নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন বাণিজ্য, চাঁদাবাজি ও ডাকাতির অভিযোগে জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জিএম কাদের, মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা গ্রহণ করেছেন আদালত।
সোমবার (২৬ মে) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাসুম মিয়ার আদালত এ মামলার এজাহার গ্রহণ করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার অপর আসামিরা হলেন— জাতীয় পার্টির অতিরিক্ত মহাসচিব রেজাউল ইসলাম, জাপার কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নেওয়াজ আলী ভূঁইয়া, জিএম কাদেরের স্ত্রী শেরিফা কাদের, উত্তরা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাবেক ডিসি আকরাম, ডিবি উত্তরা বিভাগের সাবেক এডিসি নাজমুল, বিমানবন্দর জোনাল টিমের এসআই পবিত্র সরকার এবং ঢাকা মহানগর উত্তর জাতীয় পার্টির সদস্য মো. সাঈদুল ইসলাম।
এর আগে গত ১৭ মে মামলার আবেদন করেন জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য ও মানবাধিকারকর্মী নাজমিন সুলতানা তুলি। এদিন আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে আদেশের জন্য ২৬ মে দিন ধার্য করেন। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বাদীপক্ষের আইনজীবী এডিএম জোবায়ের। তিনি বলেন, মনোনয়ন বাণিজ্যের ঘটনায় জিএম কাদেরসহ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আদালতে আমরা চাঁদাবাজির একটি মামলা করেছি। আদালত বাদীকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে আদেশ অপেক্ষমান রাখেন। আজ মামলাটি পিবিআইকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, জি এম কাদেরের প্রত্যক্ষ মদদে অন্য আসামিরা ২০২৪ সালের ডামি নির্বাচনে মনোনয়ন বাণিজ্যে লিপ্ত হয় এবং বাদিনীকে মনোনয়ন দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ৫০ লাখ টাকা দাবি করে মেসেজ পাঠায়। এসব নিয়ে কেন্দ্রীয় কমিটির মিটিংয়ে বাদিনী প্রতিবাদ করলে উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় এবং এতে দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল বৃদ্ধি পায়।
পরবর্তীকালে প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য পুলিশ প্রশাসনের কতিপয় দুর্নীতিগ্রস্ত সাবেক কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় ও অজ্ঞাতনামা ৪০ থেকে ৫০ জন লোক আসামি নিয়ে ২০২৩ সালের ১০ অক্টোবর রাত সাড়ে ৮টায় বাদিনীর বাসার দরজা ভেঙে প্রবেশ করে আসবাবপত্র, ৭ ভরি স্বর্ণালঙ্কার, নগদ ৩ লাখ ৬৫ হাজার টাকা, গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র, মোবাইল, ল্যাপটপসহ মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। বাদিনী নাজমিন সুলতানা তুলি এসব নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করার প্রস্তুতি নিলে তাকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে মামলার বাদিনী নাজমিন সুলতানা তুলি বলেন, আওয়ামী সরকারের পতন হলেও এখনও তারা বিভিন্নভাবে শক্তি সঞ্চয়ের চেষ্টায় লিপ্ত। আমি দীর্ঘদিন ট্রমায় ভুগেছি এবং সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্নের শিকার হয়েছি। যারা রাজনীতিকে কলুষিত করেছে, আমি তাদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।