‘বাংলাদেশ এয়ারপোর্ট সিকিউরিটি ফোর্স’ নামে বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) নিজস্ব নিরাপত্তা সংস্থা গঠনের উদ্যোগ নেওয়ার খবরে সংস্থাটির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমান সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে এই পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলছেন তারা। বিশেষ এই বাহিনী গঠন বন্ধের দাবিতে আগামীকাল সোমবার (১৭ মার্চ) বেবিচকের সদর দফতরে বিক্ষোভ কর্মসূচি ও প্রতিবাদ সভার ডাক দিয়েছে সিভিল এভিয়েশন কর্মকর্তা কর্মচারী ফোরাম। এ বিষয়ে তারা প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ চেয়ে তার দফতরে চিঠি দেবেন বলেও জানা গেছে।
এ বিষয়ে সিভিল এভিয়েশন কর্মকর্তা-কর্মচারী ফোরামের নেতা শহীদুল্লাহ বলেন, ‘বাংলাদেশ সিভিল এভিয়েশন একটি আন্তর্জাতিক সিভিল সংস্থা। সারা পৃথিবীর মতো এখানেও নিরাপদ বেসামরিক বিমান উড্ডয়ন ও অবতরণের যাবতীয় কার্যাবলি অভিজ্ঞ বেসামরিক কর্মকর্তা-কর্মচারীরাই করার কথা। কিন্তু বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের বিভিন্ন শাখায় দিন দিন বিমানবাহিনীর সদস্যরা অর্গানোগ্রামভুক্ত ও অর্গানোগ্রামবহির্ভূত বিভিন্ন পদে অযাচিতভাবে এসে দখল করছেন। এতে সিভিল এভিয়েশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি হচ্ছে।’
বেবিচক সূত্র জানায়, সিভিল এভিয়েশনের এ ধরনের সিকিউরিটি ফোর্স গঠন করতে দীর্ঘদিন চেষ্টা চলছিল। এবার সেটিকে পরিপূর্ণ রূপ দিতে কাজ শুরু হয়েছে। দেশের তিনটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসহ অভ্যন্তরীণ সব বিমানবন্দরে বেবিচকের নিজস্ব এই সংস্থা কাজ করবে। বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের অধীন এই সংস্থা সিভিল এভিয়েশনের চেয়ারম্যানের নিজস্ব তত্ত্বাবধানে থাকবে।
মন্ত্রণালয়ে পাঠানো ওই প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশ এয়ারপোর্ট সিকিউরিটি ফোর্সের জনবলের সংখ্যা হবে ১০ হাজার ৬৩২ জন। এর ৭০ শতাংশই নেওয়া হবে বিমানবাহিনী থেকে। মূলত চেয়ারম্যান থাকবেন সার্বিক তত্ত্বাবধানে।
তবে বিক্ষুব্ধ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বলছেন, বেবিচকের নিজস্ব শক্তিশালী সাংগঠনিক কাঠামো থাকা সত্ত্বেও তাদের সঙ্গে পরামর্শ না করেই গোপনে বিশেষ বাহিনী গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ ধরনের প্রস্তাব আন্তর্জাতিক মানদণ্ড ও প্রচলনের পরিপন্থি। তারা বলছেন, এমন প্রস্তাব জুলাই আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে গঠিত জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সুপারিশ ৭ দশমিক ২৫-এর সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
তবে এর আগে বেবিচকের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, বেবিচকের নিজস্ব এই সংস্থা অত্যাধুনিক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হবে। ইন্টারন্যাশনাল সিভিল অর্গানাইজেশন থেকে সার্টিফায়েড হবে। দেশের সব বিমানবন্দরের গুরুত্বপূর্ণ এক্সেস পয়েন্টগুলোতে দায়িত্ব পালন করবেন তারা। এক্ষেত্রে বিমানবন্দরে কর্মরত এপিবিএনসহ অন্যান্য সংস্থার কোনও সমস্যা হবে না বলেও জানান ওই কর্মকর্তা।