বিলাসবহুল লেকশোর হোটেলের মালিক কাজী শামসুল হককে (৯২) আদালতে হাজির করার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেছেন তার চার সন্তান। সন্তানদের অভিযোগ অন্য দুই সন্তান তাকে গৃহবন্দি করে রেখেছেন।
সোমবার (১৯ মে) রিটকারীদের আইনজীবী ব্যারিস্টার সাকিব মাহবুব এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
রিটকারীরা হলেন- কাজী ফারহানা জাহান, কাজী ফারজানা রহমান, কাজী রাশেদুল হক এবং কাজী আশফাক শামস। রিটকারীদের অভিযোগ, তারা দীর্ঘ দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে পিতার সাক্ষাৎ পান না।
রিটকারী আইনজীবী বলেন, বিলাসবহুল লেকশোর হোটেলের মালিক কাজী শামসুল হক বিগত পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে অসুস্থতাজনিত কারণে শয্যাশায়ী। ডিমেনশিয়া বা স্মৃতিভ্রমসহ বিভিন্ন দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি হিতাহিতজ্ঞান লুপ্ত বিধায় পরিবারের সদস্যদেরও চিনতে পারেন না। ছয় সন্তানের জনক ব্যবসায়ী কাজী শামসুল হক তার বর্ণাঢ্য কর্মজীবনে অত্যন্ত দক্ষতা ও সফলতার সঙ্গে হোটেল ব্যবসা পরিচালনা করে এসেছেন। বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অসাধারণ বোঝাপড়া এবং বিচক্ষণতার ফলে তিনি পরিবারের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করতে বিভিন্ন স্থানে সম্পত্তিও ক্রয় করেছেন। কাজী শামসুল হক সর্বদা তার সন্তানদের প্রতি ন্যায়পরায়ণ ও দায়িত্বশীল থেকেছেন। সন্তানদের স্বাধীনতা ও ব্যক্তিত্বের বিকাশে উৎসাহ জুগিয়ে এসেছেন সব সময়।
কিন্তু, অত্যন্ত হীন মানসিকতার পরিচয় দিয়ে কাজী শামসুল হকের মানসিক অসুস্থতার সুযোগ নেন তার সর্বকনিষ্ঠ পুত্র কাজী তারেক শামস ও জ্যেষ্ঠপুত্র কাজী এহসানুল হক। লেকশোর হোটেলসহ কাজী শামসুল হকের বর্ণাঢ্য কর্মজীবনে অর্জিত সব স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি অবৈধভাবে দখলের অভিপ্রায়ে কাজী তারেক শামস ও কাজী এহসানুল হক তাদের পিতা কাজী শামসুল হককে গৃহবন্দি করে রেখেছেন। তাদের যোগসাজশে বাধাপ্রাপ্ত হয়ে কাজী শামসুল হকের বাকি চার সন্তান জ্যেষ্ঠকন্যা কাজী ফারহানা জাহান, কাজী ফারজানা রহমান, কাজী রাশেদুল হক এবং কাজী আশফাক শামস তাদের পিতার সাক্ষাৎ পান না দীর্ঘ দুই বছরেরও বেশি সময়।
আইনজীবী আরও বলেন, সম্পত্তি জবরদখল করার হীন অভিপ্রায়ে আটকে রেখে দেখাশোনার অভাবে অযত্নে ফেলে রাখা হয়েছে কাজী শামসুল হককে। ইতোমধ্যেই নানাবিধ অসুস্থতা ও বয়সের ভারে ন্যুব্জ কাজী শামসুল হক, তদুপরি এভাবেই প্রতিনিয়ত ইচ্ছাকৃতভাবে স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটানো হচ্ছে তার। এই অবিচার ও নির্যাতনের প্রতিকার চেয়ে ২০২৩ সাল থেকেই আদালতের শরণাপন্ন হয়ে আসছেন কাজী শামসুল হকের উল্লিখিত চার সন্তান। কিন্তু, বিগত সরকারের আমলে সরকারদলীয় ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিভিন্নভাবে প্রশাসনিক বলয়ের মাধ্যমে চাপ সৃষ্টি করে এই চার সন্তানকে সুবিচার পাওয়া থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে।