জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) এক নারী শিক্ষার্থীকে হেনস্তার ঘটনায় ভিক্টর ক্লাসিকের ১২টি বাস আটক করেন শিক্ষার্থীরা। পরে বাসের মালিকপক্ষকে তিন দিনের মধ্যে ব্যবস্থা গ্রহণের শর্তে বাসগুলো ছেড়ে দেওয়া হয়।
শনিবার (১৯ অক্টোবর) দুপুরের দিকে সদরঘাট এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে এসব বাস আটক করা হয়। পরে বিকালে বাসের মালিকপক্ষ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করে দুঃখ প্রকাশ করে এবং ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিলে বাসগুলো ছেড়ে দিতে রাজি হন শিক্ষার্থীরা।
এ বিষয়ে শিক্ষার্থীরা জানান, গত ১৪ অক্টোবর গুলিস্তানে হাফ পাস নিয়ে তর্কবিতর্কের সময় হেনস্তার শিকার হন জবি শিক্ষার্থী জান্নাত এশা। পরে তিনি হেনস্তার ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের আইডিতে বিস্তারিত লিখে পোস্ট করেন। পোস্টটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে ক্ষোভের সৃষ্টি হয় শিক্ষার্থীদের মধ্যে।
ফেসবুকে জান্নাত এশা লেখেন, ‘গত ১৪ অক্টোবর আমি নতুন বাজার (বাঁশতলা) থেকে ভিক্টর ক্লাসিক বাসে উঠি। আমার সঙ্গে আমার ছোট বোন ছিল। কিছুক্ষণ পর হেলপার ভাড়া চাইতে এলে আমি সদরঘাটের ৩০+৩০ মোট ৬০ টাকা ভাড়া দিয়ে দিই। আর বলি যে লাস্ট স্টপেজে নামবো। তখন সে বলে, এটা গুলিস্তান পর্যন্ত যাবে। আমি বললাম, তাহলে টাকা ফেরত দিন। তখন শুরু হয় ঝামেলা। তার মতে, নতুনবাজার থেকে গুলিস্তান বা সদরঘাট দুই জায়গার ভাড়া একই। পরে বললাম, আমি স্টুডেন্ট হাফ ভাড়া কাটেন। তাদের নাকি আবার হাফ ভাড়া কাটারও সিস্টেম নেই।
‘এরপর বললাম, গুলিস্তান থেকে অন্য ভিক্টরে উঠলে জনপ্রতি ১০ টাকা করে নেবে। ওই টাকা ফেরত দিন। আর আমি জগন্নাথের স্টুডেন্ট। আপনারা তো ঘুরে ওখানেই আসবেন। তখন দেখবো, আপনারা স্টুডেন্ট ভাড়া কাটেন কি না। তখন চালক বলেন, এরা বহু ঝামেলা করে ‘ধইরা নামায় দে’। এরপর আমি চিল্লাচিল্লি করি যে হাফ ভাড়া কাটেন। নইলে গুলিস্তান পর্যন্ত ২০ টাকা করে রাখেন। পরে সামনের দিকে এক লোক বলেন, ঠিকই তো আপনি স্টুডেন্ট ভাড়া কাটেন, নইলে টাকা ফেরত দিন। পরে সবার চিল্লাচিল্লিতে হেলপার ১০ টাকা ফেরত দিয়ে যায়। আমি স্টুডেন্ট পরিচয় দেওয়ার পরও তারা হাফ ভাড়া কাটেনি।’
তিনি আরও লেখেন, ‘সমস্যা হলো, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পরিচয় দেওয়ার পরও আমি কেন এমন হেনস্তার শিকার হবো? গাড়ি গুলিস্তান পর্যন্ত আসার কথা। কিন্তু জিপিও তে আসার পর যানজটে পড়ার কারণে অনেকে নেমে যাচ্ছিল। তাই আমিও নেমে পড়ি, যেহেতু সঙ্গে ছোট বোন ছিল।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তাজ্জামুল হক বলেন, ‘মালিকপক্ষের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি এবং তাদের তিন দিনের সময় দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে অভিযুক্ত হেলপারকে হাজির না করলে ভিক্টর ক্লাসিকের সব বাস বন্ধ করে দেওয়া হবে এবং ওই হেলপারকে আইনের আওতায় এনে বিচার করা হবে।’