আগামী জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য জনশুমারিতে নারী-পুরুষের পাশাপাশি হিজড়াদের আলাদা লৈঙ্গিক পরিচয়ে যুক্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো’র মহাপরিচালক মোহাম্মাদ তাজুল ইসলাম। বুধবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ও বন্ধু সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটি (বন্ধু) আয়োজিত ‘জনশুমারিতে হিজড়া জনগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্তকরণ’ অনলাইন পরামর্শক সভায় তিনি এ কথা বলেন।
তাজুল ইসলাম বলেন, ‘প্রয়োজনীয় সব প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। জানুয়ারির প্রথম দিকেই জনশুমারি অনুষ্ঠিত হবে। জনশুমারির নির্দিষ্ট ফরমে নারী-পুরুষের পাশাপাশি আলাদা লিঙ্গ হিসেবে হিজরা অপশন থাকবে।’ এই জনশুমারির মাধ্যমে হিজড়াদের সঠিক সংখ্যা নির্ণয় সম্ভব হবে কিনা, সে বিষয়েও সংশয় প্রকাশ করেন তিনি। তাজুল ইসলাম বলেন, ‘যেহেতু হিজড়ারা বেশিরভাগই পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন এবং ভাসমান, তাই সবাইকে জনশুমারির আওতায় আনা একটি বড় চ্যালেঞ্জ।’
এদিকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান নাসিমা বেগম এনডিসি বলেন, ‘প্রত্যক মানুষের জন্য আত্মস্বীকৃতি অত্যস্ত গুরত্বপূর্ণ, তাই জনশুমারিতে হিজড়া জনগোষ্ঠীর সদস্যদের স্বেচ্ছায় অন্তর্ভুক্ত হওয়া উচিত। এ জন্য পরিবারের সদস্যদের পাশাপাশি সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘জনশুমারিতে যারা তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের কাজ করেন, তাদের হিজড়া ইস্যুতে ভালোভাবে প্রশিক্ষণ দিতে হবে।’ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সহায়তায় বন্ধু সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটি মাঠ পর্যায়ের তথ্য সংগ্রহকারীদের প্রশিক্ষণে ভূমিকা রাখতে পারে বলেও জানান তিনি।
জনশুমারিতে আলাদা লিঙ্গ হিসেবে হিজড়াদের যুক্ত করতে, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সহায়তায় ২০১৮ সাল থেকে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো’র সঙ্গে কাজ করছে বন্ধু। ২০২১ সালের জনশুমারিতে আলাদাভাবে হিজড়া লিঙ্গ যুক্ত হওয়ায় বন্ধুর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন বাংলাদেশ পুলিশের ডেপুটি ইন্সপেক্টর হাবিবুর রহমান বিপিএম (বার), পিপিএম (বার)। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘লৈঙ্গিক স্বীকৃতির পর জনশুমারিতে সংযুক্ত হওয়া হিজড়া জনগোষ্ঠীর জন্য একটি বড় অর্জন।’ হিজড়াদের সঠিক সংখ্যা জানা গেলে, তাদের জীবন-মান উন্নয়ন আরও দ্রুততর হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
জনশুমারিতে হিজড়াদের সংযুক্তি ‘টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি)- ২০৩০’ অর্জনে সরকারের জন্য একটি মাইলফলক হিসেবে কাজ করবে বলে মনে করেন অনুষ্ঠানে উপস্থিত বক্তারা।