প্রত্যাশার বেলুন ফুলিয়ে নয়, এবার বুক ফুলিয়ে ভারতে পা রেখেছে বাংলাদেশ। পাকিস্তানকে পাকিস্তানের মাটিতে টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করার টাটকা সুখস্মৃতি তাদের সঙ্গী। লাল বলের ক্রিকেটে নিজেদের খুঁজে পাওয়ার আত্মবিশ্বাস তাদের উদ্বুদ্ধ করছে ভারতের একপেশে আধিপত্য ভেঙে দিতে। দলগতভাবে বাংলাদেশ ‘সর্বশক্তিমান’ ভারতের চোখে চোখ রেখে লড়াই করার দৃঢ় সংকল্প তাদের। এবার কি তাহলে ভারতে সাদা পোশাকে রঙিন উৎসব করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ!
টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার পর ২৪ বছর আগে এই ভারতের বিপক্ষে খেলেই লাল বলে বাংলাদেশের যাত্রা শুরু। ২০০০ সালের নভেম্বরে সেই যে ৯ উইকেটের দাপট দেখানো জয় পেয়েছিল ভারত, সেই শুরু। পরে আরও ১২ বারের দেখায় ১০ বারই হারতে হয়েছে অসহায়ভাবে। সর্বোচ্চ সাফল্য দুটি ড্র, ২০০৭ ও ২০১৫ সালে। যদিও দুই বছর আগে সবশেষ সিরিজে ভারতের সামনে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে একটা সময় জয়ের আভাস দিয়েছিল, কিন্তু হার মানতে হয়েছিল।
এনিয়ে তৃতীয়বার ভারতে টেস্ট খেলতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। ২০১৭ ও ২০১৯ সালে অতিথি হিসেবে গিয়ে তিন টেস্টের দুটিতেই তারা হেরেছে ইনিংস ব্যবধানে। এবার কিন্তু তেমন কিছু হচ্ছে না বলেই আভাস মিলছে। সৌরভ গাঙ্গুলি, দিনেশ কার্তিক ও অজয় জাদেজার মতো প্রাক্তন ও বর্তমান ক্রিকেটাররা বাংলাদেশের কোনও সুযোগই দেখছেন না। তবে জনপ্রিয় ধারাভাষ্যকার হার্শা ভোগলে ও সাবেক ক্রিকেটার ওয়াসিম জাফর সতর্ক করে দিয়েছেন ভারতকে। এই বাংলাদেশ এবার তীব্র লড়াই করবে বলেই আশা তাদের। এমনকি ভারতীয় গ্রেট সুনীল গাভাস্কার তার দেশের ক্রিকেটারদেরকে জানিয়ে দিয়েছেন, এই বাংলাদেশকে অবমূল্যায়ন করলে বিপদ হতে পারে।
মূলত পাকিস্তানে বাংলাদেশ যেভাবে দুই টেস্টের শুরুতে ব্যাটে-বলে খাদের কিনারা থেকে ঘুরে দাঁড়িয়েছে, তা এককথায় প্রশংসনীয়। ভারতের শক্তিশালী ব্যাটিং-বোলিং লাইনআপের বিরুদ্ধেও একই পরিস্থিতি তৈরি হলে যে তারা ভেঙে পড়বে না, তা বলা যায়। কেউ না কেউ ব্যাট হাতে দাঁড়িয়ে যাবেন, কেউ না কেউ বল হাতে ব্রেকথ্রু এনে দিতে পারেন।
ভারত তাদের নতুন হোম সিজন শুরু করার আগে ঘরের মাঠে টানা ১৭ টেস্ট সিরিজ জিতে বাংলাদেশকে চোখ রাঙাচ্ছে। তবুও নাজমুল হোসেন শান্তরা নির্ভার। তারা প্রতিপক্ষ কে, সেটা নিয়ে নয়। নিজেদের শক্তিমত্তা দিয়ে কাঁপিয়ে দিতে চায় ভারতের অপ্রতিরোধ্য দুর্গকে। যার শুরুটা হতে পারে চেন্নাইয়ে, আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে।