মুশফিক আউট হয়ে ড্রেসিংরুমে ফিরছেন, ফেরার মুহূর্তে তাওহীদ হৃদয়ের সঙ্গে হাত মেলালেন। ৯২ রান করা ব্যাটারের মাথায় হাত বুলিয়ে বলে গেলেন, ‘শেষ করে আসবি, তোর কাছ থেকে সেঞ্চুরি চাই।’ যদিও এক বলের ব্যবধানে হৃদয়কে সাজঘরে ফিরতে হয়েছে। তাতে অভিষেকে পাঁচ নম্বরে নেমে সেঞ্চুরির বিশ্ব রেকর্ড গড়তে না পারলেও বাংলাদেশের হয়ে অভিষেকে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়ে ফেলেছেন।
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পা রাখার আগে অনেক সংগ্রাম করে হৃদয়কে এগিয়ে যেতে হয়েছে। ২০১৩ সালে ঢাকায় এসে বনশ্রীতে একটি ‘ভুয়া’ ক্রিকেট একাডেমির খপ্পরে পড়ে বহু টাকা গচ্ছা দিয়েছেন। এরপর ২০১৬ সালে রাজশাহীর বাংলা ট্র্যাক ক্রিকেট একাডেমিতে ভর্তি হয়ে ক্রিকেট জীবনের পথ খুঁজে পান তিনি। জীবনের সঙ্গে যুদ্ধ করে বয়সভিত্তিক ক্রিকেটের সিঁড়ি বেয়ে হৃদয় এখন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পা দিয়েছেন। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে ভালো শুরুর পর আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের অভিষেকটাও রাঙিয়েছেন নিপুণ হাতে। প্রিয় ক্রিকেটার মুশফিকের কাছ থেকে অভিষেক ক্যাপতো পেয়েছেনই। মুশফিকের ব্যাট দিয়েই খেলেছেন ৯২ রানের ইনিংস। বাংলাদেশের রেকর্ড জয়ের ম্যাচে আলো ঝলমলে ইনিংস খেলে হয়েছেন ম্যাচ সেরাও। অভিষেকের আগে এবং পরে বাংলা ট্রিবিউনের সঙ্গে নিজের ভাবনা নিয়ে বিস্তারিত কথা বলেছেন তাওহীদ হৃদয়।
বাংলা ট্রিবিউন: ক্রিকেট খেলতে এসে প্রতারণার শিকার হয়েছিলেন, এরপর পথ হারানো। কঠিন সংগ্রাম পেরিয়ে এখন আপনি আন্তর্জাতিক মঞ্চে। এই যে পথ চলা, কতখানি তৃপ্তির?
তাওহীদ হৃদয়: আমি মনে করি প্রতিটি খেলোয়াড়ের ক্ষেত্রে হোক কিংবা আল্লাহ যাদের বড় করেন তাদের অতীতে কোন না কোন বিশেষ ঘটনা থাকেই। আমার ক্ষেত্রে যেটা হয়েছে, ব্যক্তিগতভাবে অনুভব করি আমার জন্য অতীত একটা শিক্ষা সফর ছিল। যদি ওই রকম পরিস্থিতিতে না পড়তাম, তাহলে হয়তো পরিস্থিতি সম্পর্কে ধারণা পেতাম না। মানুষ কঠিন পরিস্থিতিতে না পড়লে আসলে সঠিক পথটা খুঁজে পায় না। আমি মনে করি আমার সঙ্গে ঘটা ঘটনাগুলোর জন্যই সঠিক ভাবে তৈরি হওয়ার পথটা খুঁজে পেয়েছি।
বাংলা ট্রিবিউন: জমি বন্ধক রেখে আপনার মা বনশ্রীর একটি ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে ভর্তির ব্যবস্থা করেছিলেন। মাকে আপনি সব সময় আপনার পাশে পেয়েছেন, বাবাও এখন আপনাকে সাপোর্ট দিচ্ছেন। অতীতের কথা মনে করলে এখন কেমন অনুভূতি হয়?
হৃদয়: সবার মা বাবাই আসলে চায় তাদের সন্তানরা পড়াশোনা করে ভালো কিছু করুক। কিন্তু আমি ছোটবেলা থেকে ক্রিকেট নিয়ে পড়ে থাকতাম। ওই সময় মা আমার জন্য যেটা করেছেন, সেটা আসলে বলে বোঝাতে পারবো না। আমার পেছনে মায়ের কিছু স্মৃতিময় জিনিস আছে, যেগুলো সব সময় প্রেরণা দেয়। একটা কথাই বলবো, আমি সত্যিকারের ভাগ্যবান সন্তান। মা-বাবা যদি একজন সন্তানের ওপর খুশি থাকে, এরচেয়ে বেশি দুনিয়াতে পাওয়ার আসলে কিছু নেই। সব সময়ই তাদের সাপোর্ট আমাকে অনুপ্রেরণা যুগিয়ে যাচ্ছে।
বাংলা ট্রিবিউন: জমি বন্ধক রাখার কারণে আপনার মাকে তো অনেক কথা শুনতে হয়েছিল, বাবাও চাননি আপনি ক্রিকেটার হন…
হৃদয়: বাবা-মা সবাই চাইতেন আমি যেন পড়াশোনার দিকে ফোকাস করি। পড়াশোনার ক্ষতি হবে বলে আমার বাবা সেভাবে সাপোর্ট করতে চাইতেন না। তবে মায়ের সাপোর্ট সব সময় পেয়েছি। বাবার ভয়ে লুকিয়ে লুকিয়ে ক্রিকেট খেলতে হয়েছে। আমার তো পড়াশোনাতে অনেক বিরতি গেছে। অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে নিউ জিল্যান্ড সফরের কারণে এসএসসি পরীক্ষা দিতে পারেনি। অনূর্ধ্ব-১৭ দলে জেএসসি পরীক্ষা দিতে পারেনি। তারপর থেকে আমার বাবার সঙ্গে একটু দূরুত্ব বেড়ে গিয়েছিল। যখন ক্রিকেটে ভালো করা শুরু করেছি, তখন এইসব বিষয় ওভারকাম হয়ে গেছে।
বাংলা ট্রিবিউন: বন্ধককৃত সেই জমি নিজেইতো ছুটিয়েছিলেন?
হৃদয়: আমি দ্বিতীয়বার যখন অনূর্ধ্ব-১৯ দলে খেললাম, তখনই এই কাজটা করেছিলাম। বন্ধক জমিটা ছুটানো আমার জীবনের অনেক বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। আমার ওপর অনেক কিছু নির্ভর করছিল সেই সময়। ব্যাক অব দ্য মাইন্ডে সব সময়ই কাজ করতো এটা। একটা জেদ ছিল যে ক্ষতিগুলো করেছি, সেটা কবে পুষিয়ে দিতে পারবো।
বাংলা ট্রিবিউন: এখন আপনার বাবা-মায়ের প্রতিক্রিয়া কী?
হৃদয়: অবশ্যই প্রতিটা বাবা-মায়ের প্রতিক্রিয়াই ভালো হওয়ার কথা। আমার বাবা-মাও খুশি হয়েছেন। মা বিশেষ করে একটু বেশি খুশি হয়েছেন। উনি তো ছোটবেলা থেকেই আমাকে অন্যভাবে দেখেছেন। পরিবার থেকে পড়াশোনার জন্য সবসময় চাপ দিতো, পড়াশোনার দিকে বেশি ফোকাসড ছিলাম না। যতটুকু পেরেছি বেশির ভাগ সময় মাঠেই থাকতাম। আলহামদুলিল্লাহ, বাবা-মা খুশি হয়েছেন, আশেপাশের আত্মীয়-স্বজনরাও খুশি।
বাংলা ট্রিবিউন: অভিষেক ম্যাচে রেকর্ডের দ্বারপ্রান্তে ছিলেন, কিন্তু ৯২ রানে আউট; আপনার কাছে এটা হতাশার কিনা?
হৃদয়: না। আলহামদুলিল্লাহ। আমিতো শুরুতেও রানেও আউট হতে পারতাম। যেটা হয়েছে সেটা নিয়ে আমি খুশি। তবে সেঞ্চুরি পেলে অবশ্যই ভালো লাগতো। আপনি বলছেন, এটা রেকর্ড হতো। এমনটা জানতাম না। জানলেও আমি আমার প্রসেসেই থাকতাম। যেটা হয়নি, ওটা নিয়ে ভেবে লাভ নেই। আমি খুশি, আমার কোন হতাশা নেই। এতটুকুই আমার রিযিকে ছিল। পরেরবার সেঞ্চুরি হবে ইনশাআল্লাহ। চেষ্টা ছিল শুরু থেকেই চেয়েছিলাম আমার ইনটেন্ট যেন ঠিক থাকে। চেষ্টা করেছি প্রতিটি বলের মেরিট অনুযায়ী খেলার।
বাংলা ট্রিবিউন: আপনার প্রিয় ক্রিকেটার মুশফিকের কাছ থেকে ক্যাপ নিয়েছেন, তার ব্যাট দিয়েই অভিষেক রাঙালেন। কতটা ভালো অনুভূতি?
হৃদয়: ২০০৭-এ তখন আমি অনেক ছোট। মুশফিক ভাই বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে জিতে একটা স্ট্যাম্প পেয়েছিলেন। একদিন স্টেডিয়ামে গিয়েছিলাম। একটা প্রোগ্রামে মুশফিক ভাইয়ের কাছে যখন স্ট্যাম্প দেখি, তখন থেকেই অনেক অনুপ্রাণিত হই। ওখান থেকে ইচ্ছে ছিল যদি একদিন খেলতে পারি জাতীয় দলে। আজকে ক্যাপ নেওয়ার সময় মুশফিক ভাই বলছিলেন, ‘তোমার ভবিষ্যৎ ভালো হোক। অনেকদিন জাতীয় দলকে সার্ভিস দিতে পারো।’ যখন ব্যাটিংয়ে নেমেছি তার সঙ্গে অনেক কথা বলেছি। মুশফিক ভাইকে বলছিলাম, ‘তুইও বগুড়ার, আমিও বগুড়ার। দুই বগুড়া মিলে আজকে শেষ পর্যন্ত খেলবো।’ আর ব্যাটের কথা বলছেন, মুশফিক ভাই তো আমাকে সব সময়ই ব্যাট দেয়, তার ব্যাট দিয়ে আমি অনেক রান পেয়েছি। আজকেও পেলাম।
বাংলা ট্রিবিউন: মুশফিক যখন আউট হয়ে ফিরছিলেন, যাওয়ার সময় আপনার মাথা বুলিয়ে কিছু একটা বলছিলেন, কী কথা হচ্ছিল?
হৃদয়: মুশফিক ভাই বলছিলেন, ‘পুরো ম্যাচ শেষ করে আসবি। তোর কাছ থেকে সেঞ্চুরি চাই।’
বাংলা ট্রিবিউন: নতুন পথটা খুঁজে পাওয়া কতটা কঠিন ছিল, নিজেকে বদলে ফেলতে বিশেষ কী কাজ করেছেন?
হৃদয়: কঠিন তো ছিলই। ব্যক্তিগতভাবে নিজেকে অনেক সময় দেওয়ার চেষ্টা করেছি। অনেক সময় অনেকে নানা প্রশ্ন করেছে- ‘তোমার অনেক কলিগরা জাতীয় দলে খেলে ফেলেছে, তুমি পারছো না যে?’ এগুলোর উত্তরতো আমি সবাইকে বুঝিয়ে বলতে পারতাম না। যে পজিশনে খেলি, তারা (একই সময়কার ক্রিকেটার) যে পজিশনে খেলে-অনেক কিছু আসলে থাকে এখানে। সবাইকে এর ব্যাখ্যা দেওয়া সম্ভব নয়। আমার দিক থেকে আমার প্রসেস মেনটেইন করার চেষ্টা করেছি। চেষ্টা করেছি নির্দিষ্ট কিছু জায়গা নিয়ে কাজ করতে।
বাংলা ট্রিবিউন: নির্দিষ্ট কিছু জায়গা বলতে কী বোঝাচ্ছেন?
হৃদয়: আমি সব থেকে বড় যে জিনিসটা পরিবর্তন করেছি, সেটা আমার মানসিকতা। আগে অনেক কিছু চিন্তা করতাম, এখন আর সেসব চিন্তা করি না। ব্যাটিংয়ের কিছু টেকনিকতো পরিবর্তন হয়েছেই। তবে মানসিকতাই বদলে ফেলেছি। কারণ আন্তর্জাতিক লেভেলে খেলতে হলে আপনার সাহস থাকা জরুরি, নয়তো পারবেন না। ক্রিকেট খেলাটাই সাহসের খেলা। এখানে যদি কারও সাহস, এক্সিকিউশন ও প্রসেস ঠিক থাকে, তাহলে সে সফল হবেই।
বাংলা ট্রিবিউন: অনেকেই বলে মানসিকতা বদল করে সফল হয়েছে, আপনি ঠিক কীভাবে সেটি করলেন?
হৃদয়: আগে হতো কি… আউট নিয়ে অনেক বেশি চিন্তা করতাম। দিন শেষে আউটতো হবেনই, আউটতো খেলার অংশ। কিন্তু আমি আউট হওয়ার আগ পর্যন্ত যতক্ষণ খেলবো ডমিনেট করেই খেলবো- এটাই আমার মাইন্ডসেটআপ। আউট হওয়াটা পরের ব্যাপার, আগে আমাকে ইতিবাচক মাইন্ডসেট নিয়ে খেলতে হবে। আউটতো আমি হবোই, ব্যাটাররা আউট হবেই। কিন্তু ব্যাটারদের চিন্তা থাকতে হবে ডমিনেট করার।
বাংলা ট্রিবিউন: তারপরও আপনি আউট হন, দেখা যায় রান কম করেই। তখন কীভাবে আত্মবিশ্বাস ফেরান?
হৃদয়: আত্মবিশ্বাস আপনি তখনই পাবেন, যখন রান পাবেন। রান ছাড়া আত্মবিশ্বাস পাবেন না। যেহেতু ডমিনেট করে খেলার চেষ্টা করি, ওটা করতে পারলেই আত্মবিশ্বাস পাই।
বাংলা ট্রিবিউন: কবে থেকে মনে হলো ডমিনেট করতে পারেন?
হৃদয়: যদি খেয়াল করেন আমি কিন্তু নিয়মিতই রান করতাম। হয়তো খুব ডমিনেট করতাম না। আমার রানটা ওভাবে চোখে পড়তো না, এখন যেভাবে চোখে পড়ছে। আমি ২০২২ সালের বিপিএলে রান করিনি। এছাড়া গত প্রিমিয়ার লিগে ওইভাবে রান করতে পারিনি। ওই মৌসুমটা বাজেভাবে কাটিয়েছি। পরের মৌসুমে কিন্তু রানের মধ্যে ঢুকে গিয়েছিলাম। আমি আসলে চেয়েছি সবার থেকে ভিন্ন কিছু করতে। ভিন্ন করতে গেলে কী করা উচিত? মনে করেছি মারতে হবে, মারার কোন বিকল্প নেই। ভালো হিটার হতে হবে আমাকে।
বাংলা ট্রিবিউন: ২০২২ সালের বিপিএলে ফরচুন বরিশালের হয়ে বাজে সময় কাটিয়েছেন। চট্টগ্রামে খালেদ মাহমুদ সুজনও আপনার আউট হওয়ার ধরন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। মনে আছে? ব্যর্থতা নিশ্চয়ই আপনাকে ভালো করতে অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে?
হৃদয়: সুজন স্যার যদি আমাকে ক্রিকেটে ব্যাক না করতো তাহলে ক্রিকেট খেলাটা বন্ধই হয়ে যেত। বনশ্রীতে প্রতারণার শিকার হওয়ার পর আমার ক্রিকেট খেলার ইচ্ছা ছিল না। সুজন স্যার যেভাবে ব্যাক করেছেন, এই দুনিয়াতে এসব কমই হয়। একজন খেলোয়াড়কে ওপরে নিয়ে আসতে যা কিছু দরকার সব করেছেন। আমি এখন অনুভব করি কোচ যদি আসলেই চায়, একজন প্লেয়ারের যদি ভালো করার অভিপ্রায় থাকে, তাহলে অবশ্যই বেটার কিছু সম্ভব। ২০২২ সালের বিপিএলেও যেমন রান পাচ্ছিলাম না। স্যারকে বলেছিলাম, ‘স্যার আমিতো পারছি না। অন্য কাউকে দিয়ে খেলান।’ তখন স্যার এক সময় আমাকে ঝাড়ি দিয়ে বলেছেন, ‘এই চিন্তা করার কোন প্রয়োজন নেই, তোর কাজ খেলা, খেলতে থাক।’ সাকিব ভাইও একই কথা বলেছিলেন। এমন ব্যাকআপ যদি আপনি আপনার দলের অধিনায়ক ও কোচের কাছ থেকে পান, এর থেকে বড় পাওয়া আর কিছু হবে না। সারা জীবন কৃতজ্ঞ তাদের কাছে। আমি হয়তো বা জীবনে এমন সুযোগ আর নাও পেতে পারি। একটানা ১০/১১ টা ম্যাচ খারাপ খেলার পরও আমাকে সুযোগ দেওয়া হয়েছে।
বাংলা ট্রিবিউন: আপনি বলছিলেন ২০২২ সালের বিপিএলে ফাইনালের হার আপনার চিন্তার পরিবর্তন এনেছে…
হৃদয়: ফাইনালের হারটাই একটা সময় জেদ হিসেবে কাজ করেছিল নিজেকে নতুন করে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে। কারণ একটা ওভারে একটা বাউন্ডারিও মারতে পারিনি। এটা নিয়ে অনেকদিন আমি আপসেট ছিলাম। অনেক রাত ঘুমাতেও পারিনি। খুব কষ্ট লাগছিল একটা বাউন্ডারি মারতে পারিনি। সুজন স্যার আমাকে একটা কথাই বলছিলেন, ‘তুই একটা বাউন্ডারিও মারতে পারলি না?’ আমার এই কথাটা এখনো ভেতরে হিট করে। একটা বাউন্ডারিও মারতে পারলাম না। ইভেন ওই ওভারে মারার মতো একাধিক বলও ছিল।
বাংলা ট্রিবিউন: আপনার ব্যাটিংয়ে যে পরিবর্তনটা এসেছে, সেটা কীভাবে পারলেন?
হৃদয়: আমি অনূর্ধ্ব -১৯ দলের হয় প্রথম খেলি, তখন থেকেই মারতে পারি। আমার ছোট বেলা থেকেই এই স্কিল ছিল। মাঝখানে চিন্তা ভাবনা পরিবর্তন হওয়ার কারণে…আসলে অন্য প্যার্টানে খেলছিলাম। প্যার্টানটা চেঞ্জ করেছিলাম ২০২২ সালের বিপিএলে খারাপ খেলার কারণে। নিজেকে নিজে প্রশ্ন করেছি, ‘আগের মতো কেন পারছি না, আগের টেকনিকে কেন খেলছি না?’ এই ছোট ছোট কাজগুলো করেছি। যেখানেই ম্যাচ খেলেছি এগুলো ট্রাই করেছি। আলহামদুলিল্লাহ আমি সফল হয়েছি।
বাংলা ট্রিবিউন: মাহমুদউল্লাহর মতো ক্রিকেটারকে বিশ্রাম দিয়ে আপনার মতো তরুণকে সুযোগ দেওয়া হয়েছে। আপনার জন্য এটা কতটা চ্যালেঞ্জের?
হৃদয়: না। আসলে ওইরকম চিন্তা করছি না। রিয়াদ ভাই (মাহমুদউল্লাহ) অবশ্যই বাংলাদেশের লিজেন্ড খেলোয়াড়। আমি মনে করি তার রিপ্লেসমেন্ট বাংলাদেশে নাই। লিজেন্ড সব সময় লিজেন্ডই থাকে। রিয়াদ ভাইকে বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে, ইনশাল্লাহ পরের সিরিজে আমরা রিয়াদ ভাইকে পাবো আশা করি।
বাংলা ট্রিবিউন: মাশরাফি বলেছিলেন আপনাকে আরও পরে সুযোগ দিলে ভালো হতো। মাশরাফির এমন মন্তব্য কীভাবে দেখেন?
হৃদয়: আলহামদুলিল্লাহ। মাশরাফি ভাই যেটা বলেছেন, হয়তো আমার ভালোর জন্যই বলেছেন। উনি ড্রেসিংরুমেও আমাকে বলেছেন বাংলাদেশে যেটা হয় জাতীয় দলে সুযোগ পেয়ে ২/১ টা ম্যাচ খেলেই বাদ পড়ে যায়। উনি আসলে এই কথাটাই মেনশন করে বলেছেন, ‘আমি চাই না তোমার সঙ্গেও এমন কিছু হোক। চাই তুমি নিজে যেন সেই সুযোগটা না দাও। ভালো কিছু করো।’