রাজধানীতে একই দিনে পৃথক বর্ধিত সভা করেছে জাতীয় পার্টির দুটি অংশ। শনিবার (১৯ এপ্রিল) জাপার জিএম কাদেরের নেতৃত্বাধীন অংশ দলটির বনানী কার্যালয়ে বর্ধিত সভা করেছে। একই সময়ে রওশন এরশাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টির বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে রাজধানীর সেগুনবাগিচার জেকে টাওয়ারে।
বনানীতে জাপার একাংশের বর্ধিত সভায় সভাপতিত্ব করেন জিএম কাদের। এসময় এ অংশের কো-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুসহ দলটির জেলা-মহানগরের শীর্ষ নেতারা বক্তব্য রাখেন।
অপরদিকে, রওশন এরশাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টির বর্ধিত সভায় সভাপতিত্ব করেন পার্টির মহাসচিব কাজী মামুনুর রশিদ। এতে কো-চেয়ারম্যান সুনীল শুভ রায়, সাবেক এমপি জাফর ইকবাল সিদ্দিক, ফখরুজ্জামান জাহাঙ্গীরসহ বিভিন্ন জেলার নেতারা বক্তব্য রাখেন।
বর্ধিত সভায় জিএম কাদের আগামী জাতীয় নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং নিয়ে শঙ্কা ব্যক্ত করে বলেন, আগামীতে আমরা নিরপেক্ষভাবে নির্বাচনি প্রচারণা চালাতে পারবো কিনা, প্রশাসন নিরপেক্ষ থাকবে কিনা, তা আগে নিশ্চিত করতে হবে। একতরফা নির্বাচন করে দেশ ও জনগণের কোনও লাভ হবে না।’
আওয়ামী লীগের বিচার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এগুলো একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া। অনেকে বিচারের নামে নির্বাচন পেছানোর চেষ্টা করছেন।’ তিনি বলেন, ‘সংস্কারের কোনও যৌক্তিকতা নেই। নির্বাচিত সরকার ছাড়া সংস্কার সম্ভব নয়। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার অর্ধেক বৈধ আর অর্ধেক অবৈধ। যেহেতু নির্বাচিত নয়, তাই অবৈধ। আর যেহেতু জাতির ক্রান্তিকালে দায়িত্ব নিয়েছে, তাই বৈধ। তবে, আগামী সংসদে এই সরকারকে বৈধতা দিতে বিল পাস করাতে হবে।’
সেগুনবাগিচায় অনুষ্ঠিত জাপার অপর অংশের বর্ধিত সভায় পার্টির মহাসচিব কাজী মামুনুর রশিদ বলেন, ‘পল্লীবন্ধু এরশাদের অসুস্থতার সুযোগে দলীয় চেয়ারম্যান পদ দখল করেন জিএম কাদের। দলীয় নেতাকর্মীরা তাকে এই পদে কখনোই দেখতে চায়নি। আজ জিএম কাদেরকে গ্রেফতার শুধু জনগণ নয়, দলীয় নেতাকর্মীদেরও প্রধান দাবিতে পরিণত হয়েছে। তিনি মনোনয়ন বাণিজ্য করেছেন, দলীয় চাঁদা আত্মসাতের সঙ্গে জড়িত। ইতোমধ্যে দুর্নীতি দমন কমিশন অনুসন্ধান শুরু করেছে। তাদের অভিনন্দন জানাই।’
কাজী মামুনুর রশিদ বলেন, ‘একের পর এক ত্যাগী নেতাকর্মীরা অপমানিত হয়ে পদত্যাগ করছেন। এভাবে দল চলতে পারে না। আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। দলকে সুসংগঠিত করতে হবে।’
এসময় সারা দেশের নেতারা পার্টির বর্ধিত সভায় অবিলম্বে জিএম কাদেরকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি। তারা বলেন, স্বঘোষিত চেয়ারম্যান জিএম কাদের দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে দলকে ধ্বংস করেছেন। এই সরকারের অবশ্যই তার (জিএম কাদের) বিচার নিশ্চিত করতে হবে।