X
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪
৬ বৈশাখ ১৪৩১

ইবতেদায়ি বাদ দিয়ে প্রাথমিক শিক্ষা বোর্ড গঠনের প্রস্তাব

এস এম আববাস
১৫ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৬:৩৫আপডেট : ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৭:৩৮

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) পরীক্ষার জন্য একটি বোর্ড গঠনে আইনের খসড়া প্রণয়ন করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর। মন্ত্রণালয় এই খসড়াটি যাচাই-বাছাই করে দেখছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে শেয়ারিং করে এটি চূড়ান্ত করা হবে। তারপর আইন মন্ত্রণালয়ের ভেটিং নিয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠাবে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। এই খসড়ায় ইবতেদায়ি পরীক্ষা নেওয়ার প্রস্তাব করা হয়নি।
জানতে চাইলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আকরাম-আল-হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বোর্ড গঠনের বিষয়টি নিয়ে আমরা কাজ করছি। এখনও চূড়ান্ত কোনও কিছুই হয়নি। ’
জানতে চাইলে সোমবার (১৪ সেপ্টেম্বর) প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. ফসিউল্লাহ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা একটি খসড়া তৈরি করে মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। মন্ত্রণালয় শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও দেশের সাধারণ শিক্ষা বোর্ডগুলোর সঙ্গে শেয়ারিং করে বিষয়টি চূড়ান্ত করবে। চূড়ান্ত হলে আইন মন্ত্রণালয়ে ভেটিং হবে।’

আরও পড়ুন:

অনলাইন বদলিতে অগ্রাধিকার পাবেন প্রাথমিকের যেসব শিক্ষক
প্রাথমিকে অনলাইন বদলি, ট্রায়াল শুরু চলতি মাসেই


প্রাথমিকে শিগগিরই পদোন্নতি

প্রাথমিকের সহকারীদের ১২তম প্রধান শিক্ষকদের দশম গ্রেড দেওয়ার উদ্যোগ

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) ও ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনীর ২৯ লাখের বেশি শিক্ষার্থীর পরীক্ষা নিতে গিয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের বিভিন্ন কাজে সমস্যা ও ধীরগতি সৃষ্টি হয়। দ্রুত সময়ের মধ্যে এই ফল প্রকাশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারীকে নিজের কাজ ফেলে দৌড়াতে হয় পরীক্ষা ও ফলের পেছনে। এ কারণে বিভিন্ন উইংয়ের কাজে ধীরগতি তৈরি হয়।
এসব সমস্যা ছাড়া বিগত সময়ে সরকারের নির্দেশনা ছিল প্রাথমিক শিক্ষা বোর্ড গঠনের। সব বিষয় মাথায় রেখে খসড়া প্রস্তুত করা হয়। একটি প্রস্তাবনাসহ খসড়া পাঠানো হয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে।

তবে এই প্রস্তাবনায় নেই ইবতেদায়ি প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়টি। কারণ, ইবতেদায়ি মাদ্রাসা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে। যদিও পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে।

এছাড়া অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে না আসার কারণে অষ্টম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষাও স্থান পায়নি এই প্রস্তাবনায়। যদিও জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে সাধারণ শিক্ষা বোর্ড ও মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালের প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) পরীক্ষায় পরীক্ষার্থী ছিল ২৫ লাখ ৫৩ হাজার ২৬৭ জন। আর ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় পরীক্ষার্থী ছিল ৩ লাখ ৫০ হাজার ৩৭১ জন।

প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী এবং ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনীতে ২৯ লাখের বেশি শিক্ষার্থী ছিল। এই বিশাল সংখ্যক পরীক্ষার্থীর জন্য একটি আলাদা শিক্ষা বোর্ড করার প্রয়োজন দেখা দেয়। কারণ, সাধারণ আটটি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে নেওয়া এসএসসি বা এইচএসসি পরীক্ষার কোনোটিতেই এত পরীক্ষার্থী হয় না।

সেই হিসেবে প্রাথমিক পর্যায়ের পাবলিক পরীক্ষার জন্য শিক্ষা বোর্ড প্রয়োজন। তবে এতে দুটি সমস্যা দেখা দিয়েছে। ইবতেদায়ি এই বোর্ডের অধীনে নিতে পরছে না প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। কারণ, ইবতেদায়ি মাদ্রাসা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের অধীনে থাকা এসব প্রতিষ্ঠানের জন্য মন্ত্রণালয়ের পলিসি ও নির্দেশনা বাস্তবায়নে রয়েছে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদফতর।

অন্যদিকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত প্রাথমিকের অধীনে ছেড়ে দিচ্ছে না শিক্ষা মন্ত্রণালয়। গত বছর ধরে আলোচনা চলছে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত প্রাথমিক শিক্ষার অধীনে নেওয়া হবে। যদিও কিছু প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়েছে, কিন্তু অষ্ট শ্রেণির শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে। অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত প্রাথমিকের অধীনে না আসায় শিক্ষা বোর্ড গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষাকেন্দ্রিক।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারণে এই সমস্যার সমাধান হচ্ছে না। কিছু বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত প্রাথমিকে পড়ানো হলেও পরীক্ষা নেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। আর ইবতেদায়ি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকলেও সমাপনী পরীক্ষা নেয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। এই তালগোল পাকানো অবস্থা দূর করা না গেলে বোর্ড গঠন করা যাবে না পাঁচ বছরেও। তবে দুই মন্ত্রণালয় চাইলে এই সমস্যার সমাধান হবে, অন্যথায় সরকারের ঊর্ধ্বতন পর্যায়ের সিদ্ধান্ত প্রয়োজন।

/এমআর/এমওএফ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
শিশুকে পালাক্রমে ধর্ষণের অভিযোগে ৪ কিশোর সংশোধনাগারে
শিশুকে পালাক্রমে ধর্ষণের অভিযোগে ৪ কিশোর সংশোধনাগারে
পাঞ্জাবের আশুতোষের ঝড়ও যথেষ্ট হলো না, মুম্বাইয়ের তৃতীয় জয়
পাঞ্জাবের আশুতোষের ঝড়ও যথেষ্ট হলো না, মুম্বাইয়ের তৃতীয় জয়
কানের সমান্তরাল বিভাগে ঢাকার দুই নির্মাতার স্বল্পদৈর্ঘ্য
কানের সমান্তরাল বিভাগে ঢাকার দুই নির্মাতার স্বল্পদৈর্ঘ্য
এআই প্রযুক্তিতে প্রথম বাংলা গানের অ্যালবাম
এআই প্রযুক্তিতে প্রথম বাংলা গানের অ্যালবাম
সর্বাধিক পঠিত
সয়াবিন তেলের দাম পুনর্নির্ধারণ করলো সরকার
সয়াবিন তেলের দাম পুনর্নির্ধারণ করলো সরকার
ফিলিস্তিনের পূর্ণ সদস্যপদ নিয়ে জাতিসংঘে ভোট
ফিলিস্তিনের পূর্ণ সদস্যপদ নিয়ে জাতিসংঘে ভোট
ডিএমপির ৬ কর্মকর্তার বদলি
ডিএমপির ৬ কর্মকর্তার বদলি
পিএসসির সদস্য ড. প্রদীপ কুমারকে শপথ করালেন প্রধান বিচারপতি
পিএসসির সদস্য ড. প্রদীপ কুমারকে শপথ করালেন প্রধান বিচারপতি
পরীমনির বিরুদ্ধে ‘অভিযোগ সত্য’, গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন
পরীমনির বিরুদ্ধে ‘অভিযোগ সত্য’, গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন