X
শুক্রবার, ০৯ মে ২০২৫
২৬ বৈশাখ ১৪৩২

আ.লীগের সঙ্গে জাপা নেতাদের ৩ দফায় বৈঠক, যা জানা গেলো

মাহফুজ সাদি
০৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ০২:৩৯আপডেট : ০৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ০২:৩৯

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ও দলটির নেতাদের সঙ্গে দুই দিনে তিন দফা বৈঠক করেছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) বেশ কয়েজন নেতা। অনানুষ্ঠানিক এসব বৈঠকের আলোচনার বিষয়বস্তু নিয়ে কোনও দলই আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি। তবে বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, জাতীয় পার্টির নেতাদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল নির্বাচনে আসন ছাড় বা সমঝোতা চাওয়া। কিন্তু আওয়ামী লীগের কাছ থেকে এ ব্যাপারে কোনও নিশ্চয়তা মেলেনি।

সূত্র জানায়, মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে যান জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের, কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু। তারা অতীতে নির্বাচনগুলোর মতো এবারও আসন ছাড় বা সমঝোতা নিয়ে শেখ হাসিনার সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেন। ১৫ মিনিটের মতো হওয়া ওই বৈঠকে আশানুরূপ সাড়া পাননি জাপা নেতারা।

সূত্রমতে, বুধবার (৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় আবারও গণভবনে যান জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের, আনিসুল ইসলাম মাহমুদসহ ছয়জন কো-চেয়ারম্যান ও মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু। অল্প সময়ের এই বৈঠকে তারা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার সঙ্গে আসন ছাড় বা সমঝোতা নিয়ে কথা বলেন। এ সময় আওয়ামী লীগ প্রধান তাদের বলেন, আসন নিয়ে এখনও কিছু বলা যাচ্ছে না। বিষয়টি ১৪ দলের মুখপাত্র ও সমন্বয়ক আমির হোসেন আমুর সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন তিনি।

এরপর আওয়ামী লীগের দ্বিতীয় সারির এক নেতার গুলশানের বাসায় দলটির হাফ ডজন নেতার সঙ্গে বৈঠক করেন জাতীয় পার্টির দুজন নেতা। তারা হলেন— আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম ও সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম এবং জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু।

আওয়ামী লীগের সভাপতি ও দলটির নেতাদের সঙ্গে জাতীয় পার্টির নেতাদের বৈঠক নিয়ে সরাসরি কিছু জানায়নি দল দুটি। একাধিক নেতা জানিয়েছেন, জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা তিনটির মতো আসনে ছাড় বা সমঝোতা চাইছে। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এসব আসনে অংশগ্রহণ ও প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন দেখাতে উন্মুক্ত থাকবে এবং তাতে নৌকার প্রার্থীদের বিপক্ষে জিতে আসতে বলা হয়েছে। ১৪ দলের শরিকদেরও একই ধরনের কথা বলা হয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে। ফলে আলোচনায় কোনও সিদ্ধান্ত না আসেনি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আগামী নির্বাচনকে কীভাবে সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক করা যায়, সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। জাতীয় পার্টি প্রার্থী দিয়েছে, তারা তাদের নির্বাচন করবে। আমরা আমাদের প্রার্থী দিয়েছি, আমরা আমাদের নির্বাচন করব।’ তবে জোট গঠন বা আসন বণ্টন নিয়ে আলোচনা কত দূর এগুলো, সে বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেননি তিনি।

বৈঠকে অংশ নেওয়া জাতীয় পার্টির একজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়েছে বৈঠকগুলোতে। এ সময় দীর্ঘ দিনের মিত্র হিসেবে এবার সর্বোচ্চ আসনে ছাড় বা সমঝোতা চাওয়া হয়েছে। বিষয়টি আলোচনার পর্যায় রয়েছে, কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যায়নি। দেখা যাক...।’

জাতীয় পার্টির সাথে বৈঠকে অংশ নেওয়া আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে জাতীয় পার্টির সাথে আমাদের বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে জাতীয় পার্টি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক হবে এবং এই নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশের গণতন্ত্র আরও শক্তিশালী হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি সর্বশক্তি দিয়ে অংশগ্রহণ করবে এবং জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে জাতীয় সংসদে নিজেদের অবস্থান সুদৃঢ় করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে।’

জাতীয় পার্টির সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে বুধবার (৬ ডিসেম্বর) দুপুরে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘রাজনীতির ভিন্নমত থাকাটাই হচ্ছে গণতন্ত্র। একমত হতে না পারাটাও গণতন্ত্র। ১৪ দলের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে, দুই-এক দিনের মধ্যে আসনের বিষয়টি ঠিক হবে। আর জাতীয় পার্টি একসময় আমাদের মহাজোটে ছিল। তারা নির্বাচন করছে। সুতরাং আলোচনা হওয়ার আগে কিছু বলা সম্ভব নয়।’

বিরোধী দল জাতীয় পার্টি ও আওয়ামী লীগের ১৪ দল মিলেমিশে একাকার হওয়ার বিষয়টি উড়িয়ে দিলেও তিনি বলেন, ‘জাতীয় পার্টি প্রায় ৩০০ আসনে প্রার্থী দিয়েছে। আর আসন ভাগাভাগির ব্যাপারে বাস্তবতা রয়েছে। সেটা আলোচনার বিষয়। সময় হলে বিরোধী দল দাঁড়িয়ে যাবে। তাছাড়া এখানে আরও অনেক দল আছে। তৃণমূল বিএনপি, বিএনএম ও সুপ্রিম পার্টিসহ বিভিন্ন দল রয়েছে।’

এর আগের দিন মঙ্গলবার জোটগতভাবে নির্বাচন কথা জানিয়ে ১৪ দলের মুখপাত্র ও সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু বলেছিলেন, ‘জাতীয় পার্টির সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে ১৪ দলের শরিকদের আসন ভাগাভাগি নির্ধারিত হবে। জোটের আসনবিন্যাস ও প্রার্থী চূড়ান্ত করতে ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।’

/ইউএস/
সম্পর্কিত
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রথম দায়িত্ব ছিল আ.লীগ নিষিদ্ধ করা: নাহিদ ইসলাম
আ.লীগ নিষিদ্ধের কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরাও
কয়েকশ নেতাকর্মী নিয়ে আ.লীগের নিষিদ্ধের কর্মসূচিতে যোগ দিলেন নাহিদ
সর্বশেষ খবর
রাতভর নাটকীয়তার পর সকালে গ্রেফতার আইভী, দিলেন ‘জয় বাংলা’ স্লোগান
রাতভর নাটকীয়তার পর সকালে গ্রেফতার আইভী, দিলেন ‘জয় বাংলা’ স্লোগান
তিন শিক্ষক আর পাঁচ শিক্ষার্থী দিয়ে চলছে সরকারি বিদ্যালয়
তিন শিক্ষক আর পাঁচ শিক্ষার্থী দিয়ে চলছে সরকারি বিদ্যালয়
রাতে সমাধান হয়নি, যমুনার সামনে বিক্ষোভ অব্যাহত
রাতে সমাধান হয়নি, যমুনার সামনে বিক্ষোভ অব্যাহত
ভারত-পাকিস্তান সংঘাতে পিএসএল সরে গেলো আমিরাতে
ভারত-পাকিস্তান সংঘাতে পিএসএল সরে গেলো আমিরাতে
সর্বাধিক পঠিত
‘সাবেক রাষ্ট্রপতির দেশত্যাগে জড়িতদের শাস্তি দিতে না পারলে আমি চলে যাবো’
‘সাবেক রাষ্ট্রপতির দেশত্যাগে জড়িতদের শাস্তি দিতে না পারলে আমি চলে যাবো’
দেশ ছেড়েছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ
দেশ ছেড়েছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ
নৌ পুলিশের অভিযানে ২৭৬ জন গ্রেফতার, ১০ মরদেহ উদ্ধার
নৌ পুলিশের অভিযানে ২৭৬ জন গ্রেফতার, ১০ মরদেহ উদ্ধার
জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন থেকে পদত্যাগ করলেন স্নিগ্ধ
জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন থেকে পদত্যাগ করলেন স্নিগ্ধ
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে ৫৬ জনের পদত্যাগ, তুলেছেন দুর্নীতির অভিযোগ
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে ৫৬ জনের পদত্যাগ, তুলেছেন দুর্নীতির অভিযোগ