অনেক ঢাকঢোল পিটিয়ে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) ফ্যাঞ্চাইজি কিনেছেন ঢালিউডের সুপারস্টার শাকিব খান। আলোর ঝলকানিতে যেভাবে ঢাকা ক্যাপিটালস আলোড়ন তুলেছিল, মাঠের পারফরম্যান্সে তার কিছুই দেখা যাচ্ছে না। টানা তিন ম্যাচ হেরে পয়েন্ট টেবিলের একেবারে তলানিতে পৌঁছে গেছে তারা। শুক্রবার খুলনা টাইগার্সের দেওয়া ১৭৪ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে একশর নীচে অলআউট হওয়ার শঙ্কায় পড়ে গিয়েছিল ঢাকা। তবে অধিনায়ক থিসারা পেরেরা ইনিংসের সৌজন্যে সেই লজ্জা পেতে হয়নি। চলতি আসরে একই দিনে বিপিএল দ্বিতীয় সেঞ্চুরি দেখলো, কিন্তু তা বিফলে গেলো।
শুরুর ব্যাটাররা এতটাই বাজে খেলেছেন, থিসারার সেঞ্চুরি কোনও কাজেই লাগেনি। শেষ বলে চার মেরে সেঞ্চুরি পূর্ণ করলেও দলকে জেতাতে পারেননি দলের লঙ্কান অধিনায়ক। ৬ উইকেটে ১৫৩ রানে থেমে যায় ঢাকার ইনিংস। ফলে ২০ রানে টানা দ্বিতীয় ম্যাচে জয় নিশ্চিত করে খুলনা।
মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে আগে ব্যাটিং করে খুলনা ১৭৩ রানের সংগ্রহ দাঁড় করায় ৮ উইকেট্ হারিয়ে। জবাবে খেলতে নেমে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে ঢাকা। দলের গুরুত্বপূর্ণ ব্যাটার লিটন দাস আজও ব্যর্থ হয়েছেন। অফফর্মে থাকা এই ব্যাটার প্রথম ম্যাচে ৩১ রান করে ফর্মে ফেরার ইঙ্গিত দিলেও টানা দুই ম্যাচ এক ডিজিটের ঘরে থেমেছেন। টপ অর্ডার ৫ ব্যাটারের মধ্যে কেবল ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম (১৯) দুই অঙ্কের ঘরে রান করতে পেরেছেন। ঢাকার ইনিংস একশর নিচেই থেমে যেতে পারতো, ৪১ রানে ছয় উইকেটের পতন সেই শঙ্কা জাগায়। অধিনায়ক থিসারা রান পেয়ে লড়াই টিকে রাখেন। শুক্রবার তিনি একাই লড়াই করেছেন খুলনার বোলারদের বিরুদ্ধে। শেষ বলে সেঞ্চুরি তুলে নেন লঙ্কান তারকা। ৬০ বলে ৯ চার ও ৭ ছক্কায় থিসারা অপরাজিত ছিলেন ১০৩ রানে।
খুলনার বোলারদের হয়ে মেহেদী হাসান মিরাজই মূলত ঢাকার ব্যাটিং লাইনআপ গুঁড়িয়ে দেন। ৬ রানে এই স্পিনার নেন তিনটি উইকেট, হয়েছেন ম্যাচসেরা। এছাড়া আবু হায়দার দুটি এবং জিয়াউর রহমান নেন একটি উইকেট।
এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ পাওয়া খুলনা শুরুটা ঝলমলে করলেও শেষটা যেন হতাশায় মোড়ানো। ওপেনিং জুটিতে ৪৯ রান জমা করেও একশর আগেই তারা হারায় ৬ উইকেট। শেষ পর্যন্ত আবু হায়দারের ব্যাটিং তাণ্ডবে নির্ধারিত ২০ ওভারে চ্যালেঞ্জিং স্কোর গড়ে। ৫ ওভারে ৫০ রান তুলে ফেলা দলটি প্রথম ধাক্কা খায় মোহাম্মদ নাঈমের বিদায়ে। ১৭ বলে ৩০ রান করে এই ব্যাটার চাতুরাঙ্গার বলে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান। এরপর আফিফ হোসেন ধ্রুব ২ বল খেলে মাত্র ১ রান করেই সাজঘরে ফেরেন। আফগান ব্যাটার ইব্রাহিম জাদরানও ছিলেন নিজের ছায়া হয়ে। ৬ বলে ৫ রান করে নাজমুল ইসলামের বলে স্টাম্পড হন। অধিনায়ক মিরাজের ব্যাট থেকেও এদিন আসে মাত্র ৮ রান।
খুলনার ব্যাটিং বিপর্যয়ে প্রতিরোধ গড়েন জিয়াউর রহমান ও মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন। সপ্তম উইকেট জুটিতে ২৯ বলে ৪৩ রান যোগ করেন তারা। জিয়াউর ১৫ বলে ২২ রান করে আউট হলে আবু হায়দারের ১১ বলে ২২ রানের অপরাজিত ক্যামিওতে ভালোমানের স্কোর জমা করে।
ঢাকার বোলারদের মধ্যে চাতুরাঙ্গা নেন সর্বোচ্চ দুটি উইকেট। একটি করে উইকেট নেন আবু জায়েদ রাহী, মোস্তাফিজুর রহমান, শুভম রঞ্জনে, নাজমুল ইসলাম, আলাউদ্দিন বাবু ও থিসারা।