X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১

কিভাবে বাংলাদেশকে উপস্থাপন করতে হবে?

নাদীম কাদির
২০ মার্চ ২০১৭, ১২:৩৯আপডেট : ২০ মার্চ ২০১৭, ১২:৪২

নাদীম কাদির প্যারিসে ধারাবাহিক সন্ত্রাসী হামলার পরও সেখানে পর্যটকের অভাব নেই। গ্রীষ্মকাল আসলেই পর্যটকরা এ স্বপ্নের শহরে দলে দলে ভীড় জমান। যখন তারা ফিরে যান তখন তাদের ব্যাগ থাকে বিভিন্ন সুভিনিয়ারে ভরপুর।
কোনও দেশ যদি বিদেশের মাটিতে নিজেকে আকর্ষণীয় হিসেবে উপস্থাপন করতে চায় তবে তাকে পর্যটকদের ওপর স্থায়ী আবেগ তৈরি করতে হবে। তারা তখন নিজ দেশে ফিরে বন্ধুদের কাছে সেইসব বার্তা পৌঁছে দেবেন। আর তাতে পর্যটক বাড়বে এবং বাড়তি আয় হবে।
আড়ং কিংবা যাত্রার মতো হাতে গোনা কয়েকটি বুটিক ছাড়া পর্যটকদের আকর্ষণ করার মতো বাংলাদেশে উল্লেখযোগ্য কিছু নেই। এর মানে এ নয় যে আমাদের উপস্থাপন করার মতো কোনও কিছু নেই, কিন্তু আমাদের কল্পনাপ্রবণ ধারণার ঘাটতি আছে।
ফরাসি নাগরিক ইভ মারের কথা মনে পড়ছে আমার, যিনি আমাদের বন্ধু রুনাকে বিয়ে করেছিলেন। রুনা নিজেও একটি এনজিও পরিচালনা করেন। 
বাংলাদেশে পৌঁছানোর পর আমি টিভিতে ইভ মারের একটি সাক্ষাৎকার নিয়েছিলাম। তখন আমি জানতে পেরেছিলাম তিনি বাংলাদেশের সুন্দর সুন্দর নৌকাগুলোর ছোট সংস্করণ তৈরি করছেন। তা দেখে আমি ওই কাজের প্রেমে পড়ে গেলাম এবং শেষ পর্যন্ত আমার বন্ধু ফরিদ খানের কাছ থেকে একটি উপহার পেলাম। ফরিদের সংগ্রহে বেশ কয়েকটি ছিল, কিন্তু আমাদের অনেকের কাছে তা ব্যয়বহুল ছিল। পরে আমি প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে এরকম বেশ কয়েকটি নৌকা সাজানো থাকতে দেখেছি। সেগুলো ওই বাড়িতে বাড়তি সৌন্দর্য্য যোগ করেছিল।
আমি জানি কূটনৈতিক ক্ষেত্রে এবং অভিনব শিল্পের অভিজাত বাজারগুলোতে এটি ভালোভাবে সমাদৃত হয়েছে। কিন্তু তা সাধারণ আউটলেটগুলোতে কেন পাওয়া যায় না যেখান থেকে পর্যটকরা তাদের জন্য অর্ডার করতে পারেন? আমাদের উচিত সাশ্রয়ী বিভিন্ন আকারের নৌকা তৈরি করা। ছোট নৌকা দিয়ে চাবির রিং কিংবা যেকোনও কিছু তৈরি করা যেতে পারে। ইভ তা নিয়ে একটু ভাবতে পারেন।
প্রত্যেকটি দেশেরই নিজেকে আন্তর্জাতিক বাজারে উপস্থাপনের জন্য নিজস্ব সামগ্রী রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ শামুক-ঝিনুকের কথা বলা যায়। আপনারা দেখবেন, পূর্ব থেকে পশ্চিম প্রত্যেকটি দেশেরই শিল্পকর্ম কিংবা সুভিনিয়ারের মধ্য দিয়ে নিজেদের উপস্থাপনের নিজস্ব উপায় আছে।
সুইজারল্যান্ডে গরু এবং গরুর গলার ঘণ্টাকে খুব সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা হয়। এতো সুন্দর করে তার প্রচার চালানো হয় যে নিজের বাড়ি কিংবা অফিসে বাড়তি রঙ যোগ করতে আপনারও তা কিনতে ইচ্ছে করবে। সব ধরনের টুপিতে দেশের রঙ লাল ও সাদা দিয়ে চিহ্ণ দেওয়া থাকে।

প্যারিসে ফটো ফ্রেম থেকে শুরু করে চাবির রিং পর্যন্ত বিভিন্নভাবে আইফেল টাওয়ারকে উপস্থাপন করা হয়।

বাংলাদেশের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যেসব ছবি বিভিন্নভাবে ব্যবহৃত হয়েছে সেগুলো সুভিনিয়ার করা যেতে পারে। এর মধ্য দিয়ে এ মহান নেতা সম্পর্কে বিশ্ব জানবে। একইরকম করে মুক্তিযোদ্ধা স্মারক কিংবা ভাষা শহীদ স্মারকও হতে পারে।

কক্সবাজার, বান্দরবান এবং সুন্দরবনকে আকর্ষণীয় করে উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে বিশ্ব জানবে বাংলাদেশের কী আছে। পাশাপাশি এর মধ্য দিয়ে বিদেশি মুদ্রাও আয় করা যেতে পারে। উদ্ভাবনী ক্ষমতা থাকলে মসজিদ, মন্দিরের মতো আমাদের ঐতিহাসিক নিদর্শনগুলোকেও আকর্ষণীয় করে উপস্থাপন করা যেতে পারে।

বাংলাদেশের সৌন্দর্যকে নতুন নতুন রূপে তুলে ধরার জন্য ঢাকার আজিজ সুপারমার্কেটে টি-শার্টের পাশাপাশি পোলো শার্টও তৈরি করা যেতে পারে।

আমি আশা করি, সব কিছু নিয়ে সরকারই কেবল মাথা ঘামাবে না, তরুণ উদ্যোক্তারাও ব্যবসা এবং দেশপ্রেমের স্বার্থে তা নিয়ে ভাববে।

লেখক: সাংবাদিকতায় জাতিসংঘের ড্যাগ হ্যামারসোল্ড স্কলার এবং লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনের প্রেস মিনিস্টার 

 

*** প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব।

বাংলা ট্রিবিউনের সর্বশেষ
ব্রাজিলের জার্সিতে এই বছরই শেষ মার্তার
ব্রাজিলের জার্সিতে এই বছরই শেষ মার্তার
৩ মে ঢাকাসহ সারা দেশে বিক্ষোভ ডেকেছে ইসলামী আন্দোলন
৩ মে ঢাকাসহ সারা দেশে বিক্ষোভ ডেকেছে ইসলামী আন্দোলন
ইসলামী ব্যাংকের নোয়াখালী জোনের কর্মকর্তা সম্মেলন
ইসলামী ব্যাংকের নোয়াখালী জোনের কর্মকর্তা সম্মেলন
ওলামা দলের আংশিক কমিটি দিয়েছে বিএনপি
ওলামা দলের আংশিক কমিটি দিয়েছে বিএনপি
সর্বশেষসর্বাধিক

লাইভ