প্রথম টি-টোয়েন্টি: শ্রীলঙ্কা ১৯ ওভারে ১৫৯/৩ (আভিষ্কা ৮*, আসালাঙ্কা ১১*, নিসাঙ্কা ৪২, পেরেরা ২৪, কুশল ৭৩)
বাংলাদেশ ২০ ওভারে ১৫৪/৫ (নাঈম ৩২*, শামীম ১৪*, তানজিদ ১৬, লিটন ৬, ইমন ৩৮, হৃদয় ১০, মিরাজ ২৯)
ফল: শ্রীলঙ্কা ৭ উইকেটে জয়ী।
আগে বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় শ্রীলঙ্কা।। তারপর ব্যাটারদের চাপে রেখে ১৫৪ রানে আটকে ফেলে। ১৫৫ রানের লক্ষ্যে নেমে ৬ ওভারেই তারা রেকর্ড ৮৩ রান তোলে।
পাওয়ার প্লের পর রানের গতি কিছুটা কমে যায়। ৪৯ বলে ১০০ ছোঁয়ার পর মিরাজ, রিশাদের আটসাট বোলিংয়ে শ্রীলঙ্কা ছন্দ হারায়। তবে দারুণ শুরুর ওপর দাঁড়িয়ে তারা ১৯ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছায়। কুশল মেন্ডিস ৭৩ রান করেন। তার সঙ্গে ২৮ বলে ৭৮ রানের ওপেনিং জুটিতে পাথুম নিসাঙ্কা করেন ৪২ রান।
এই দুই ওপেনারের ঝড়ো শুরুতে বাংলাদেশ অল্প পুঁজিতে সুবিধা করতে পারেনি। আগে ব্যাট করে তারা পারভেজ হোসেন ইমন ও মোহাম্মদ নাঈমের ব্যাটে ৫ উইকেটে ১৫৪ রান করে। মেহেদী হাসান মিরাজ করেন ২৯ রান। আর দুয়েকটি বড় ইনিংস হলে নিশ্চিতভাবে শ্রীলঙ্কাকে চাপে ফেলা যেতো।
তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে থাকলো শ্রীলঙ্কা। ম্যাচসেরা হয়েছেন কুশল।
শামীমের এক হাতের ক্যাচে আউট কুশল
মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের বলে ফিরলেন কুশল মেন্ডিস। লক্ষ্য থেকে ৭ রান দূরে থাকতে আউট হন তিনি। ৫১ বলে ৫ চার ও ৩ ছয়ে কভারে শামীম হোসেনের এক হাতে নেওয়া দারুণ ক্যাচে ফিরলেন কুশল। ১৪৮ রানে তিন উইকেট হারালো শ্রীলঙ্কা।
পেরেরাকে ফেরালেন রিশাদ
শ্রীলঙ্কার দাপুটে ব্যাটিংয়ে হার দেখছে বাংলাদেশ। তবে রিশাদ হোসেনের বলে কুশল পেরেরাকে ফেরালেন রিশাদ হোসেন। ১২৪ রানে দুই উইকেট হারালো স্বাগতিক দল। ২৫ বলে ২৪ রান করে লিটন দাসের ক্যাচ হন পেরেরা।
৪৯ বলে শ্রীলঙ্কার ১০০, কুশলের হাফ সেঞ্চুরি
১৫৫ রানের লক্ষ্যে নেমে ৮.১ ওভারে ১০০ রান করেছে শ্রীলঙ্কা।
১১তম ওভারের শেষ বলে ফিফটি করেন কুশল মেন্ডিস। ৩১ বলে তিনটি করে চার-ছয়ে পঞ্চাশ ছোঁন তিনি।
২৮ বলে ৭৮ রানের জুটি ভাঙলেন মিরাজ, পাওয়ার প্লেতে শ্রীলঙ্কার ৮৩ রান
প্রথম চার ওভারে শ্রীলঙ্কার দুই ওপেনার পাথুম নিসাঙ্কা ও কুশল মেন্ডিস তিন পেসারকে তুলোধুনো করে ৬৪ রান তোলে। বোলিংয়ে আসেন মেহেদী হাসান মিরাজ। প্রথম তিন বলে তাকেও দুটি ছয় মেরে ১৪ রান তোলেন নিসাঙ্কা। চতুর্থ বলে তাকে রিশাদ হোসেনের ক্যাচ বানান বাংলাদেশি স্পিনার। ৪.৪ ওভারে ৭৮ রানে ভাঙে উদ্বোধনী জুটি। ১৬ বলে ৫ চার ও ৩ ছয়ে ৪২ রান করে থামে নিসাঙ্কা ঝড়।
পাওয়ার প্লেতে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ১ উইকেটে ৮৩ রান। কুশল পেরেরা ২ ও কুশল মেন্ডিস ৩৮ রানে অপরাজিত। টি-টোয়েন্টির পাওয়ার প্লেতে এটা শ্রীলঙ্কার রেকর্ড রান।
প্রথম ওভারে সাইফ দিলেন ১৪ রান, তাসকিন ও তানজিম ১৬
১৪ মাস পর প্রথম আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ফিরেই খরুচে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। ইনিংসের প্রথম তিন বলেই তাকে চার মেরেছেন পাথুম নিসাঙ্কা। ওই ওভারে ১৪ রান দেন সাইফ। পরের ওভারে তাসকিন আহমেদও পাত্তা পাননি। কুশল মেন্ডিসের দুই চার ও এক ছয়ে তার ওভারে শ্রীলঙ্কা তোলে ১৬ রান।
তৃতীয় ওভারে বল হাতে নেন তানজিম হাসান সাকিব। এবার তাকে তুলোধুনো করেন নিসাঙ্কা। দুই চার ও এক ছয়ে ওই ওভারে লঙ্কানরা তোলে ১৬ রান। চতুর্থ ওভারের প্রথম বলে তাসকিনকে চার মেরে পঞ্চাশ পার করে স্বাগতিকরা।
শ্রীলঙ্কাকে ১৫৫ রানের লক্ষ্য দিলো বাংলাদেশ
শুরুটা দারুণ হয়েছিল বাংলাদেশের। পারভেজ হোসেন ইমনের মারমুখী ব্যাটিংয়ে ৩১ বলে দলীয় স্কোর পঞ্চাশ হয়। ৩৮ রানে থামেন এই ওপেনার। ৪৬ বলে উদ্বোধনী জুটি ভাঙার পর হঠাৎ ছন্দপতন। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে সফরকারীরা। তবে ৮৯ রানে চার উইকেট হারানোর পর মোহাম্মদ নাঈম ও মেহেদী হাসান মিরাজের জুটিতে বাংলাদেশ উঠে দাঁড়াতে চেষ্টা করে। তাদের জুটিও ছিল ৪৬ রানের। শেষ দুই ওভারে শামীম হোসেনের একটি করে ছক্কায় ২৪ রান যোগ হয় স্কোরবোর্ডে। তাতে বাংলাদেশ করে ৫ উইকেটে ১৫৪ রান। নাঈম ৩২ রানে ও শামীম ১৪ রানে অপরাজিত ছিলেন। মিরাজের ২৯ রানও ছিল কার্যকরী।
শ্রীলঙ্কার পক্ষে সর্বোচ্চ দুটি উইকেট নেন মাহিশ থিকশানা।
মিরাজ আউট
১৮.৩ ওভারে মাহিশ থিকশানার দ্বিতীয় শিকার হলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। শ্রীলঙ্কা পেসারের ইয়র্কারে চারিথ আসালাঙ্কার ক্যাচ হন তিনি। দলীয় ১৩৫ রানে পঞ্চম উইকেট হারালো বাংলাদেশ।
২৩ বলে চারটি চারে ২৯ রান করেন মিরাজ। নাঈমের সঙ্গে তার জুটি ছিল ৩৬ বলে ৪৬ রানের।
মিরাজের চারে বাংলাদেশের একশ
১৫তম ওভারের চতুর্থ বলে দাসুন শানাকাকে চার মারেন মেহেদী হাসান মিরাজ। তাতে বাংলাদেশের স্কোর একশ ছাড়ায়। পরের বলে আরেকটি বাউন্ডারি মারেন তিনি।
১০ রানে হৃদয়ের বিদায়, রিভিউ নিয়ে টিকলেন নাঈম
গত দু্ই বছরে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের শীর্ষ স্কোরার তাওহীদ হৃদয়। শ্রীলঙ্কায় আগের দুটি ম্যাচে করেছিলেন ফিফটি। কিন্তু প্রথম টি-টোয়েন্টিতে হতাশ করলেন তিনি। ১৩ বলে আউট হলেন ১০ রান করে। দাসুন শানাকার বলে কুশল মেন্ডিসের গ্লাভসে ধরা পড়েন হৃদয়। ১২.৩ ওভারে ৮৯ রানে বাংলাদেশ হারালো চতুর্থ উইকেট।
পরের ওভারে জেফ্রি ভ্যান্ডারসের বলে মোহাম্মদ নাঈমের বিরুদ্ধে এলবিডব্লিউর আবেদনে আম্পায়ার আউট দেন। বাংলাদেশি ব্যাটার রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান।
৬ রানে আউট লিটন, ইমনও প্যাভিলিয়নে
ব্যর্থতার বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসতে পারলেন না লিটন দাস। বাজে ফর্মের কারণে ওয়ানডে সিরিজের শেষ দুই ম্যাচে বেঞ্চে ছিলেন। তবে অধিনায়ক হিসেবে টি-টোয়েন্টি সিরিজে ফিরেছেন। সেখানেও ব্যর্থতা কাটাতে পারেননি। ১১ বলে ৬ রান করে জেফ্রি ভ্যান্ডারসের কাছে এলবিডব্লিউ হন। অষ্টম ওভারের শেষ বলে দ্বিতীয় ব্যাটার হিসেবে মাঠ ছাড়েন লিটন, দলের রান তখন ৬৫। বাংলাদেশ অধিনায়ক রিভিউ নিলেও আম্পায়ার্স কলে ক্রিজ ছাড়তে হয়।
আর তিন বল পর সেট ব্যাটার পারভেজ হোসেন ইমনও প্যাভিলিয়নে ফেরেন। দলীয় ৬৭ রানে মাহিশ থিকশানার শিকার হন তিনি। উঁচু শট খেলেন ইমন। কিন্তু লং অনে ক্যাচ নিতে কষ্ট হয়নি দাসুন শানাকার। ২২ বলে ৫ চার ও ১ ছয়ে ৩৮ রান করে আউট ইমন।
পাওয়ার প্লেতে বাংলাদেশের ৫৪ রান
পাওয়ার প্লেতে পারভেজ হোসেন ইমনের মারমুখী ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ তুলেছে ৫৪ রান। ৩৫ রানে অপরাজিত আছেন ইমন, লিটন ১ রানে খেলছেন। তানজিদ হাসান তামিম ১৬ রান করে পঞ্চম ওভারের শেষ বলে বিদায় নেন। উদ্বোধনী জুটিতে সফরকারীরা করে ৪৬ রান।
তানজিদের বিদায়ের পর ইমনের চারে বাংলাদেশের ফিফটি
চতুর্থ ওভারে মাহিশ থিকশানাকে তিনটি চারে ১৪ রান তুলে নেন পারভেজ হোসেন ইমন। তার মারমুখী ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ দারুণ ছন্দে উঠেছিল। কিন্তু পঞ্চম ওভারে ভাঙলো উদ্বোধনী জুটি। শেষ বলে থুশারার শিকার হন তানজিদ হাসান তামিম। ১৭ বলে ২ চারে ১৬ রান করে থিকশানাকে ক্যাচ দেন তিনি।
৪৬ রানে উদ্বোধনী জুটি ভাঙার পরের ওভারে ইমনের চারে ৩১ বলে বাংলাদেশের ফিফটি হয়।
বাউন্ডারিতে রানের খাতা খুলেছে বাংলাদেশ
ইনিংসের দ্বিতীয় বলে বাউন্ডারিতে রানের খাতা খুলেছে বাংলাদেশ। পরের ওভারে এসেছে আরেকটি চার। তাতে প্রথম দুই ওভারে বাংলাদেশের রান ১৫। ক্রিজে আছেন তানজিদ হাসান তামিম ও পারভেজ হোসেন ইমন।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ
পাল্লেকেলেতে আগের ম্যাচে ৯৯ রানের হারে ওয়ানডে সিরিজ হেরেছিল বাংলাদেশ। একই ভেন্যুতে নতুন সংস্করণে তারা মুখোমুখি হচ্ছে শ্রীলঙ্কার। বৃহস্পতিবার প্রথম টি-টোয়েন্টিতে টস জিতেছে স্বাগতিকরা। তারা ফিল্ডিং নিয়েছে। আগে ব্যাটিং করবে বাংলাদেশ।
একাদশে ফিরেছেন মোহাম্মদ নাঈম ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন।
বাংলাদেশ একাদশ: তানজিদ হাসান তামিম, পারভেজ হোসেন ইমন, লিটন দাস (অধিনায়ক ও উইকেটকিপার), নাঈম শেখ, তাওহীদ হৃদয়, শামীম হোসেন, মেহেদী হাসান মিরাজ, তানজিম হাসান সাকিব, রিশাদ হোসেন, তাসকিন আহমেদ, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন।
শ্রীলঙ্কা একাদশ: পাথুম নিসাঙ্কা, কুশল মেন্ডিস, কুশল পেরেরা, আভিষ্কা ফার্নান্ডো, চারিথ আসালাঙ্কা (অধিনায়ক), দাসুন শানাকা, চামিকা করুণারত্নে, জেফ্রি ভ্যান্ডারসে, মাহিশ থিকশানা, নুয়ান থুসারা, বিনুরা ফার্নান্ডো।
শোধ নিতে কি পারবে বাংলাদেশ?
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজের পর ওয়ানডে সিরিজও হতাশায় শেষ করেছে বাংলাদেশ। আজ বৃহস্পতিবার শুরু হচ্ছে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ। আগের দুই ফরম্যাটে সিরিজ হারের শোধ কি কুড়ি ওভারের ফরম্যাটে নিতে পারবে লিটন দাসের দল? নাকি আগের মতো ক্রিকেটের সবচেয়ে সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটেও ভরাডুবি হবে। আজ পাল্লেকেলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় শুরু হবে প্রথম ম্যাচ। যা সরাসরি সম্প্রচার করবে টি-স্পোর্টস।
ফর্মহীনতায় শেষ দুই ওয়ানডেতে দলের বাইরে ছিলেন লিটন দাস। তার কাঁধে এবার টি-টোয়েন্টির নেতৃত্ব। লিটনকে ২০২৬ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ পর্যন্ত অধিনায়ক করে দায়িত্ব দিয়েছে বিসিবি।। তবে তার নেতৃত্ব ও ব্যাটিং- দুই দিকেই ভর করছে হতাশা। সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে সিরিজ হার এবং পাকিস্তানের বিপক্ষে হোয়াইটওয়াশ- সব মিলিয়ে লিটনের অধিনায়কত্বের সূচনাটা হয়েছে ভীষণ বাজে। এমন পরিবেশ ও পরিস্থিতি নিয়েই আজ লঙ্কানদের বিপক্ষে আরও একটি মিশন শুরু করবেন তিনি।