আগামীকাল পবিত্র ঈদুল আজহা। এরইমধ্যে জমে উঠেছে রাজধানীর পশুর হাটগুলো। কোরবানির জন্য পছন্দের গরুটি দেখে-শুনে কিনছেন ক্রেতারা। তবে অধিকাংশ ক্রেতার আগ্রহ ছোট ও মাঝারি আকারের গরুর প্রতি। বড় গরুর প্রতি ক্রেতাদের আগ্রহ কম। এর কারণ এ সময় গরুর মাত্রাতিরিক্ত দাম।
ক্রেতারা বলছেন, ব্যবসায়ীরা গরুর এলোপাতাড়ি দাম হাঁকছেন। গরুর আকারের সঙ্গে দামের কোনও সামঞ্জস্য নেই। আনুমানিক ৫ থেকে সাড়ে ৫ মণ মাংস হবে এমন গরুর দাম হাঁকানো হচ্ছে ৫ লাখ টাকার মতো। এ কারণে ছোট ও মাঝারি আকারের গরুর প্রতি ঝোঁক বেশি ক্রেতাদের।
ধোলাইখাল ট্রাক টার্মিনাল সংলগ্ন পশুর হাট এবং পোস্তগোলা শ্মশানঘাট সংলগ্ন পশুর হাট ঘুরে দেখা যায়, অধিকাংশ ক্রেতাদের আগ্রহ ছোট ও মাঝারি আকারের গরুর প্রতি। বড় গরুর প্রতি ক্রেতাদের আগ্রহ কম। বড় গরুর দাম জানতে চাইলেও পরে আর কেনার জন্য দামাদামিতে যাচ্ছেন না তেমন কেউ।
ধোলাইখাল ট্রাকস্ট্যান্ড সংলগ্ন পশুর হাটে একটি বড় আকারের গরুর দাম ৮ লাখ টাকা হাঁকিয়েছেন ব্যবসায়ী শাহীন। কিন্তু সেই গরু নেওয়ার মতো এখন পর্যন্ত তেমন কোনও ক্রেতা পাওয়া যায়নি, কেউ তেমন দামাদামিও করেননি।
শাহীনের আফসোস, ৮ লাখ টাকা গরুর দাম চেয়েছি, অথচ মানুষ আড়াই লাখ টাকা দাম বলে।
পোস্তগোলা শ্মশানঘাটে ৫-৬ লাখ টাকা দাম হাঁকানো গরুগুলো এখনও অবিক্রীত। সেই গরুগুলোর দাম মাত্র ২ থেকে আড়াই লাখ টাকা দাম বলছেন একজন ক্রেতা। এই দুই হাটে যত ক্রেতা চোখে পড়েছে কমবেশি সবাই ১ থেকে দেড় লাখ টাকার ভেতরে গরু কিনতে চাচ্ছিলেন।
ধোলাইখাল ট্রাকস্ট্যান্ড সংলগ্ন পশুর হাটে ক্রেতা সাহেদ হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ১ লাখ ৪৫ হাজার টাকা দিয়ে একটা গরু কিনলাম। গোস্ত আনুমানিক ৪ মণ হবে। অথচ এই গরুর দাম চেয়েছিল ২ লাখ টাকা। গরুটা দেখতে সুন্দর। গতকালও এসে দেখে গেছি, তখন দেয়নি। এখন শেষ মুহূর্ত, তাই বিক্রি করে দিয়েছেন।
ধোলাইখাল হাটের এক ব্যবসায়ী বলেন, গরুর ক্রেতা যারা আছে তারা অধিকাংশই ১ থেকে দেড় লাখের মধ্যে গরু কিনতে চায়। দেড় লাখের ওপরের ক্রেতা এখন পর্যন্ত তেমন বেশি না। বড় গরু এখন পর্যন্ত প্রত্যাশা অনুযায়ী বিক্রি হয়নি। আজ রাতে বড় গরু বিক্রি হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
এদিকে পোস্তগোলা শ্মশানঘাট ও ধোলাইখাল হাটে হাসিল সংগ্রহকারী কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, যত টাকা দিয়ে হাট ইজারা নেওয়া হয়েছে এখনও সেই টাকার আশপাশে হাসিল সংগ্রহ হয়নি। তবে প্রতিবারের মতো আজ রাতে কাঙ্ক্ষিত বেচাকেনা হওয়ার প্রত্যাশায় আছেন হাসিল সংগ্রহকারীরা।
এদিকে হাটে আসার ৫-৬ দিন পার হয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত কোনও গরু বিক্রি করতে পারেননি অনেক বিক্রেতা। তারা ছটফট করছেন গরু বিক্রির আশায়।
চুয়াডাঙ্গা থেকে চারটি গরু নিয়ে ধোলাইখাল হাটে আসা শাহীন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, গত বছরও এই হাটে অনেক টাকা লস খেয়ে বাড়ি গেছি। এবারও লাভের কোনও আশা নেই। তওবা করছি আর এই হাটে আসবো না।
ছবি: প্রতিবেদক