কবি ও মানবাধিকার কর্মী ফরহাদ মাজহারকে ৮ বছর আগে অপহরণ করে চাঁদা দাবির ঘটনায় আদাবর থানার মামলা আবার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মিনহাজুর রহমান মঙ্গলবার (১১ মার্চ) পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের জন্য এ আদেশ দেন।
বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) আদালত সূত্রে এ তথ্য জানা যায়। মামলাটি পুনরায় তদন্ত করে পিবিআইকে আগামী ২৭ এপ্রিলের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, ফরহাদ মাজহারের নিখোঁজের ঘটনায় ওই দিন রাতেই স্ত্রী ও বর্তমান মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বাদী হয়ে আদাবর থানায় একটি অপহরণ মামলা করেন। এরপর মামলাটি তদন্ত শেষে একই বছরের ৩১ অক্টোবর অপহরণের সত্যতা পাওয়া যায়নি উল্লেখ করে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক মাহাবুবুল ইসলাম।
একইসাথে মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত ও হয়রানির অভিযোগে দণ্ডবিধির ২১১ ও ১০৯ ধারায় ফরহাদ মাজহার ও অপহরণ মামলার বাদী তার স্ত্রী ফরিদা আখতারের বিরুদ্ধে আদালতের অনুমতিক্রমে মামলা দায়ের করে পুলিশ।
তবে মামলার তদন্তের বিষয়ে বাদী ফরিদা আখতার নারাজি দেন। কিন্তু আদালত নারাজি নামঞ্জুরের করে। এ ঘটনায় বাদীপক্ষ অসন্তোষ প্রকাশ করে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে মামলাটির পুনরায় তদন্তের জন্য একটি রিভিশন মামলা দায়ের করেন। সম্প্রতি রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর সেই রিভিশন শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানি শেষে মামলায় বাদীপক্ষের (ফরহাদ মাজহার-ফরিদা) নারাজির ওপর পুনরায় শুনানির আদেশ দেন ঢাকার দশম বিশেষ জজ আদালতের বিচারক রেজাউল করিম। পরে মঙ্গলবার (১১ মার্চ) শুনানি শেষে বাদীপক্ষের নারাজি গ্রহণ করে মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) পুনরায় তদন্তের নির্দেশ দেন ঢাকার ম্যাজিস্ট্রেট আদালত।
মামলার সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালের ৩ জুলাই ভোরে রাজধানীর শ্যামলীর রিং রোডের ১নং হক গার্ডেনের বাসা থেকে বের হওয়ার পর নিখোঁজ হন ফরহাদ মাজহার। পরে স্ত্রীকে নিজের মোবাইল ফোনে জানান, কে বা কারা তাকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে। তাকে মেরেও ফেলা হতে পারে। সন্ধ্যা পর্যন্ত ছয়বার কল করে ৩৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। নিখোঁজ হওয়ার সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাৎক্ষণিক উদ্যোগ নিয়ে মোবাইল ট্র্যাকিং করে তার অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হয় এবং ১৯ ঘণ্টা পর যশোরের অভয়নগরে হানিফ পরিবহনের একটি বাস থেকে তাকে উদ্ধার করে।