হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির মাওলানা শাহ্ মুহিব্বুল্লাহ্ বাবুনগরী বলেছেন, কোরআন-সুন্নাহবিরোধী কোনও আইন মেনে নেওয়া হবে না। নারী সংস্কার কমিশন ভেঙে দিয়ে পুনর্গঠন করতে হবে। হেফাজতে ইসলাম নারীদের অধিকার ও মূল্যবোধের পক্ষে।
শনিবার (৩মে) দুপুর সোয়া ১টায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। হেফাজত আমিরের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী।
শনিবার সকাল ৯টায় সমাবেশ শুরু হয়। কর্মসূচিতে সারা দেশ থেকে হেফাজতের নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের কোরআন-সুন্নাহবিরোধী প্রতিবেদনসহ কমিশন বাতিল, সংবিধানে আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস পুনর্বহাল, ফ্যাসিবাদের আমলে দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, শাপলা চত্বরে গণহত্যাসহ সব হত্যাকাণ্ডের বিচার এবং ফিলিস্তিন ও ভারতে মুসলিম গণহত্যা-নিপীড়ন বন্ধের দাবিতে ঢাকায় এই মহাসমাবেশের আয়োজন করে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ।
হেফাজত আমিরের বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়, আরাকান সীমান্তে করিডোর দিয়ে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব হুমকি ও যুদ্ধক্ষেত্র বানানোর ষড়যন্ত্র চলছে। তিনি এ ব্যাপারে জনগণের মতামত নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আহ্বান জানান।
তিনি অভিযোগ করেন, নারী সংস্কার কমিশন দেশের পরিবারপ্রথা ভেঙে ফেলার চক্রান্ত করছে। তিনি রাসূল (সা.) এর নামে বিরূপ মন্তব্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনের দাবি করেন।
হেফাজত আমির বলেন, ভারতীয় ফ্যাসিবাদ ও আওয়ামী দালালদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। দেশে কোনও ফাসিস্টদের ঠাঁই হবে না। সংখ্যালঘুদের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
বাবুনগরী বলেন, গত ১৫ বছর দেশের মানুষ স্বাধীনতা ভোগ করতে পারেনি। ২৪-এর জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আমাদের দ্বিতীয় স্বাধীনতা অর্জন হয়েছে। শাপলা চত্বর ও মোদিবিরোধী আন্দোলনে হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি করেন তিনি।
মহাসমাবেশে হেফাজতের আমির মাওলানা শাহ্ মুহিব্বুল্লাহ্ বাবুনগরীর সভাপতিত্বে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন— দৈনিক আমার দেশের সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, আলোচিত ইসলামি বক্তা ও জৌনপুরের পীর মুফতি ড. এনায়েত উল্লাহ আব্বাসী, জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলীয় মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ।
হেফাজত নেতাদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন— নায়েবে আমির মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক, ড. আহমদ আবদুল কাদের, মাওলানা সালাহউদ্দিন নানুপুরী, মুফতি জসীম উদ্দিন, মাওলানা আব্দুল আউয়াল, সরোয়ার কামাল আজিজি, মহিউদ্দিন রাব্বানী, আহমেদ আলী কাসেমী, মাওলানা খুরশিদ আলম কাসেমী, মাহবুব জাকারিয়া, মাওলানা আব্দুল কাদের, মাওলানা আইউব বাবুনগরী, মাওলানা আফজালুর রহমান।
যুগ্ম মহাসচিবদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, মাওলানা মামুনুল হক, মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী, জুনায়েদ আল হাবিব, খালেদ সাইফুল্লাহ আইয়ূবী, হাসান জামিল,মুফতি সাখাওয়াত হোসাইন রাজী,মাওলানা মুসা বিন ইজহার, ইসলামী বক্তা মূফতি রেজাউল করিম আবরার, মুফতি ফখরুল ইসলাম, মুফতি মনির হোসেন কাসেমী, চরমোনাই পীরের সাহেবজাদা, সৈয়দ ইসহাক মোহাম্মদ আবুল খায়ের, মুফতি খলিলুর রহমান নেছারাবাদী ও মধুপুরের পীর মাওলানা আব্দুল হামিদ প্রমুখ।
দুই দফা কর্মসূচি ঘোষণা
মহাসমাবেশের শেষ পর্যায়ে দুই দফা নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব মাওলানা সাজিদুর রহমান।
১. আগামী ২৩ মে ৪ দফা দাবিতে দেশব্যাপী বিক্ষোভ।
২. নারী অধিকার প্রতিষ্ঠায় তিন মাসের মধ্যে প্রতিটি বিভাগীয় পর্যায়ে সমাবেশ।