X
রবিবার, ১৬ মার্চ ২০২৫
২ চৈত্র ১৪৩১

বাংলাদেশ দলে সেই ‘নিষিদ্ধ’ আল আমিন, বাবা বিলিয়েছেন মিষ্টি

তানজীম আহমেদ
১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১১:০০আপডেট : ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৮:১৩

সেই দিনগুলো এখনও ভুলতে পারেননি আল আমিন। আরামবাগ ক্রীড়া সংঘ পাতানো ম্যাচের দায়ে নিষিদ্ধ হয়েছিল, পাশাপাশি আল আমিনসহ অন্যদেরও এই অভিযোগে নাম উঠে আসে। ২০১৯-২০২০ মৌসুমে তিন বছরের জন্য নিষিদ্ধ হওয়ায় নীলফামারীর এই ছেলে তখনই ক্যারিয়ারের শেষ দেখছিলেন। কিন্তু যশোরের শামসুল হুদা অ্যাকাডেমির পরিচর্যায় এক বছর পেরোতে না পেরোতে এই ফরোয়ার্ড ফুটবলে টিকে রইলেন। আপিল করে শাস্তি কমিয়ে এক বছর পরই নামলেন পেশাদার লিগে। চার বছরের মাথায় আল আমিন এখন বাংলাদেশ জাতীয় দলে জায়গা করে নিয়ে সবাইকে চমকেও দিয়েছেন।

রবিবার সন্ধ্যায় পুলিশ এফসির হয়ে অনুশীলন করে এসে এক সংবাদকর্মীর কাছে নিজের জাতীয় দলে জায়গা করে নেওয়ার খবরটি প্রথম শুনতে পান। তারপর খোঁজ নিয়ে সত্যতা মিলে গেলে আনন্দে আত্মহারা ২১ বছর বয়সী এই ফুটবলার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এমন দিনটির জন্য অপেক্ষায় ছিলাম। জাতীয় দলে খেলতে কে না চায়। আমি কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছি। হয়তো সেই ফল পেয়েছি। আমিসহ আমার পুরো পরিবার বেশ খুশি।’

আল আমিনের বাবা আমিনুর রহমান ছেলের জাতীয় দলে ডাক পাওয়ার খবর শুনে গ্রামে মিষ্টি বিলিয়েছেন। আমিনুর রহমান নিজেও গ্রামে ফুটবল খেলেন। রিকশা চালানোর পাশাপাশি সুযোগ পেলে সতীর্থদের সঙ্গে ফুটবল নিয়ে মেতে ওঠেন। বাবাই আল আমিনের বড় প্রেরণা। আল আমিন বলেন, ‘বাবা ও মাসহ পরিবারের সবাই অনেক খুশি হয়েছেন। বাবা আমাদের গ্রামে খুশি হয়ে মিষ্টি বিলিয়েছেন। বাবার ফুটবল সেন্স বেশ ভালো। তিনি সবসময় চাইতেন আমি যেন জাতীয় দলে খেলি। অনুপ্রেরণা দিতেন। শুরুতে ২৩ নম্বর জার্সি পরে খেলি, বাবা বলতেন ৯ কিংবা ১০নং জার্সি পরে খেলতে। মানে স্ট্রাইকার পজিশন বাবার বেশি পছন্দ। আরও বলতেন, আকর্ষণ এই পজিশনে নাকি বেশি। এরপর তো এখন ফরোয়ার্ড পজিশনে খেলে তার স্বপ্ন আপাতত পূরণ হয়েছে।’

অথচ আল আমিনের ক্যারিয়ার একসময়  শেষ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল। পাতানো ম্যাচের দায়ে নিষিদ্ধ হয়েছিলেন। এখন ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় ঘুরে দাঁড়াতে সময় লাগেনি। বিভীষিকাময় সেই দিনের কথা মনে করে আল আমিন জানালেন, ‘আমি কোনোভাবেই জড়িত ছিলাম না। আমাকে ফাঁসানো হয়েছিল। অনেক কষ্ট পেয়েছিলাম সেবার। ধরে নিয়েছিলাম ক্যারিয়ার শেষ। মা তো আমার নিষিদ্ধের কথা শুনে অজ্ঞান হয়ে পড়েছিল। তবে কিছু দিনের মধ্যে ফুটবলে আবার ফিরে আসি, অনুশীলন করতে থাকি। শামসুল হুদা অ্যাকাডেমি না থাকলে হয়তো আজ এই পর্যন্ত আসতে পারতাম না।’

এবার লিগ ও ফেডারেশন কাপ মিলিয়ে ৯ গোল আল আমিনের। স্থানীয় খেলোয়াড়দের মধ্যে সর্বোচ্চ। তার বড় গুণ ‘ডি’ বক্সে গিয়ে ঠান্ডা মাথায় ফিনিশিংটা করতে পারেন। যেকোনও পজিশন থেকে গোল করতে সিদ্ধহস্ত। তাই আল আমিনের পছন্দ ‘নম্বর নাইন’ পজিশনটি, ‘আমি উইং কিংবা অন্য যেকোনও পজিশনে খেলতে পারি। তবে আমার সেরা পছন্দ হলো নম্বর নাইন পজিশন। আমি মনে করি ওই পজিশনে শুরু থেকে খেলতে পারলে গোল করতে পারবো। আমি ভয় পাই না। বল পেলে প্রতিপক্ষের জালে একবার হলেও জড়াতে পারবো।’

স্প্যানিশ কোচ হাভিয়ের কাবরেরার দৃষ্টি কাড়া আল আমিন এখন চূড়ান্ত দলে জায়গা পেতে চাইছেন। সেজন্য অনুশীলনে নিজেকে কঠোর পরিশ্রমে ব্যস্ত রাখার পণ করেছেন। এখন শুধুই অপেক্ষা...!

/এফআইআর/এমওএফ/
সম্পর্কিত
এক শহরেই জামাল-ছেত্রীদের সাফ!
অনুশীলনের বিরতিতে জামাল ভূঁইয়াদের ওমরাহ পালন
সৌদি আরবের পথে বাংলাদেশ
সর্বশেষ খবর
মায়ের হারানো ব্যাগ ফিরিয়ে দিয়ে শিশুসন্তান চুরি
মায়ের হারানো ব্যাগ ফিরিয়ে দিয়ে শিশুসন্তান চুরি
ঢাকা ছাড়লেন জাতিসংঘ মহাসচিব
ঢাকা ছাড়লেন জাতিসংঘ মহাসচিব
ওসির বিরুদ্ধে ডেভিল হান্টের ভয় দেখিয়ে ঘুষ আদায়ের অভিযোগ
ওসির বিরুদ্ধে ডেভিল হান্টের ভয় দেখিয়ে ঘুষ আদায়ের অভিযোগ
যুক্তরাষ্ট্রে টর্নেডোর তাণ্ডবে নিহত ৩৪
যুক্তরাষ্ট্রে টর্নেডোর তাণ্ডবে নিহত ৩৪
সর্বাধিক পঠিত
ছাত্রলীগের বিদ্রোহী অংশ বের না হলে আন্দোলন কঠিন হতো: নাহিদ ইসলাম
ছাত্রলীগের বিদ্রোহী অংশ বের না হলে আন্দোলন কঠিন হতো: নাহিদ ইসলাম
জামায়াতের ইফতারে যারা অংশ নিলেন
জামায়াতের ইফতারে যারা অংশ নিলেন
ডিবি হেফাজতে ‘শীর্ষ সন্ত্রাসী’ এজাজের মৃত্যুর অভিযোগ, পুলিশের অস্বীকার
ডিবি হেফাজতে ‘শীর্ষ সন্ত্রাসী’ এজাজের মৃত্যুর অভিযোগ, পুলিশের অস্বীকার
আমাদের কথা শোনা বন্ধের পরই বিএনপির পতন শুরু, ড. ইউনূসকে রক্ত দিয়ে নির্বাচিত করা হয়েছে
যশোরে ফরহাদ মজহারআমাদের কথা শোনা বন্ধের পরই বিএনপির পতন শুরু, ড. ইউনূসকে রক্ত দিয়ে নির্বাচিত করা হয়েছে
মাগুরার সেই শিশুর বোনের শ্বশুরের দায় স্বীকার
মাগুরার সেই শিশুর বোনের শ্বশুরের দায় স্বীকার