‘যারা এ দেশের আদালত, প্রশাসন ভেঙে ভেঙে কবরে পাঠিয়েছে, আইন ভেঙে দিয়েছে, আয়নাঘর বানিয়েছে; তারা আজকে বাংলাদেশে নারী অধিকার, গণতন্ত্র নিয়ে কথা বললে চক্ষু বন্ধ করে বলে দিতে পারি এটা দিল্লির ষড়যন্ত্র। দিল্লির কোনও ষড়যন্ত্রই এ দেশে সফল হতে দেওয়া হবে না।’ এমনটাই মন্তব্য করেছেন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদী।
শুক্রবার (১৪ মার্চ) রাত ১০টায় আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ, ধর্ষকের বিচার, বিডিআর হত্যাকাণ্ডের বিচারসহ একাধিক দাবিতে মশাল মিছিল শেষে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন। বিক্ষোভ মিছিলটি শাহবাগ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে এসে শেষ হয়।
মশাল মিছিলে 'কসাই লাকির ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না’, ‘ল তে লাকি, তুই হাসিনা তুই হাসিনা’, ‘শাহবাগীদের দিন শেষ, ইনকিলাবের বাংলাদেশ’, ‘ধর্ষকদের ঠিকানা এই বাংলায় হবে না’-সহ একাধিক স্লোগান দেন অংশগ্রহণকারীরা।
সমাবেশে শরিফ ওসমান হাদী বলেন, ‘সারা পৃথিবীতে ধর্ষণ আছে এবং তার বিচার করতে হয়। ধর্ষণ শুধু এখন হচ্ছে না জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের ক্যাডার মানিক ধর্ষণের সেঞ্চুরি করে উৎসব করেছিল। তখন এই নারীবাদী সুশীলরা একটা কথা বলে নাই। ২০১৮ সালে নোয়াখালীর সুবর্ণচরে আমার বোন শুধু ধানের শীষে ভোট দেওয়ার কারণে তার ঘরে ঢুকে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা মুহুর্মুহু ধর্ষণ করেছিল। তখন বাংলাদেশের কোনো নারীবাদী, কোনও এনজিওবাদী, কোনো সুশীল আমার বোনের পাশে দাঁড়ায় নাই। বিগত বছরগুলোতে যে হাজার হাজার ধর্ষণ খুনি লীগ, ছাত্রলীগ করেছে তার একটারও বিরুদ্ধেও তারা দাঁড়ায় নাই। যদিও বিভিন্ন নামে খণ্ড খণ্ড কর্মসূচি তারা দিয়েছে। নাম দিয়েছে গণভবন ঘেরাও কিন্তু বাংলামোটরের ওই পাশে কখনও যায়নি।’
‘তারা সেদিন যমুনায় যাওয়ার জন্য যে সহিংসতা করলো, পুলিশকে আহত করলো, নারী ভিক্টিম কার্ড খেললো গত ১৫ বছরেও ওরা এরকম ভিক্টিম কার্ড খেলেছে।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের বর্তমান সিপাহসালার ড. ইউনুস সাহেব জাতিসংঘের মহাসচিবকে বাংলাদেশে নিয়ে এসেছেন। আগামী তিন দিন ইউনুস প্রচুর খেলা খেলবেন যেই খেলা দিল্লির আগ্রাসনের বিরুদ্ধে খেলা। এই খেলা আওয়ামী সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে খেলা। যেই খেলাকে সেলিব্রেট করবার জন্য আমার পুরো বাংলাদেশ বুক পেতে দাঁড়িয়ে আছে ঠিক তখনই এই শাহবাগী, সুশীল, নারীবাদীরা রাস্তায় নেমেছে।’
‘যখন আমরা আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ চাই, বিডিআর হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই, শাপলা হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই তখন জাতিসংঘের মহাসচিব বাংলাদেশে থাকা অবস্থায় কেন ধর্ষণবিরোধী সমাবেশ করতে হবে? সমাবেশ সবার গণতান্ত্রিক অধিকার তবে সেই সমাবেশের সামনে থাকবে লাকি আক্তার এটা কী গণতন্ত্র নাকি ফ্যাসিবাদ? যারা এ দেশের আদালত, প্রশাসন ভেঙে ভেঙে কবরে পাঠিয়েছে, আইন ভেঙে দিয়েছে, আয়নাঘর বানিয়েছে তারা আজকে বাংলাদেশে নারী অধিকার, গণতন্ত্র নিয়ে কথা বললে চক্ষু বন্ধ করে বলে দিতে পারি এটা দিল্লির ষড়যন্ত্র। দিল্লির ষড়যন্ত্র সফল হতে দেওয়া হবে না।’
সমাবেশ শেষে তারা পুনরায় শাহবাগে তাদের লাগাতার অবস্থান কর্মসূচিতে ফিরে গেছেন।