বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল নিয়ে দুশ্চিন্তার জায়গা তাদের ব্যাটিং। ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়া-ভারতের বিপক্ষে এই ব্যাটিং ব্যর্থতার খেসারত দিতে হয়েছে পুরো দলকে। এশিয়া কাপেও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাজে ব্যাটিংয়ের প্রদর্শনী হয়েছে ডাম্বুলার ২২ গজে। তবে থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ার বিপক্ষে ধারাবাহিক ভাবে ভালো ব্যাটিংয়ের পর কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে বাংলাদেশের। আগামী ২৬ জুলাই ভারতের বিপক্ষে সেমিফাইনালে মুখোমুখি হবে তারা। এই ম্যাচের আগে ধারাবাহিক ব্যাটিং পারফরম্যান্স পুরো দলকেই স্বস্তি দিচ্ছে।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ১১১ রানে থেমেছে বাংলাদেশের ইনিংস। পরে অবশ্য তুলনামূলক কম শক্তিশালী বোলিং আক্রমণের বিপক্ষে বাংলাদেশের ব্যাটাররা ফর্মে ফিরেছে। আগামী শুক্রবার ভারতের বিপক্ষে প্রথম সেমিফাইনালে বাংলাদেশ মুখোমুখি হবে। ভারত টুর্নামেন্টের সবচেয়ে শক্তিশালী দল। এমন দলের বোলিং আক্রমণের বিপক্ষে খেলতে নামার আগে ব্যাটারদের ছন্দে ফেরাটা জরুরি। মালয়েশিয়াকে ১১৪ রানের বড় ব্যবধানে হারানোর পর অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতিও তেমনটাই জানালেন।
পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে অধিনায়ক জ্যোতি বলেছেন, ‘আজকেব্যাটাররা খুব ভালো বোলিং করেছে। অবশ্যই এই ম্যাচটি আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ম্যাচটি জিতে সেমিফাইনালে উঠতে পেরেছি। গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, ধারাবাহিক ভাবে আমাদের ব্যাটাররা রান করতে পেরেছে। শেষ দুই ম্যাচে এটাই আমাদের জন্য স্বস্তির খবর। মোর্শেদা আগের ম্যাচে হাফ সেঞ্চুরি করেছে। আজকে ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস খেলেছে। ডালিয়া ভালো শুরু পাচ্ছে।’
কাগজে-কলমে ভারত শক্তিশালী দল হলেও বাংলাদেশ দল নিজেদের পরিকল্পনা নিয়েই এগুতে চান। প্রতিপক্ষ নিয়ে খুব বেশি চিন্তা করতে চান না তিনি, ‘আমরা আমাদের নিজেদের গেমে সচেতন থাকতে চাই। সবকিছুই নির্ভর করে নির্দিষ্ট দিনের ওপর, ওই দিন আমরা কেমন ক্রিকেট খেলি তার ওপর। দলের ওপর আমার আস্থা ও বিশ্বাস আছে। জানি আমাদের দলটা ভালো। শুধু শতভাগ পারফরম্যান্স দিতে হবে নির্দিষ্ট ওই দিনটাতে, এটা করতে পারলেই আশা করি ভালো কিছু করা সম্ভব হবে।’
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে ব্যর্থ হওয়ার পর দ্বিতীয় ম্যাচে ব্যাটিংয়ে নামতে হয়নি জ্যোতির। বুধবার গ্রুপ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে মালয়েশিয়ার বিপক্ষে ব্যাটিংয়ে নেমে খেললেন বিস্ফোরক এক ইনিংস। সাধারণত চার নম্বরে ব্যাটিংয়ে নামলেও আজকের ম্যাচে তিন নম্বরে ব্যাটিং করেছেন বাংলাদেশের অধিনায়ক। ৩৭ বলে ৫ চার ও ২ ছক্কায় খেলেছেন ৬২ রানের ইনিংস। নিজের ব্যাটিং নিয়ে জ্যোতি বলেছেন, ‘আমি সবসময় আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করতে পছন্দ করি। আমার এরিয়ায় বল খুব সহজেই আসছিল, রান করা আমার জন্য তাই অনেকটাই সহজ হয়ে গেছে। মোর্শেদা যেহেতু অন্যপ্রান্ত থেকে আক্রমণাত্মক খেলছিল, এই কারণে আমার জন্য কাজটা আরও সহজ হয়ে যায়।’
দলের নিয়মিত উইকেট কিপার অধিনায়ক জ্যোতি নিজেই। তবে মালয়েশিয়ার বিপক্ষে দিলারা উইকেট কিপিং করেছেন। প্রথমবার গ্লাভস হাতে খেলতে নেমে দারুণও করেছেন দিলারা। নিজের গ্লাভস জোড়া দিলারাকে দিয়ে দেওয়া প্রসঙ্গে জ্যোতি বলেছেন, ‘গ্লাভস হাতে দিলারা দারুণ করেছে। সে খুব ভালো উইকেটকিপার, খুব বেশি সুযোগ হচ্ছিল না আর কি। আমার কারণে খুব বেশি সুযোগ পাচ্ছিল না বলতে পারেন। আমি কোচদের সঙ্গে আলোচনা করে, অনেকটা জোড় করেই তার হাতে গ্লাভস তুলে দেই। সে গ্লাভস হাতে, নিজের কাজটা ঠিকঠাক মতো করেছে। এটা দারুণ ব্যাপার।’