২০১৭ সালে এএফসি কাপে অতিথি খেলোয়াড় হয়ে আবাহনী লিমিটেডে খেলেছিলেন ইয়াসিন খান। এবার তো প্রথমবারের মতো ঘরোয়া ফুটবলে শুরু থেকে আকাশি-নীল জার্সিধারীদের রক্ষণ পাহাড়া দিচ্ছেন এই অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার। ৩০ বছর বয়সে ৬ কেজি ওজন কমিয়ে দুর্বার গতিতে রক্ষণ রেখেছেন অটুট।
এমনিতে আবাহনী এবার বিদেশি খেলোয়াড় নিতে পারেনি। স্থানীয়দের ওপর ভরসা। আর ডাগআউটে আছেন মারুফুল হকের মতো অভিজ্ঞ কোচ। সবার সম্মিলনে ঐতিহ্যবাহী দলটি একের পর এক বাধা পেরিয়ে যাচ্ছে। আজ তো ফেডারেশন কাপে কোয়ালিফায়ারে জায়গা করে নিয়েছে। আর এই জয়ের পেছনে অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার ইয়াসিনের অবদান কম নয়।
প্রতিপক্ষের গোলমুখ পেনাল্টি থেকে প্রথম উন্মুক্ত করেছেন বরিশাল থেকে আসা ফুটবলার। শুধু তাই নয়, প্রতিটি ম্যাচে নিজের কাজটি করে যাচ্ছেন সূচারুভাবে। ইয়াসিন-মুরাদ-কামরুলরা মিলে রক্ষণভাগ রেখেছেন অনেকটাই দুর্ভেদ্য। আর পেছনে তো আরেক দেয়াল মিতুল মারমা আছেনই।
বাংলা ট্রিবিউনকে নিজেকে নতুন করে দুর্বার করে গড়ে তোলার গল্পটা জানালেন ইয়াসিন। কুমিল্লা থেকে বাসে করে ক্লাব তাঁবুতে আসতে আসতে বললেন, ‘আসলে নিজের ওপর আত্মবিশ্বাস হারাইনি। এবার তো নতুন করে নিজেকে প্রমাণের জন্য ৬ কেজি ওজন কমিয়েছি। প্রতিটি ম্যাচেই শুরু থেকে খেলছি। নিজের দায়িত্বটা ঠিকঠাকভাবে পালন করার চেষ্টা করে যাচ্ছি।’
গতবার চট্টগ্রাম আবাহনীর হয়ে ইয়াসিন একই গতিতে খেলেছিলেন। এবার আবাহনীর হয়ে পারফরম্যান্স একট বেশি চোখে পড়ছে। ইয়াসিন এর রহস্য জানাতে গিয়ে বলেছেন, ‘এবার আমার পারফরম্যান্স বেশি চোখে পড়েছে। কারণ হলো আমাদের দলে কোনও বিদেশি নেই। সবাই দেশি খেলোয়াড়। জানপ্রাণ দিয়ে খেলছে। তাই পারফরম্যান্সটা সবার কাছে বেশি চোখে লাগছে। কোচসহ সবাই আমাদের দারুণভাবে উজ্জীবিত করে যাচ্ছে। তাই সবাই নিজেদের শতভাগ দেওয়ার চেষ্টা করছে। তাই তো আমরা একটি ছাড়া এখনও গোল হজম করিনি।’
২০২২ সালের নভেম্বরে শ্রীলঙ্কার চার জাতি টুর্নামেন্টের পর আর জাতীয় দলে খেলা হয়নি ডিফেন্ডার ইয়াসিনের। চোটের কারণে ঘরোয়া ফুটবলে এরপর ঠিকমতো মনোনিবেশ করা যায়নি। তবে দেড় বছর ধরে আগের মতো সাবলীল গতিতে খেললেও এখনও হাভিয়ের কাবরেরার দৃষ্টি কাড়তে পারেননি।
৩০ বছর বয়সে নতুন করে এখন কোচের দুয়ারে কড়া নাড়তেই পারেন ইয়াসিন, ‘দেখুন কোচ কেন আমাকে ডাকেনি তা আমি জানি না। তবে আমার মনে হয় জাতীয় দলে যার যার যা পজিশন, তা অনুযায়ী খেলানো উচিত। সেন্টার ব্যাককে লেফট কিংবা রাইট ব্যাকে খেলানো উচিত নয়। খেলোয়াড় তো আমাদের আছেই। এবার আগের চেয়ে পারফরম্যান্স ভালো হচ্ছে। যদি কোচ আমাকে ডাকে তাহলে খেলতে আপত্তি নেই। জাতীয় দলের হয়ে কে না খেলতে চায়। এছাড়া আমার বয়সী তপু-সোহেল রানারা তো লাল-সবুজ দলে খেলছেই।’
২০১৪ থেকে ২০২০ সাল- টানা জাতীয় দলে খেলেছেন ইয়াসিন। তার জায়গায় তপু বর্মণ-হাসান মুরাদ-শাকিল-তারিক কাজী রয়েছেন। তাদের সঙ্গে লড়াই করে নিজেকে নতুন করে লাল-সবুজ দলের কান্ডারি হিসেবে আবির্ভূত হতে চাইছেন দীর্ঘদেহী ডিফেন্ডার।