ফেডারেশন কাপের চ্যাম্পিয়ন আবাহনী ঘরোয়া মৌসুমের দ্বিতীয় শিরোপার খোঁজে শুভ সূচনা করেছে। রবিবার স্বাধীনতা দিবস ফুটবলের ‘সি’ গ্রুপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে তারা ২-১ গোলে হারিয়েছে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্রকে। জোড়া গোল করে তাদের দারুণ এই জয়ের নায়ক ফয়সাল আহমেদ শীতল।
এই মৌসুমে প্রথমবার খেলার সুযোগ পান ফয়সাল। একাধিক সুযোগ নষ্টের মহড়া দেওয়া আবাহনী দ্বিতীয়ার্ধে তাকে বদলি নামায়। তারপরই পাল্টে যায় ম্যাচের চেহারা। দুই মিনিটের ব্যবধানে দু্ইবার লক্ষ্যভেদ করেন তিনি।
দলের কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়কে এই টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচে পায়নি আবাহনী। ইনজুরিতে সানডে, আর নাবীব নেওয়াজ দুই ম্যাচ নিষিদ্ধ। ভরসা রাখতে হয়েছে জুয়েল রানা, রুবেল মিয়া ও বেলফোর্টদের ওপর। শুরু থেকে তারা প্রতিপক্ষের ওপর চড়াও হয়ে খেললেও গোল আসেনি প্রথমার্ধে। এই অর্ধে দুটি সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি তারা।
৩৫ মিনিটে বাঁ দিক দিয়ে বল নিয়ে একাধিক ডিফেন্ডারকে পেছনে ফেলে বক্সে ঢোকা জুয়েলের শট রুখতে এগিয়ে আসেন মুক্তিযোদ্ধা গোলকিপার। তার আগ মুহূর্তে হাইতির ফরোয়ার্ড বেলফোর্ট বলের নিয়ন্ত্রণ নেন, কিন্তু তার শট পোস্টের বাইরে দিয়ে যায়।
প্রথমার্ধের ইনজুরি সময়ে গোলকিপার ওমর ফারুক লিঙ্কনের দৃঢ়তায় পিছিয়ে পড়েনি মুক্তিযোদ্ধা। দক্ষিণ কোরিয়ান মিডফিল্ডার মিনহিয়োক কোয়ের শট ফেরালেও পুরোপুরি বিপদমুক্ত করতে পারেননি লিঙ্কন, কিন্তু বেলফোর্টের ফিরতি জোরালো শট রুখে দেন।
বিরতির পর আবাহনী একচেটিয়া আধিপত্য বিস্তার করে খেলে গোলের দেখা পায়। যদিও শুরুতেই সুযোগ নষ্ট করেছে তারা। ৫২ মিনিটে বাঁ দিক থেকে রুবেলের ফ্রি কিকে বেলফোর্ট হেড করার পর আতিকুর রহমান ফাহাদের হেড অল্পের জন্য ক্রসবারের ওপর দিয়ে যায়।
৬৪ মিনিটে বেলফোর্টের শট চলে যায় গোলকিপারের গ্রিপে। তবে জুয়েলের বদলি হিসেবে মাঠে নেমেই ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ করেন ফয়সাল। ৭৬ মিনিটে ডান প্রান্তে রুবেল মিয়ার আড়াআড়ি পাসে তিনি গোলমুখ খোলেন। পরের মিনিটে বাঁ প্রান্ত থেকে বেলফোর্টের ক্রসে লক্ষ্যভেদী হেডে দ্বিগুণ করেন তিনি ব্যবধান।
দ্বিতীয়ার্ধের ইনজুরি সময়ে মুক্তিযোদ্ধা পেনাল্টি থেকে ব্যবধান কমায়। ডিফেন্ডার টুটুল হোসেন বাদশা ফাউল করেন জাপানের মিডফিল্ডার ইউসুকে কাতোকে। কাতোই স্পট কিকে গোল করেন। শেষ কয়েক মিনিটে আর কোনও গোলে নাটকীয় ড্র আদায় করতে পারেনি তারা।
এই জয়ে ‘সি’ গ্রুপে ৩ পয়েন্ট নিয়ে দারুণ শুরু হলো আবাহনীর। তাই উচ্ছ্বসিত দলের নতুন কোচ ইজমারিও লেমোস, ‘প্রথম ম্যাচ জিতে ভালো লাগছে। আজই আমি এসেছি। দলকে সেরা অবস্থানে নিয়ে যাওয়াই আমার লক্ষ্য।’
জাতীয় দলের সাবেক কোচ অ্যান্ড্রু ওর্ডের অধীনে ফিটনেস কোচ ছিলেন লেমোস। সেই কারণে এই দলের খেলোয়াড়দের সম্পর্কে তার জানা-শোনা ভালো। এএফসি ‘এ’ লাইসেন্সধারী কোচ লেমোস জানালেন, ‘আমি আগেও এখানে কাজ করেছি। খেলোয়াড়দের সম্পর্কে ধারণা আছে। আশা করছি দলকে ভালো কিছু এনে দিতে পারবো।’