ৫০ টাকা,  মিষ্টি কুমড়া ৪০ টাকা, ঢেঁড়স ৮০ টাকা, পটল ৮০ টাকা, চিচিঙ্গা ৫০ টাকা, ধুন্দল ৬০ টাকা, বরবটি ১০০ টাকা, কচুর লতি ৮০-১০০ টাকা, সজনে ২০০ টাকা, কচুরমুখী ১৪০, কাঁচা মরিচ ১০০ টাকা, ধনেপাতা ১৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর মানভেদে প্রতিটি লাউ ৬০-৭০ টাকা, চাল কুমড়া ৬০ টাকা, ফুলকপি ৫০ টাকা, বাঁধাকপি ৫০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি হালি লেবু বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা করে। এক্ষেত্রে গত সপ্তাহের তুলনায় বেশিরভাগ সবজির দাম কমেছে ১০ টাকা থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত। তবে শসা, কচুরমুখী ও কাঁচামরিচের দাম বেড়েছে ২০ টাকা করে। আর পেঁপে ও মিষ্টি কুমড়ার দাম বেড়েছে ১০ টাকা করে।

সবজির দাম কমার প্রসঙ্গে বিক্রেতারা বলছেন, সবজির দাম কয়েক দিন পরে আরও কমে যাবে। 

বাজার করতে আসা সাইদুর রহমান বলেন, আজকে তো দাম কম বুঝলাম। আজকে কিনে না হয় কিছুটা শান্তি পেলাম। কিন্তু কালকে আবার কত দাম বাড়ে তা তো আমরা জানি না।

আরেক ক্রেতা ওবায়দুর শিকদার বলেন, দাম কমাটা আমাদের জন্য সুসংবাদের মতো। খাদ্যদ্রব্যের দাম কমলে সত্যিই আমাদের অনেকটা রিলিফ লাগে।

এছাড়া আজকে মানভেদে দেশি পেঁয়াজ ৬০-৮০ টাকা, লাল ও সাদা আলু ৪০ টাকা, নতুন দেশি রসুন ১২০ টাকা, চায়না রসুন ২২০ টাকা, ভারতীয় আদা ২২০,  চায়না আদা ২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে গত সপ্তাহের তুলনায় পেঁয়াজের দাম আবারও কমেছে ১০-২০ টাকা। আর দেশি রসুনের দাম কমেছে ৩০ টাকা এবং চায়না রসুনের দাম বেড়েছে ২০ টাকা।

পেঁয়াজের নিম্নমুখী দাম নিয়ে বিক্রেতা মো. শরীফ বলেন, পেঁয়াজের দাম আরও কমে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে।

এদিকে সবজির বাজারে স্বস্তি ফিরলেও মাংসের বাজার রয়েছে অস্থির। সরকার ব্রয়লার মুরগির মাংসের কেজি ১৭৫ টাকা এবং গরুর মাংসের কেজি ৬৬৪ টাকা নির্ধারণ করে দিলেও আজকে বাজারের কোনও দোকানে এই দামে এসব মাংস বিক্রি করতে দেখা যায়নি।

আজকে ওজন অনুযায়ী ব্রয়লার মুরগি ১৯৫-২১৫ টাকা, কক মুরগি ২৯০-৩১০ টাকা, লেয়ার মুরগি ৩২০ টাকা, দেশি মুরগি ৬৫০ টাকা, গরুর মাংস ৭৫০-৭৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর মুরগির লাল ডিম ১২০ টাকা এবং সাদা ডিম ১১৫ টাকা প্রতি ডজন বিক্রি হচ্ছে।

নির্ধারিত দামে কেন ব্রয়লার মুরগির মাংস বিক্রি হচ্ছে না জানতে চাইলে বি.বাড়িয়া চিকেন হাউজের বিক্রেতা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, সরকার যে কী দাম নির্ধারণ করে তা আমরা বুঝি না। ১৭৫ টাকা দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে, অথচ আমার কেনাই পড়েছে ১৯৪ টাকা। তাহলে আমি ১৭৫ টাকায় কীভাবে বিক্রি করবো?  এসময় তিনি তার ক্রয় রসিদও দেখান।

আর গরুর মাংসের দাম নিয়ে বিক্রেতারা বলেন, গরুর দাম তো বেশি। আমরা কম দামে বিক্রি করবো কীভাবে?

মামা-ভাগিনা গোশত বিতানের বিক্রেতা বলেন, আমরা মাংস ৭৫০ থেকে ৭৮০ টাকায় বিক্রি করি। যার কাছে যেই দামে পারি সেই দামেই বিক্রি করি। সরকার নির্ধারিত দামে কেন বিক্রি করছেন না জানতে চাইলে তিনি বলেন, সরকার গাড়িতে করে যে মাংস বিক্রি করে সেগুলোতে কলিজা, মাথার মাংসসহ সব জায়গার মাংস মেশানো থাকে, তাই দাম কম। আমরা আলাদা জায়গার মাংস বিক্রি করি, তাই দাম বেশি।

এছাড়া আজকের বাজারে ইলিশ মাছ ওজন অনুযায়ী ২০০০-২৮০০ টাকা, রুই মাছ ৪৫০-৫৫০ টাকা,  কাতল মাছ ৪০০-৫৫০ টাকা, কালিবাউশ ৫০০-৮০০ টাকা, চিংড়ি মাছ ৯০০-১৫০০ টাকা, কাঁচকি মাছ ৫০০ টাকা, কৈ মাছ ৬০০-১২০০ টাকা, পাবদা মাছ ৫০০-৬০০ টাকা, শিং মাছ ৪০০-১২০০ টাকা, টেংরা মাছ ৬০০-১০০০ টাকা, মেনি মাছ ৫০০-৮০০ টাকা, বেলে মাছ ১২০০ টাকা, বোয়াল মাছ ৭০০-১২০০ টাকা, রূপচাঁদা মাছ ১০০০-১৩০০ টাকা, কাজলী ১৪০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। 

এদিকে আজকে মুদি দোকানের পণ্যের দামও রয়েছে অপরিবর্তিত। তবে এক লাফে ৪০ টাকা বেড়ে গেছে খেসারির ডালের দাম। আজকে ছোট মসুর ডাল ১৪০ টাকা, মোটা মসুর ডাল ১১০ টাকা, বড় মুগ ডাল ১৬০ টাকা, ছোট মুগ ডাল ১৮০ টাকা, খেসারি ডাল ১২০ টাকা, বুটের ডাল ১১৫ টাকা, ছোলা ১১০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে খেসারির ডাল ছিল ১৬০ টাকা কেজি, আজকে তা বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা কেজি।

খেসারির ডালের দাম কমে যাওয়া নিয়ে এক বিক্রেতা আমিনুল বলেন, ঘাটতি ছিল বলেই দাম বেড়ে গিয়েছিল। এখন ঘাটতি কমে যাওয়ায় দাম আবার কমে গেছে।

এছাড়া মুদি দোকানের অন্যান্য পণ্যের দাম রয়েছে অপরিবর্তিত। আজকে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৬৩ টাকা, খোলা সয়াবিন তেল ১৪৯ টাকা, প্যাকেটজাত চিনি ১৪৫ টাকা, খোলা চিনি ১৪০ টাকা, দুই কেজি প্যাকেট ময়দা ১৫০ টাকা, আটা দুই কেজির প্যাকেট ১৩০ টাকা, খোলা সরিষার তেল প্রতি লিটার ১৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

/এএজে/এমএস/এমওএফ/
সম্পর্কিত
সবজির বাজার ঊর্ধ্বমুখী, তীব্র গরমকে দুষছেন বিক্রেতারা
সোনার দাম কমেছে, আজ থেকেই কার্যকর
ওঠানামা করছে মুরগির দাম, বাড়ছে সবজির
সর্বশেষ খবর
বন ও বনভূমি রক্ষায় কর্মকর্তাদের নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করতে হবে: পরিবেশমন্ত্রী
বন ও বনভূমি রক্ষায় কর্মকর্তাদের নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করতে হবে: পরিবেশমন্ত্রী
মোনাকোর হারে লিগ ওয়ান চ্যাম্পিয়ন পিএসজি
মোনাকোর হারে লিগ ওয়ান চ্যাম্পিয়ন পিএসজি
বাজারে এলো বাংলা ভাষার স্মার্টওয়াচ ‘এক্সপার্ট’
বাজারে এলো বাংলা ভাষার স্মার্টওয়াচ ‘এক্সপার্ট’
চার বছরে আট ফ্লপ, আসছে আরও এক হালি!
চার বছরে আট ফ্লপ, আসছে আরও এক হালি!
সর্বাধিক পঠিত
ভূমি ব্যবস্থাপনায় চলছে জরিপ, যেসব কাগজ প্রস্তুত রাখতে হবে
ভূমি ব্যবস্থাপনায় চলছে জরিপ, যেসব কাগজ প্রস্তুত রাখতে হবে
এমন আবহাওয়া আগে দেখেনি ময়মনসিংহের মানুষ
এমন আবহাওয়া আগে দেখেনি ময়মনসিংহের মানুষ
‘হিট অফিসার’: পদ কীভাবে নেতিবাচক হয়ে ওঠে
‘হিট অফিসার’: পদ কীভাবে নেতিবাচক হয়ে ওঠে
স্কুলে আসার আগেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন শিক্ষক
স্কুলে আসার আগেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন শিক্ষক
প্রাথমিক বাদে সোমবার ৫ জেলার সব স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা বন্ধ
প্রাথমিক বাদে সোমবার ৫ জেলার সব স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা বন্ধ