চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি বেসরকারিভাবেও সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল। তিনি বলেন, টেকসই উন্নয়নের চাবিকাঠি হলো বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি। এই দুই অনুষঙ্গকে যত বেশি কাজে লাগানো যাবে, ততই চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা সহজ হবে।
শনিবার (১৯ ডিসেম্বর) থেকে শুরু হওয়া টেকসই উন্নয়নে কৌশল নির্ধারণের অংশ হিসেবে গ্রিন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের ‘সাসটেইনেবল টেকনোলজিস ফর ইন্ডাস্ট্রি (এসটিআই) ৪.০’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. গোলাম সামদানী ফকিরের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন গ্রিন ইউনিভার্সিটির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. ফায়জুর রহমান প্রমুখ। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির অংশ নেওয়ার কথা থাকলেও অসুস্থতার কারণে তিনি শেষ পর্যন্ত উপস্থিত হতে পারেননি।
অনুষ্ঠানে গ্রিন ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. গোলাম সামদানী ফকির বলেন, করোনাকালে বিশ্বের যেসব খাত সবচেয়ে বেশি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে, তার অন্যতম হলো শিক্ষা। যদিও লকডাউনের শুরু থেকেই অনলাইন শিক্ষার সব সেবা নিশ্চিত করে শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়িয়েছে গ্রিন ইউনিভার্সিটি। তিনি বলেন, গ্রিন ইউনিভার্সিটি ব্লেন্ডিং শিখন প্রক্রিয়ার পথে হাঁটছে, যেখানে ক্যাম্পাসে সরাসরির পাশাপাশি অনলাইন শিক্ষাও সমানভাবে গুরুত্ব পাবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদ আয়োজিত দুই দিনব্যাপী এ সম্মেলনে সরাসরি অংশগ্রহণের পাশাপাশি বিশ্বের ২৯টি দেশের কয়েকশ’ শিক্ষক-গবেষক অংশ নেন।
সম্মেলনের জেনারেল চেয়ার ও গ্রিন ইউনিভার্সিটির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক জানান, এসটিআই-২০২০ সম্মেলনের উদ্দেশ্য হলো গবেষক ও অভিজ্ঞতাবাদীদের মধ্যে সম্পর্ক তৈরি করা, যা কাজে লাগিয়ে টেকসই প্রযুক্তি ৪.০ উন্নয়নে আরও এগিয়ে যেতে হবে।
তিনি বলেন, যেহেতু আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশে জোর দিয়েছি, তাই এটাকে সামনে রেখে প্রযুক্তিগত দক্ষতা বাড়ালেই চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করা সহজ হবে।
সম্মেলনে গবেষণাপত্র উপস্থাপন ছাড়াও নতুন আইডিয়া তৈরি এবং সাসটেইনেবল টেকলোজির চ্যালেঞ্জ গ্রহণ ও তা বাস্তবায়নের উপায় সংক্রান্ত নানা দিক নিয়ে আলোচনা হয়। যা মূলত চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় চালিকা শক্তি হিসেবে কাজ করবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
সম্মেলনের প্রথমদিন উদীয়মান আইআর ৪.০ বিশেষজ্ঞ এবং কানাডার ইউনিভার্সিটি অব ওটার লু’র আইইইই ফেলো ক্লাউডিও এ কেনিজারেজ, অস্ট্রেলিয়ার ইউনিভার্সিটি অব মেলবোর্নের আইইইই ফেলো রাজকুমার বুঁইয়া, কানাডার ইউনিভার্সিটি অব ব্রিটিশ কলোম্বিয়ার আইইইই ফেলো ভিনসেন্ট ওয়াং, অস্ট্রোলিয়ার ইউনিভার্সিটি অব নিউ সাউথ ওয়েলসের অধ্যাপক হুসেইন আব্বাস, ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিসটিক্যাল ইনস্টিটিউটের সুস্মিতা মিত্রা এবং ব্রাক ইউনিভার্সিটির মনজুর আহমেদ মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন।
এদিকে সম্মেলনের প্রথমদিন রাজধানীর ট্রাফিক দূরীকরণে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো এআই-বেসড প্রজেক্টের গ্র্যান্ড ফিনালে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এলসেভিয়ার দ্বারা অর্থায়িত প্রজেক্টটি সম্মেলনে সাসটেইনেবল টেকনোলজিস ফর ইন্ডাস্ট্রি অনুষ্ঠানের সহযোগী ইভেন্ট হিসেবে কাজ করছে।
এর বাইরেও সম্মেলনের অংশ হিসেবে ‘এডুকেশন ৪.০- প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনীর সঙ্গে এগিয়ে যাওয়া’ শীর্ষক একটি টিউটোরিয়াল ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার অফ এক্সিলেন্স ফর টিচিং অ্যান্ড লার্নিয়ের উদ্যোগে ‘এডুনিয়াস ৪.০-ফাইন্ডিং দ্যা বেটার সল্যুশন ফর এডুকেশন শীর্ষক প্রতিযোগিতা স্থান পেয়েছে।
আরও পড়ুন:
গ্রিন ইউনিভার্সিটির প্রযুক্তিবিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলন শুরু শনিবার
