নোভারটিস বাংলাদেশ লিমিটেডের শেয়ার রেডিয়েন্টের কাছে হস্তান্তর এবং অর্থ পাচারের অভিযোগ সংক্রান্ত একটি মামলায় বাংলাদেশ ব্যাংকের কয়েকজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ এনে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
নোটিশ গ্রহীতা বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের মধ্যে রয়েছেন— গভর্নর, বৈদেশিক মুদ্রা বিনিয়োগ বিভাগের (এফইআইডি) ডেপুটি গভর্নর ও প্রধান কর্মকর্তা, বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) এবং বৈদেশিক মুদ্রা বিনিয়োগ বিভাগের পরিচালক।
সোমবার (২৩ জুন) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইকতান্দার হোসেন হাওলাদারের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট-অন-রেকর্ড মো. শহীদুল ইসলাম এ নোটিশ পাঠান।
নোটিশে অভিযোগ করে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে বিচারাধীন সিভিল মিসেলেনিয়াস পিটিশন (সি.এম.পি.) নম্বর ৪৭৭/২০২৫ সংক্রান্ত বিচারিক কার্যক্রমে ইচ্ছাকৃতভাবে এবং জেনেশুনে হস্তক্ষেপ করেছেন।
নোটিশে আরও বলা হয়, ইকতান্দার হোসেন হাওলাদার আগে রিট পিটিশন নম্বর ৬০০২/২০২৫ দায়ের করেছিলেন, যা ২০২৩ সালের ৩ জুন খারিজ হয়ে যায়। পরবর্তীকালে , ওই রায় ও আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে সিএমপি নম্বর ৪৭৭/২০২৫ দায়ের করা হয়, যার ফলে বিরোধের সম্পূর্ণ বিষয়টি বিচারাধীন হয়ে পড়ে। নোটিশে আরও উল্লেখ করা হয়েছে — বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদেরকে সিএমপি নম্বর ৪৭৭/২০২৫ বিচারাধীন থাকার বিষয়ে একাধিক চ্যানেলের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে অবহিত করা হয়েছিল। ২০২৩ সালের ৪ জুন বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের কমন সার্ভিসেস ডিপার্টমেন্ট-১-এ অ্যাডভোকেট-অন-রেকর্ডের কাছ থেকে আইনজীবীর সনদের একটি শারীরিক অনুলিপি আনুষ্ঠানিকভাবে গৃহীত হয়েছিল। একই দিনে ৫টা ৫২ মিনিটে বাংলাদেশ ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে একই আইনজীবীর সনদ ইমেইলের মাধ্যমে পাঠানো হয়েছিল।
ইমেইলটি কেবল বিচারাধীন মামলার বিষয়ে অবহিত করা হয়নি, বরং বিশেষভাবে অনুরোধ করা হয়েছিল — বাংলাদেশ ব্যাংক যেন মূল্যায়ন এবং রেমিটেন্স সম্পর্কিত কোনও সিদ্ধান্ত প্রক্রিয়া করা থেকে বিরত থাকে, যতক্ষণ না বিষয়টি বিজ্ঞ আদালতে চূড়ান্তভাবে নিষ্পত্তি হয়।
নোটিশে অভিযোগ করা হয়েছে, বিষয়টি দেশের সর্বোচ্চ আদালতে বিচারাধীন থাকা সত্ত্বেও, বৈদেশিক মুদ্রা বিনিয়োগ বিভাগ (এফইআইডি) ২০২৫ সালের ১৯ জুন এই শেয়ার হস্তান্তর সম্পর্কিত একটি মূল্যায়ন প্রতিবেদন অনুমোদন করেছে। এই কাজটিকে ‘আদালতের কর্তৃত্বের প্রতি সুস্পষ্ট এবং ইচ্ছাকৃত অবজ্ঞা’ এবং ‘সিএমপি’-কে ব্যর্থ করার জন্য একটি ইচ্ছাকৃত প্রচেষ্টা হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।
নোটিশে সতর্ক করা হয়েছে, এই ধরনের কাজ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের ‘গুরুতর এবং সুস্পষ্ট অবমাননা’ গঠন করে, যার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা আদালত অবমাননা আইন, ২০১৩ এবং বাংলাদেশের সংবিধানের ১০৮ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী যৌথভাবে এবং পৃথকভাবে দায়ী থাকবেন।
নোটিশে অবিলম্বে এবং নোটিশ প্রাপ্তির ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এফইআইডি কর্তৃক ২০২৩ সালের ১৯ জুন প্রদত্ত অনুমোদন প্রত্যাহার এবং বাতিল করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। এছাড়া, মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত এই বিষয়ে সব কার্যক্রম বন্ধ রাখার অনুরোধ করা হয়েছে।