এশিয়ান কাপ বাছাই পর্বে দ্বিতীয় ম্যাচে সিঙ্গাপুরের কাছে ২-১ গোলে হেরেছে বাংলাদেশ। দুই গোলে পিছিয়ে পড়ার পর আশা জাগিয়েও ম্যাচ জেতা হয়নি। ম্যাচ শেষে বাংলাদেশ কোচ হাভিয়ের কাবরেরা হতাশার কথাই শেনালেন।
স্প্যানিশ কোচ বলেছেন, ‘কঠিন ফল পেলাম, এটা হতেই পারে। তবে নিশ্চিতভাবেই এই ফল প্রত্যাশা করিনি আমরা। আমরা যেভাবে চেয়েছিলাম, ম্যাচও সেভাবেই শুরু হয়েছিল। খুবই প্রাণশক্তিতে ভরপুর হয়ে, উপরে প্রেসিং করে খেলছিলাম। এরপর আমরা কিছু ভুল করলাম। পরে দুর্বল হয়ে গেলাম, চাপে পড়ে গেলাম। সংগ্রাম করতে হলো আমাদের। যে গোলটা আমরা হজম করলাম, সেটা এড়াতে পারতাম।’
এরপর কাবরেরা যোগ করলেন, ‘দ্বিতীয়ার্ধেও গোল খেলাম। তবে আমি মনে করি, দ্বিতীয়ার্ধের খেলায় আমাদের গর্বিত হওয়া উচিত। আমরা সাহসী ছিলাম। সুযোগ তৈরি করেছিলাম। ফল নিয়ে আমি হতাশ। তবে আমি মনে করি, আমরা ভালো ম্যাচ খেলেছি। তা সত্ত্বেও হেরেছি এবং আমাদের সেটা মেনে নিতে হবে।’
আক্ষেপ নিয়ে স্প্যানিশ কোচ জানালেন, ‘এনার্জি কমে যাওয়ার কারণ আমার মনে হয়, আমরা চাপের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারিনি। কিছু সময় সিঙ্গাপুর আমাদের ওপর যথেষ্ট আধিপত্য করেছে। আমরা তাদের মতো মানসম্পন্ন দলের বিপক্ষে সবসময় একইভাবে মানিয়ে নিয়ে খেলতে পারিনি। এটা আমাদের মেনে নিতে হবে। দ্বিতীয়ার্ধে আপনারাও দেখেছেন, আমরা আরও বেশি জমাট ছিলাম। তুলনামূলকভাবে প্রথমার্ধের চেয়ে ভালো ছিলাম। ঘুরে দাঁড়ানো গোলও পেলাম, কিন্তু সমতায় ফিরতে পারলাম না।’
রাকিব আজও নম্বর নাইন পজিশনে খেলেছেন। গোলও পেয়েছেন। কাবরেরা তাই প্রশংসা করলেন তার, ‘রাকিব আমার কাছে সেরা স্ট্রাইকার। আমার কাছে বক্সে সে সেরা। বক্সে তার যে সামর্থ্য, আমি মনে করি, আপনি তার সঙ্গে অন্য কারও তুলনা করতে পারেন না। আজ অন্য ফরোয়ার্ডদের বেলায়ও একই ঘটনা ঘটেছে। বিশেষ করে রাকিবের মতো স্ট্রাইকার প্রতিপক্ষের জন্য কাজগুলো কঠিন করে তুলতে পারে, তবে এই মানের দল যখন ডিফেন্স করে নিচে নেমে, তখন কাজটা যে কারও জন্য কঠিন হয়ে যায়।’
দ্বিতীয়ার্ধে ফয়সাল আহমেদ ফাহিমকে বাজে ট্যাকল করলেও ফিলিপাইনের রেফারির চোখ এড়িয়ে গেছে। যদিও কোচ বলেছেন, ‘আমি মনে করি, তার (ফাহিম) হতাশা ছিল রেফারির বিরুদ্ধে। দলের প্রতি তার হতাশা ছিল না। যদি আপনারা ম্যাচের পরফরম্যান্স দেখেন, তাহলে আমি মনে করি ২-২ ড্র হতো ন্যায্য ফল। আমি জানি, সবার প্রত্যাশা ছিল অনেক বেশি, কিন্তু সেটা হয়নি। তাদের অক্রমণভাগে ভালো খেলোয়াড় আছে। তাদের সামর্থ্য আছে।’
এরপর আরও পরিষ্কার করে কাবরেরা বলেছেন, ‘ওই বিষয়টা আমাকে আবারও দেখতে হবে। বিশেষ করে, ফাহিমের ওই বিষয়টা আমি দেখিনি। তবে আমার কাছে মনে হয় এটা পরিষ্কার, ওই সময়ে আমরা যেভাবে খেলছিলাম, পুরোদমে আক্রমণ করছিলাম, আমি যদি ভুল না বলে থাকি, ২-২ হতে পারতো ওই সিদ্ধান্ত পক্ষে এলে। তবে আমি পরিষ্কারভাবে সেটা দেখিনি।’
হামজা-শমিতের পারফরম্যান্স নিয়ে বাংলাদেশ কোচ বলেছেন, ‘শিলংয়ের চেয়ে এই ম্যাচটা ম্যানেজ করা আমাদের জন্য বেশি কঠিন ছিল। ইন্ডিয়া ওয়ার হাইয়ার, আমাদের স্পেস দিয়েছিল, কিন্তু এই ম্যাচের পরিস্থিতি ছিল ভিন্ন। হয়তো সে কারণে হামজার জন্য কাজগুলো কঠিন ছিল। সে এনার্জেটিক ছিল, কিন্তু তারা ভালো খেলেছে। শমিত প্রথমার্ধে একটু অস্বাচ্ছন্দ্য ছিল, কিন্তু আমি মনে করি, তারা ভালো খেলেছে। ফাহামিদুল তার সেরা চেষ্টা করেছে। ভুটানের চেয়ে সিঙ্গাপুর শক্তিশালী দল। প্রথম ম্যাচে সে ভালো করেছিল। এ ম্যাচেও সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে।’
