ছাত্রলীগের ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে শনিবার (৪ জানুয়ারি) অনুষ্ঠিত পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে সংগঠনটির সাবেক ২৭ জন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক অংশ নেন। তাদের মধ্যে সাবেক সভাপতি ছিলেন ১৪ জন, সাধারণ সম্পাদক ১৩ জন। সংগঠনটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক, বর্তমানে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক পুনির্মলনীতে উপস্থিত সাবেক নেতাদের পরিচয় করিয়ে দেন। অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেওয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত সাবেক নেতাদের ধন্যবাদ জানান। সবাইকে দাওয়াত দেওয়া হয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ছাত্রলীগের যারা বেঁচে আছেন দুই-চারজন ছাড়া সকলেই এখানে উপস্থিত আছেন।
কারা আমন্ত্রণ পেয়েছেন জানতে চাইলে ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান জয় বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বিভিন্ন সময় সংগঠন থেকে বহিষ্কার বা আদর্শচ্যুত হয়েছেন এবং বিতর্কিতদের বাদ দিয়ে জীবিত সাবেক সব সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। আমন্ত্রিত প্রায় সকলেই পুনর্মিলনীতে যোগ দিয়েছেন।
পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে ১৯৬৮-৬৯ মেয়াদ ও তার পরবর্তী কমিটির নেতাদের পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়। ১৯৬৮-১৯৬৯ মেয়াদের কমিটির সাধারণ সম্পাদক খালেদ মোহাম্মাদ আলী উপস্থিত ছিলেন পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে। তিনি অনুষ্ঠানে বক্তব্যও দেন। উপস্থিত ছিলেন ১৯৬৯-১৯৭০ মেয়াদের সভাপতি ও বর্তমানে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য তোফায়েল আহমেদ। তিনিও অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। ওই কমিটির সাধারণ সম্পাদক আ স ম আব্দুর রব উপস্থিত ছিলেন না অনুষ্ঠানে।
জাসদের (রব) সভাপতি আ স ম আব্দুর রব বর্তমানে সরকারবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় রয়েছেন। ১৯৭০-১৯৭২ মেয়াদের কমিটির সাধারণ সম্পাদক ইসমত কাদির গামা উপস্থিত ছিলেন। তবে একই মেয়াদের সভাপতি নূরে আলম সিদ্দিকী ছিলেন না অনুষ্ঠানে। ১৯৭২-১৯৭৩ মেয়াদের সভাপতি ও বর্তমানে জাতীয় পার্টির (জেপি) মহাসচিব শেখ শহিদুল ইসলাম এবং ১৯৭৭-১৯৮১ মেয়াদের সভাপতি ও বর্তমানে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, তার মেয়াদের সাধারণ সম্পাদক বাহালুল মজনুন চুন্নু ছিলেন অনুষ্ঠানে।
এছাড়া ১৯৮১-১৯৮৩ মেয়াদের ছাত্রলীগ সভাপতি মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক খ ম জাহাঙ্গীর হোসাইন, ১৯৮৩-১৯৮৫ মেয়াদের সভাপতি আব্দুল মান্নান ও সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, ১৯৮৬-১৯৮৮ মেয়াদের সভাপতি ও বর্তমানে গণফোরামের এমপি সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহম্মেদ ও একই মেয়াদের সাধারণ সম্পাদক, বর্তমানে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মো. আব্দুর রহমান এমপি, ১৯৮৮-১৯৯২ মেয়াদের সভাপতি শাহে আলম ও সাধারণ সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, ১৯৯২-১৯৯৪ মেয়াদের সভাপতি মাঈনুদ্দিন হাসান চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক ইকবালুর রহিম, ১৯৯৪-১৯৯৮ মেয়াদের সভাপতি, পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম ও সাধারণ সম্পাদক ইসহাক আলী খাঁ পান্না, ১৯৯৮-২০০২ মেয়াদের সভাপতি বাহাদুর বেপারী ও সাধারণ সম্পাদক অজয় কর খোকন, ২০০২-২০০৬ মেয়াদের সভাপতি লিয়াকত সিকদার ও সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম বাবু, ২০০৬-২০১১ মেয়াদের সভাপতি মাহমুদ হাসান রিপন ও সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী রোটন, ২০১১-২০১৫ মেয়াদের সভাপতি এইচ এম বদিউজ্জামান সোহাগ এবং ২০১৫-১৮ মেয়াদের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসাইন উপস্থিত ছিলেন।
ছাত্রলীগের সর্বশেষ ১২টি কমিটির মধ্যে বর্তমান মেয়াদে সংগঠন থেকে অব্যাহতি পাওয়া সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী এবং ২০১১-২০১৫ মেয়াদের সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলম ছাড়া সকলেই উপস্থিত ছিলেন এই পুনর্মিলনীতে। তাদের মধ্যে শোভন ও রাব্বানীকে আওয়ামী লীগের হাইকমান্ডের নির্দেশে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। তাদের মধ্যে নাজমুল প্রবাসে রয়েছেন।