এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে বাংলাদেশ নারী দলের বড় পরীক্ষা হতে যাচ্ছে। স্বাগতিক মায়ানমার, বাহরাইন ও তুর্কমেনিস্তানকে টপকে শীর্ষে যেতে পারলেই মিলবে মূল পর্বে খেলার সুযোগ। এই চ্যালেঞ্জিং মিশনে নিজেদের আন্ডারডগ মনে করছেন বাংলাদেশ কোচ পিটার বাটলার।
রাতে ঢাকা ছাড়ার আগে বাফুফে ভবনে সংবাদ সম্মেলনে ব্রিটিশ কোচ বলেছেন, 'আত্মবিশ্বাস ও অহংকারের মধ্যে একটি পার্থক্য আছে। খেলোয়াড়দের মধ্যে অহংকার থাকা ভালো, যতক্ষণ না সেটা সীমা ছাড়িয়ে যায়। কোচ হিসেবে সেটা নিয়ন্ত্রণ করা আমার দায়িত্ব।'
তারপরই মাটিতে পা রাখার আভাস দিলেন তিনি, 'তিনটি ম্যাচের দিকে তাকালে মনে হবে, হ্যাঁ আমরা আন্ডারডগ। আমি সঠিক জায়গায় সঠিক খেলোয়াড়কে রাখতে পছন্দ করি। সবাই যদি নিজেদের সেরা খেলাটা দিতে পারে...।'
বাংলাদেশ দল আগের চেয়ে উন্নতি করেছে। সেটা তুলে ধরে বাটলার বললেন, 'আমি তৎক্ষণাৎ কৌশল বদলানোয় বিশ্বাসী। ৯০ মিনিটে দুই তিনবার ফরমেশন বদলে খেলে থাকি। র্যাঙ্কিংয়ের ওপরে থাকা দল ও শক্তিশালী দলের বিপক্ষে খেলতে গেলে সেভাবে মানিয়ে নেওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ। মনে রাখতে হবে আমরা অনেক উন্নতি করেছি। বল দখলে রাখার ক্ষেত্রেও উন্নতি হয়েছে। কিছু জায়গায় হয়তো আমরা বাকি দলগুলোর চেয়ে অতটা শক্তিশালী নই।'
সামনের দিকে দৃষ্টি রেখে বাটলারের অভিমত, 'অতীতে ফিরে তাকাতে ক্ষতি নেই। কিন্তু পেছনে না তাকিয়ে সামনে তাকানোই গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের বাস্তববাদী হতে হবে। জর্ডান ও ইন্দোনেশিয়ার বিপক্ষে দেখিয়েছি আমরা বড় দলের বিপক্ষে খেলতে পারি। তবে সেটা এখন অতীত। এখন পরিকল্পনামাফিক সামনে এগোতে হবে।'
প্রথম ম্যাচে প্রতিপক্ষ বাহরাইন। কোচ আগে থেকে সাবধানী, 'বাহরাইনকে নিয়ে ভিডিও অ্যানালাইসিস করেছি। আমি জানি তারা কীভাবে খেলে। তারা শারীরিকভাবে খুব শক্তিশালী। আক্রমণে একসঙ্গে অনেক খেলোয়াড় উঠে, রক্ষণেও তাদের বেশ গভীরতা আছে। তাই রেফারির বাঁশি বাজার আগপর্যন্ত দল কেমন হবে তা বলা যাচ্ছে না।'
মায়ানমারে আগে কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে কোচের। স্মৃতি রোমন্থন করে বলেছেন, 'আমি ইয়াঙ্গুনে একটি ক্লাবকে গড়ে তুলেছি। শুধু তাই নয়, একাডেমিতেও কাজ করেছি। আমার মনে হয় না কন্ডিশন এখান থেকে খুব একটা আলাদা হবে। কিন্তু অনুশীলনের সুযোগ সুবিধা নিয়ে আমার দুশ্চিন্তা আছে। তবে সবার জন্য তা একই থাকবে। তাই ছোটখাট বিষয় নিয়ে উদ্বিগ্ন না হয়ে ইতিবাচক মনোভাব রাখতে চাই।'
বাটলার বলে গেলেন, 'ফুটবল মানেই হচ্ছে সঠিক সময়ে সঠিক সুযোগ কাজে লাগানো। যদি আপনি সুযোগগুলো কাজে না লাগান, তাহলে আপনি ম্যাচ জিততে পারবেন না।'
বাটলার প্রায়ই সুযোগ সুবিধা নিয়ে কথা বলেন। এবার এ নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই তার কথা, 'গুজব সব সময়ই থাকবে, বিশেষ করে যখন দল ভালো করছে। আমরা সবাই ভালো সুযোগ-সুবিধা পছন্দ করি। খেলাধুলার দিক থেকে বাংলাদেশ কিছুটা পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। দুটো নতুন মাঠ তৈরি হচ্ছে। ব্যক্তিগত ব্যাপারটা ব্যক্তিগতই থাকুক। বিশেষ করে বড় টুর্নামেন্টের আগে সেটা নিয়ে কথা বলতে চাই না।'
এরপরই যোগ করেন, 'আমি অবশ্যই ভালো সুযোগ সুবিধা চাই। তবে আমি পরিস্থিতি ও বাস্তবতাও বুঝি।'