তিন দিনের তীব্র তাপপ্রবাহে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে জনজীবন। গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা। শনিবারের (১০ মে) মতো আজও (১১ মে) প্রায় একই আছে তাপমাত্রা। তবে সুসংবাদ দিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর। তারা জানিয়েছে, আগামীকাল (১২ মে) থেকে তাপমাত্রা কমতে শুরু করবে। কিছু কিছু এলাকায় অল্প অল্প বৃষ্টিও হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর।
আজ রবিবার ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছে ৩৯ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা গতকাল শনিবার ছিল ৪০ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এটি এই মৌসুমে ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। শুক্রবার ছিল ৩৯ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অন্যদিকে, আজ দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায় ৪১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা গতকাল শনিবার ছিল ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, শুক্রবার ছিল ৪১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর বাইরে কিছু এলাকায় তাপমাত্রা ৪০-এর ওপরে আছে। আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী এই তাপপ্রবাহ আরও একদিন অব্যাহত থাকতে পারে।
এদিকে ঢাকা ও চুয়াডাঙ্গা ছাড়াও দেশের কিছু জেলার তাপমাত্রা আজ ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস উঠেছে। এর মধ্যে যশোরে আজ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪০ দশমিক ২, যা শনিবারও একই ছিল। রাজশাহীতে আজ ৪০ দশমিক ৮, যা গতকাল ছিল ৪০ দশমিক ৭, ঈশ্বরদীতে আজ ৪০, যা গতকাল ছিল ৩৯ দশমিক ৯, বাঘাবাড়িতে আজ ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা গতকালও একই ছিল।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার আবহাওয়া অফিস জানিয়েছিল, শুক্রবার থেকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে দেশের কোথাও কোথাও তীব্র তাপপ্রবাহ থাকতে পারে। তারই ধারাবাহিকতায় রবিবার পর্যন্ত তীব্র তাপপ্রবাহ বইছে দেশের অনেক অঞ্চলে। তবে সোমবার থেকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদ শাহনাজ সুলতানা। তিনি জানান, আজও দেশের বেশ কয়েকটি অঞ্চলে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসর ওপরে। তবে গতকালের তুলনায় কিছুটা কমে এসেছে। এই তাপমাত্রা আগামীকাল আরও কিছুটা কমে আসতে পারে। সোমবার থেকে কিছু এলাকায় বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। এর মধ্যে রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের দুই এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
এই গরমে সবচেয়ে বেশি কষ্টে আছে শ্রমজীবী মানুষ। তাপপ্রবাহের তিন দিনই ছুটি থাকায় সরকারি বেসরকারি অফিস, আদালত, স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় তাদের ভোগান্তি কিছুটা কম ছিল। কিন্তু খেটে খাওয়া মানুষগুলোর প্রতিদিনই কাজে নামতে হয়। বিশেষ করে রিকশাচালক, বাসাবাড়িতে কাজ করতে আসা গৃহকর্মীদের কষ্ট হচ্ছে অপরিসীম।
ভরদুপুরে শান্তিনগর মোড়ে গরমে ক্লান্ত হয়ে যাওয়া আব্দুস সালাম বলেন, ‘আজ আর রিকশা চালানোর অবস্থা নাই। এক বেলা রিকশা বের করেই জান বের হয়ে যাচ্ছে।’
একই কথা বলেন আশপাশে ক্লান্ত হয়ে ছায়ার বসে থাকা রিকশাচালকরা।