X
শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪
১৪ চৈত্র ১৪৩০
সাক্ষাৎকারে সৈয়দ নজরুল ইসলামের মেয়ে সৈয়দা জাকিয়া নূর

‘আব্বার পরিচয় জানার পর আমাদের স্কুলে ভর্তি হতে দেয়নি’

রিয়াদ তালুকদার
০৩ নভেম্বর ২০২২, ০৮:০০আপডেট : ০৪ মার্চ ২০২৩, ১৬:১৪

ছোটবেলায় বাবাকে হারিয়েছেন সংসদ সদস্য ডা. সৈয়দা জাকিয়া নূর। তার বাবা বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম সেনানী, প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি এবং স্বাধীন দেশে উপ-রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম। ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর জেল হত্যাকাণ্ডের শিকার চার নেতার একজন তিনি। সেদিন আওয়ামী লীগের চার জাতীয় নেতা— উপ-রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, সাবেক প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ, ক্যাপ্টেন মনসুর আলী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসনাত মোহাম্মদ কামারুজ্জামান বিপথগামী সেনা সদস্যদের হাতে নিহত হন। ৩ নভেম্বর জেল হত্যা দিবসকে সামনে রেখে বাবার স্মৃতিকথা বলেছেন ডা. সৈয়দা জাকিয়া নূর। কিশোরগঞ্জ-১ আসনের উপনির্বাচনে একাদশ জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। বুধবার (২ নভেম্বর) সকালে জাকিয়া নূরের গুলশানের বাসায় তার সঙ্গে বাংলা ট্রিবিউনের কথা হয়।

বাংলা ট্রিবিউন: ৩ নভেম্বর জাতির জীবনে একটি বিভীষিকাময় দিন। ১৯৭৫ সালের এই দিনে আপনি বয়সে অনেক ছোট ছিলেন।  ‘বাবা নেই’ সেদিন প্রথমে কার মাধ্যমে এই দুঃসংবাদটি জানতে পেরেছিলেন?

সৈয়দা জাকিয়া নূর: ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর ভোর বেলায় ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে পাগলা ঘণ্টার শব্দ শুনলাম। রাত থেকে আম্মাসহ বাসায় যারা ছিলেন, সবাই খুবই বিচলিত হলেন। জেলখানায় এমন কী ঘটলো যে, পাগলা ঘণ্টা বাজানো হলো! তারপর তো সকাল হলো, সারাদিন গেলো। নানা রকম গুজব। আমার আম্মা আমাদের নিয়ে এখানে-সেখানে ছোটাছুটি করলেন। কিন্তু কোনও খবর পেলাম না। তারপর আমরা জেলখানায় গেলাম। ওখান থেকে বললো, সবকিছু ঠিক আছে। কোনও চিন্তার কারণ নেই। তো দুপুর বেলা বাসা থেকে কারাগারে খাবার যেতো, আমার আব্বার জন্য টিফিন ক্যারিয়ারে করে। সেদিন  খাবারটা ফেরত আসলো। বলল যে, এখানে ভেতরে সমস্যা আছে, আজকে খাবার পাঠানো যাবে না। পরের দিনও একই  ঘটনা ঘটলো। সেদিনও  আম্মা আমাদের নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় খবর জানার জন্য ছোটাছুটি করলেন। কিন্তু কোনও খবর পেলেন না। তার পরদিন সকাল বেলা জেলখানা থেকে একটা খবর আসলো। আমাদের ভাইবোনদের মধ্যে কেউ একজনকে জেলখানায় যেতে হবে। একটা ডেড বডি শনাক্ত করতে হবে। তখন আমার বড় দুই ভাই লন্ডনে ছিলেন। তিন নম্বর জন তখন আর্মিতে। আর  আমার যে ইমিডিয়েট বড় ভাই, তখন তিনি ক্লাস নাইনে পড়েন। তিনি তখন বাসায় ছিলেন। আমার মামা তাকে নিয়ে জেলখানায় গেলেন। তার একটু পরেই ফিরে আসলেন। ফিরে এসে বললেন— না, আমার ভাইকে দিয়ে হবে না। কারণ, সে এখনও নাবালক। সে অফিসিয়ালি শনাক্ত করতে পারবে না। আমার মামা আর বড় কাজিন যারা ছিলেন, তখন তারা গিয়ে বাবার ডেড বডি শনাক্ত করলেন। তারপর আমার মামার বাসা আরমানিটোলায় ছিল, ওখানে নিয়ে এলেন। দুই দিন আগে যে বাবাকে আমরা সুস্থ দেখেছি, সে এখন ডেড বডি। আব্বার বয়স তখন ৫০ বছর ছিল। এখন সুস্থ তরতাজা মানুষ ডেড বডি হয়ে গেলো। ঝাঝড়া হয়ে গেলো।

ছবি: সাজ্জাদ হোসেন

বাংলা ট্রিবিউন: বাবাকে হারানোর পর আপনার পারিবারকে কী ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হয়েছে?

সৈয়দা জাকিয়া নূর: আমার আম্মার মাথায় তো তখন আকাশ ভেঙে পড়লো। আমরা খুব দুঃসহ জীবন পার করেছি। কারণ, আমার বড় দুই ভাই তখন লন্ডনে। ওখানে তারা রাজনৈতিক আশ্রয়ে ছিলেন। সেজন্য তারা দেশে আসতে পারেননি। তাদের দেশে আসার পারমিশন ছিল না। আরেক ভাই তো তখন কেবল আর্মিতে ঢুকেছেন। তাকে নিয়েও আমার আম্মা খুবই চিন্তিত ছিলেন। এই বুঝি কোনও খারাপ সংবাদ আসে!  তখন তো স্বৈরাচারের রাজত্ব। আমরা ৩ নভেম্বরের পর কিছুদিন ঢাকায় থাকলাম। এমন অবস্থা হলো যে,  আমরা কোথাও বাসা ভাড়া পর্যন্ত পাই না। ঢাকায় আমাদের কোনও নিজস্ব বাড়ি ছিল না। আমার আম্মা সিদ্ধান্ত নিলেন, আমাদের ছোট যে তিন ভাইবোন, তাদের নিয়ে ময়মনসিংহের পৈত্রিক বাড়িতে চলে যাবেন। আমরা ওখানে চলে গেলাম। তারপর তো জিয়াউর রহমানের রাজত্ব শুরু হলো। তখন শুধু আমরা না, আমাদের মতো স্বাধীনতার পক্ষে আওয়ামী লীগের যে পরিবারগুলো ছিল, তাদের ওপর দিয়ে সব অত্যাচার-নির্যাতন গেছে। আপনারা তো ভালোভাবেই জানেন, স্বাধীনতার পক্ষে যারা ছিল বিশেষ করে আওয়ামী পরিবারগুলো, তাদেরকে অত্যন্ত বেদনাময় সময় পার করতে হয়েছে। এমনও হয়েছে যে, আমরা ময়মনসিংহে মেয়েদের যে ভালো স্কুল, সেখানে ভর্তি হতে গিয়েছিলাম। কিন্তু যখন তারা আমার আব্বার পরিচয় পেয়েছে, তখন ভর্তি হতে দেয়নি। আমার অপরাধ ছিল— আমার আব্বা শহীদ নজরুল ইসলাম, যিনি জাতির জনকের অবর্তমানে জাতির জনকের নির্দেশে স্বাধীনতা যুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং তার নেতার সঙ্গে বেঈমানি করেননি। নেতার প্রতি বিশ্বস্ত ও আনুগত্য ছিলেন বলেই ৩ নভেম্বর পৃথিবীর সবচেয়ে নিরাপদ স্থান জেলখানায় মৃত্যুবরণ করেছেন। এটাই আমাদের অপরাধ ছিল। এই অপরাধে আমরা স্কুলে পর্যন্ত ভর্তি হতে পারি নাই। তারপর অনেকদিন অনেক রকমের অত্যাচার আমাদের সহ্য করতে হয়েছে। চোখের সামনে দেখেছি, যে যুদ্ধ অপরাধীরা স্বাধীনতা যুদ্ধের সরাসরি বিরোধিতা করেছেন, তাদের গাড়িতে বাংলাদেশের পতাকা। তারা মন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করছেন। অনেক মুক্তিযোদ্ধাকে তখন ক্যান্টনমেন্টে নিয়ে যাওয়া হতো। তারা কোথায় আছেন, তাদের আর কোনও খোঁজ পাওয়া যেতো না। এগুলো তো দিনের পর দিন ঘটেছে। আমার আপন চাচাকে জেলখানায় রেখেছে। তার অপরাধ ছিল, তিনি সৈয়দ নজরুল ইসলামের ভাই। শুধু যে জেলে রাখা হয়েছে তা-ই না, তার ওপর পাশবিক অত্যাচার করা হয়েছে। তিনি যখন পাঁচ বছর পর জেলখানা থেকে বের হয়েছেন, তিনি আর স্বাভাবিক জীবন-যাপন করতে পারেন নাই। শুধু আমার পরিবারের সঙ্গেই নয়, স্বাধীনতার পক্ষে যারা ছিলেন তাদের সবাইকে এমন ভয়াবহতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। আমরা মাঝেমধ্যে তোফায়েল ভাইয়ের কথা শুনি, উনার ব্যক্তিগত জীবনের কথা শুনি। আরও যারা নেতৃস্থানীয় ছিলেন, তারাও তখন জেলখানায় ছিলেন। কী যে অত্যাচার-নির্যাতনের মধ্য দিয়ে তাদের পার হতে হয়েছে।

 

বাংলা ট্রিবিউন: সেই ক্রান্তিকালে আপনারা কাদের সহায়তা পেয়েছেন এবং কীভাবে লেখাপড়া চালিয়ে গেছেন?

সৈয়দা জাকিয়া নূর:  আম্মা ছিলেন আমার আব্বার সুযোগ্য সহধর্মিনী। তিনি কিন্তু শক্ত হাতে আমাদের পরিবারের হাল ধরেছেন। আমার মনে আছে, আম্মা সব সময় এটা বলতেন যে, যেহেতু আমার আব্বা রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন, সবসময় ব্যস্ত থাকতেন, আমরা ছয় ভাইবোন ছিলাম, তখন আমার আম্মা আব্বাকে জিজ্ঞেস করতেন যে, আপনার যদি কিছু হয়— তাহলে আমি কীভাবে চলবো এই ছেলে মেয়েগুলোকে নিয়ে? জবাবে আমার আব্বা বলতেন যে, ‘ছেলে-মেয়েগুলোকে লেখাপড়া শিখিয়ে মানুষের মতো মানুষ বানাবে, ওরাই বাবার নাম রাখবে। ওরাই  ভবিষ্যৎ।’ আমার আম্মা কিন্তু আব্বার সেই কথাটি অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছিলেন। আমাদের সব ভাইবোনকে বলতেন— ভালো করে লেখাপড়া করো। আমার আব্বাও অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র ছিলেন। ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে মেধাবী ছাত্র হিসেবে পরিচিত ছিলেন। শুধু যে লেখাপড়ায় ভালো ছিলেন তা না, তিনি কিন্তু ‘ব্লু’ ছিলেন। ‘ব্লু’ হচ্ছে, যারা খেলাধুলায় চ্যাম্পিয়ন হয়, তাদেরকে ‘ব্লু’ বলে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় ক্রিকেট টিমের ক্যাপ্টেন ছিলেন। আমার আম্মা ওটাই চেষ্টা করেছিলেন, আমার বাবার আদর্শ মতো আমাদেরকে মানুষ করার। আমরাও ওটাই মাথায় রেখেছিলাম যে, কে আমাদের পিতা, আমাদের কেমন মানুষ হতে হবে। আমাদের ভালো লেখাপড়া করে মানুষ হতে হবে। আল্লাহর রহমতে আমাদের ছয় ভাইবোনই চেষ্টা করেছিলাম, ভালোভাবে পড়াশোনা করতে। আমাদের কর্মক্ষেত্রে বাবার মাথা যেন  উঁচু হয়। আমরা ছয় ভাইবোনে কিন্তু এটা করেছি। আমার আম্মা বিশাল একটা ভূমিকা এখানে পালন করেছেন। আসলে আত্মীয়-স্বজন বলতে কাছের মানুষই তখন কাছে ছিল। ছবি: সাজ্জাদ হোসেন

বাংলা ট্রিবিউন: বাবার কোন বিষয়গুলো এখনও আপনাকে আবেগতাড়িত করে? ছোটবেলায় বাবাকে কতটা কাছে পেয়েছেন?

সৈয়দা জাকিয়া নূর:  অনেক ছোটবেলায় তো বাবাকে হারিয়েছি। তারও আগে আমরা যখন ছোট ছিলাম, বাবা রাজনীতি নিয়ে অত্যন্ত ব্যস্ত থাকতেন। তখন ৬৯,  ৭০ ও ৭১ এর উত্তাল সময়। আমরা খুব কমই বাবাকে কাছে পেয়েছি। আমাদের পরিবার বা আমাদের আব্বা অন্য ১০টা পরিবারের মতো না। বাবা অনেক বড় কাজে ব্যস্ত থাকতেন, দেশের কাজে ব্যস্ত। আমরাও সেটা তখন অনেকটা মেনে নিয়েছি। যখনই কাছে পেয়েছি, মানে উনি খুব শান্ত স্বভাবের মানুষ ছিলেন। আমার এখনও মনে আছে, সেই ছোটবেলায় উনি আমাদেরকে শরৎ চন্দ্রের লেখার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন। আমার আম্মা একদিন হাসতে হাসতে বললেন যে, ওরা তো এখনও ছোট। আমার আব্বা উনার (শরৎ চন্দ্র চট্টোপাধ্যয়) রচনাগুলোর পুরো সেট এনে দিয়েছেন। আব্বা বলছেন, না এখন থেকেই ওদেরকে পরিচয় করিয়ে দাও। তারপর সুকান্তের কবিতা, রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে সেই সময় পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন। তারপরে বঙ্গবন্ধুর কথা বলতেন, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর কথা বলতেন। এরকম অন্য দেশের অনেক বড় বড় নেতা যারা ছিলেন, তাদের কথা অনেক গল্পের ছলে আমাদেরকে বলতেন।

বাংলা ট্রিবিউন: আপনার রাজনীতিতে আসার পেছনের গল্পটা কী?

সৈয়দা জাকিয়া নূর: রাজনৈতিক পরিবারেই আমাদের জন্ম। জন্মের পর থেকে রাজনীতিটাই আমরা দেখেছি। আমি স্কুল জীবন কলেজ জীবনে রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলাম, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সঙ্গে। যদিও আমরা যখন মেডিক্যালে পড়ি, তখন এরশাদ সাহেব অফিসিয়ালি বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করে দিয়েছিলেন। তখন আমরা যে ছাত্রলীগ করতাম, সেটা আন্ডারগ্রাউন্ড পার্টির মতো। আমরা তখন মিটিং করতাম রাত ১২টার সময়। আমাদের ওপরে অনেক অত্যাচার করা হয়েছে। এরকমও হয়েছে যখন টের পেয়ে গেছে যে, আমরা রাত ১২টার সময় প্রোগ্রামের অ্যারেঞ্জ করেছি, পরে ২টার সময় আমাদেরকে হল থেকে বের হয়ে যেতে বলেছে। এমনও সময় গেছে, আমরা রাস্তায় রাত পার করেছি।

ছবি: সাজ্জাদ হোসেন

বাংলা ট্রিবিউন: ৩ নভেম্বর হত্যাকাণ্ডের বিচারের বিষয়ে কিছু বলুন।

সৈয়দা জাকিয়া নূর: যখন বাবা মারা গেলেন, তারপর থেকে আমরা দ্বারে দ্বারে ঘুরেছি, বিচার চাওয়ার জন্য। তখন শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা আপা বিদেশে ছিলেন। তারাও কিন্তু বিদেশে দ্বারে দ্বারে গিয়েছেন তাদের বাবা ও পরিবারের হত্যার বিচারের জন্য। কিন্তু তখন সেই কুখ্যাত স্বৈরাশাসক জিয়াউর রহমান বিচারের পথ বন্ধ করে দিয়েছিলেন। আমার আম্মাকে প্রতিদিন সকালে দেখেছি, নামাজের জায়নামাজে বসে আল্লাহর কাছে কেঁদে কেঁদে বিচার চাইতে। তারপর তো ১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনা দেশের হাল ধরলেন। তিনি প্রথমে যে কাজটা করলেন, সংসদে গিয়ে কুখ্যাত ইনডেমনিটি বাতিল করলেন। তার পিতার হত্যাকারীদের বিচার শুরু করলেন। আমাদের পিতার হত্যাকারীদের বিচার শুরু করলেন। যুদ্ধ অপরাধীদের বিচার শুরু করলেন। তারপর অনেক চড়াই-উৎরাই পার করতে হয়েছে। ২০০১ সালে এসে আবার সেই বিচার বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এরপর ২০১৩ সালে জেল হত্যার বিচারের রায় যেটা হলো, কয়েকজনকে বিচারের আওতায় আনা গেছে, শাস্তির আওতায়। কিন্তু ১০ জনের মতো এখনও বিদেশে পলাতক, বা তাদের কোনও হদিস আমরা পাই নাই। এটা একটা বিষয়। আরেকটা হলো— এই যে, এত বড় দুটি হত্যাকাণ্ড, এটা জুনিয়র আর্মি অফিসার বা সাধারণ সিপাইদের পক্ষে কি সম্ভব? এটার পেছনে কারা ছিল? এটা কিন্তু আমরা এখনও জানতে পারি নাই। ওই বিচারে কিন্তু এটা বের হয়ে আসে নাই। এটা এখন দাবি যে, কারা ছিল এটার পেছনে?  নেপথ্যের যে কারিগর, দেশি-বিদেশি  শক্তি যারাই থাকুক না কেন, আমরা যদি এর মুখোশ উন্মোচন করতে পারতাম, তাহলে কি শেখ হাসিনার ওপর কত যে হামলা হয়েছে, ২১ আগস্টের ঘটনা বা এখন পাকিস্তানি পেতাত্মারা যখন-তখন মাথাচারা দিয়ে ওঠে, এটা হতো না। আমরা যদি তাদের মুখোশ উন্মোচন করে বিচারের আওতায় আনতে পারতাম, তাহলে আমরা আরও নিরাপদবোধ করতাম এই স্বাধীন বাংলাদেশে।

বাংলা ট্রিবিউন: আপনার ভবিষ্যৎ প্রত্যাশা কী? এই বিষয়গুলো কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?

সৈয়দা জাকিয়া নূর:  এখন যারা রাজনীতিতে আসছে বা ভবিষ্যৎ প্রজন্ম তাদেরকে বলবো, একটা সময় ছিল— ভুল ইতিহাস শেখানো হতো। একটা প্রজন্মকে বিভ্রান্ত করা হতো। আর যেনো কেউ ভুল ইতিহাস না শেখে। সত্য ইতিহাস শিখে  আত্মপ্রত্যয়ী জাতি হিসেবে যেনো সামনে এগিয়ে যায়। এটাই আমার নতুন প্রজন্মের কাছে চাওয়া থাকবে। আর  জাতীয় চার নেতার প্রতি জনগণের যে বিশ্বাস, আস্থা এবং নেতার (বঙ্গবন্ধু) জন্য তাদের যে আত্মত্যাগ এবং নেতার সঙ্গে যে বেঈমানি করেননি— এই জিনিসটি  যেনো ভবিষ্যতের প্রজন্ম বুকে ধারণ করে, যারা নতুন রাজনীতিতে আসবে। তখন সামনে এগিয়ে যাওয়ার পথটা আরও সুন্দর হবে।

/এপিএইচ/
সম্পর্কিত
বাংলা ট্রিবিউনকে ওয়াসিকা আয়শা খান‘নারীরা যে শ্রেষ্ঠত্বের প্রমাণ দিয়ে চলেছেন, এর নেপথ্যে শেখ হাসিনা’
‘মেয়েদের নিয়ে কেউই ঝুঁকি নিতে চায় না’
নারী দিবস উপলক্ষে একান্ত সাক্ষাৎকারে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী১৫ বছরে নারী শক্তির জাগরণ হয়েছে
সর্বশেষ খবর
এক সপ্তাহের মাথায় ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে আরেকজন নিহত
এক সপ্তাহের মাথায় ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে আরেকজন নিহত
‘উচিত শিক্ষা’ দিতে পঙ্গু বানাতে গিয়ে ভাইকে হত্যা
‘উচিত শিক্ষা’ দিতে পঙ্গু বানাতে গিয়ে ভাইকে হত্যা
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মানবাধিকার উইং চালুর পরামর্শ সংসদীয় কমিটির
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মানবাধিকার উইং চালুর পরামর্শ সংসদীয় কমিটির
পণ্ড হলো না পরাগের শ্রম, দিল্লিকে হারালো রাজস্থান
পণ্ড হলো না পরাগের শ্রম, দিল্লিকে হারালো রাজস্থান
সর্বাধিক পঠিত
অ্যাপের মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকার রেমিট্যান্স ব্লক করেছে এক প্রবাসী!
অ্যাপের মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকার রেমিট্যান্স ব্লক করেছে এক প্রবাসী!
নিউ ইয়র্কে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি তরুণ নিহত, যা জানা গেলো
নিউ ইয়র্কে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি তরুণ নিহত, যা জানা গেলো
বিএনপির ইফতারে সরকারবিরোধী ঐক্য নিয়ে ‘ইঙ্গিতময়’ বক্তব্য নেতাদের
বিএনপির ইফতারে সরকারবিরোধী ঐক্য নিয়ে ‘ইঙ্গিতময়’ বক্তব্য নেতাদের
প্রথম গানে ‘প্রিয়তমা’র পুনরাবৃত্তি, কেবল... (ভিডিও)
প্রথম গানে ‘প্রিয়তমা’র পুনরাবৃত্তি, কেবল... (ভিডিও)
সমুদ্রসৈকতে জোভান-সাফার ‘অনন্ত প্রেম’!
সমুদ্রসৈকতে জোভান-সাফার ‘অনন্ত প্রেম’!