বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর হয়ে ফুটবল খেলেছেন। ২০১৪ সালে সেই চাকরি ছেড়ে পুরোদস্তুর পেশাদার ফুটবলার বনে যান আশরাফুল ইসলাম রানা। প্রায় এক যুগ পেশাদার লিগ ও জাতীয় দলে সুনামের সঙ্গে খেলে শুক্রবার বুট জোড়া তুলে রাখতে যাচ্ছেন ৩৮ বছর বয়সী গোলকিপার।
চলতি মৌসুমেও দুর্দান্ত খেলেছেন রানা। ফেডারেশন কাপ ও লিগ মিলিয়ে তিন বার হয়েছেন ম্যাচ সেরা। ফর্ম ও ফিটনেস থাকতেও বিদায় কেন? ব্রাদার্সের হয়ে অনুশীলনের ফাঁকে রানার উত্তর, ‘আপনাদের দোয়া ও টিমমেটদের সহায়তায় এই মৌসুমটি ভালোই কেটেছে। এরপরও এখনই ফুটবল ছাড়ার সেরা সময় মনে করছি। তাই আগামীকাল ব্রাদার্সের হয়ে মোহমেডানের বিপক্ষে আমার ফুটবলার হিসেবে শেষ ম্যাচের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে আগামীকালই অবসরের ক্ষণ বেছে নেওয়ার কারণ জানাতে ফিরে গেলেন পেছনের দিকে, ‘২০১৪ সালে মোহামেডান স্পোর্টিংয়ের হয়ে আমার ফুটবল ক্যারিয়ার শুরু। শেষ ম্যাচটা মোহামেডানের সঙ্গেই খেলতে চাই। আবার মোহামেডান এবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। তাই মোহামেডানের ম্যাচ দিয়েই ইতি টানছি ক্যারিয়ারের।’
রানা ২০২৩ সাল থেকে জাতীয় দলে ব্রাত্য। তবে লাল সবুজ দল থেকে অবসর নেওয়া হয়নি। এখন মাঠের সব খেলা থেকে বিদায় নিতে যাচ্ছেন, ‘২০২৩ সাল পর্যন্ত জাতীয় দলে ডাক পেতাম। যদিও সেই সময় জিকোই খেলেছে। তখন মনে হয়েছিল জাতীয় দল থেকে আনুষ্ঠানিক অবসরের ঘোষণা দেই। যাতে নতুনরা সুযোগ পায়। কোচকে বলেছিলাম কিন্তু সেই সুযোগটা হয়ে উঠেনি। এ নিয়ে খানিকটা আক্ষেপ রয়েছে তাই ক্লাব পর্যায়েই আনুষ্ঠানিকভাবে (বিদায়) নিচ্ছি।’
জাতীয় দলের হয়ে খেলেছেন ত্রিশ ম্যাচ। ক্লাব ক্যারিয়ারে তার অর্ধ যুগ কেটেছে শেখ রাসেলে। চট্টগ্রাম আবাহনীতে খেলেছেন চার মৌসুম। প্রায় এক যুগ পেশাদার ফুটবল ক্যারিয়ারে সবচেয়ে দুঃখজনক ও সুখকর স্মৃতি নিয়ে বলেন, ‘২০১৯ সালে কলকাতার সল্টলেকে ৬০ হাজার ভারতীয় দর্শকের সামনে বাংলাদেশের ড্র এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে আমার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে সুখের স্মৃতি। আর সবচেয়ে কষ্টের ২০১৬ সালে ভুটানে এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের প্লে অফে হেরে যাওয়া। সেই হারের পর বাংলাদেশ ১৪ মাসের বেশি ফুটবলের বাইরে ছিল। যার প্রভাবে র্যাঙ্কিং অনেক পিছিয়ে ১৮০ তে চলে যায়।’
মাঠের খেলা ছাড়লেও ফুটবল থেকে দূরে সরে যাচ্ছেন না রানা, ‘আমি ইতোমধ্যে বি লাইসেন্স কোচিং কোর্স করেছি। গোলকিপিং কোর্সও করবো। সামনে হয়তো কোনও পর্যায়ে কোচিং করাতে পারি। সাবেক জাতীয় ফুটবলার হিসেবে অবশ্যই স্বপ্ন দেখি একদিন জাতীয় দলের গোলকিপিং কোচ হবো।’