X
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪
৬ বৈশাখ ১৪৩১

লকডাউন নয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে দোকান খুলতে চান ব্যবসায়ীরা, দেশজুড়ে বিক্ষোভ

বাংলা ট্রিবিউন ডেস্ক
০৬ এপ্রিল ২০২১, ২১:২৭আপডেট : ০৬ এপ্রিল ২০২১, ২১:৩২

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বন্ধে সারাদেশে শুরু হয়েছে ১৮টি শর্ত মানানোর কঠোর বিধিনিষেধ। অঘোষিত এই লকডাউনে দোকানপাট বন্ধ রাখার নির্দেশনা থাকায় বিপাকে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। তাদের দাবি, ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা দোকানপাট বন্ধ রাখায় সংকটে পড়েছেন বেশি। সংকটে পড়েছেন দিন এনে দিন খাওয়া দোকান কর্মচারীরাও। এ কারণে লকডাউনের প্রথম দিনেই দেশের অল্প কিছু জায়গায় ব্যবসায়ীরা বিক্ষোভ করলেও দ্বিতীয় দিনে দেশের বিভিন্ন জেলায় এ বিক্ষোভ সংক্রমিত হয়ে পড়েছে। তবে পরিকল্পিতভাবে আন্দোলন করার উদ্দেশ্যে নয়, সত্যিকারের মানবিক তাগিদেই তারা দোকানপাট খোলার দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন।

ব্যবসায়ীদের দাবি, সব কিছু খোলা রেখে লকডাউন করে শুধু দোকানপাট বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ফলে শুধু তারাই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। বইমেলা চললে, অফিস-আদালত, কল-কারখানা চললে শুধু তাদের প্রতিষ্ঠান কেন বন্ধ থাকবে এমন প্রশ্ন ছুঁড়ে তাদের দাবি লকডাউন করে বন্ধ না করে বরং দিনে সময় নির্ধারণ করে তাদের দোকানপাট খোলার সুযোগ দেওয়া হোক। এ দাবি না মানা হলে আন্দোলনের হুমকিও দেওয়া হয়েছে অনেক জেলায়। সাতক্ষীরায় ভ্রাম্যমাণ আদালত খোলা রাখা দোকানে জরিমানা করতে গিয়ে ব্যবসায়ী-কর্মচারীদের তুমুল বিক্ষোভের মুখে বেরিয়ে যেতে বাধ্য হন।

সাতক্ষীরায় দোকানে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানের বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের বিক্ষোভ।

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি জানান, সাতক্ষীরায় করোনাভাইরাস সংক্রমণরোধে সাত দিনের লকডাউনের দ্বিতীয় দিনে বিক্ষোভ করেছেন বস্ত্র ব্যবসায়ী ও কর্মচারীরা। মঙ্গলবার (৬ এপ্রিল) লকডাউনের সিদ্ধান্ত না মেনে শহরের বেশ কিছু ব্যবসায়ী তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখেন। এ খবরে দুপুর ১টার দিকে সাতক্ষীরা সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) (এসিল্যান্ড) মো. আসাদুজ্জামান শহরে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে আসেন। ভ্রাম্যমাণ আদালত সুলতানপুর বড়বাজার সড়কের মেসার্স ফাল্গুনী বস্ত্রালয়ে অভিযান চালাতে ঢুকলে আশেপাশের শত শত ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা রাস্তায় নেমে আসে। ফলে শ্রমিকদের বাধায় আদালতের কার্যক্রম বন্ধ করতে বাধ্য হন এসিল্যান্ড। এসময় ব্যবসায়ীরা ‘লকডাউন মানি না, মানবো না’ স্লোগান দিতে থাকে। পরিস্থিতি দেখে আসাদুজ্জামান সদর থানা পুলিশকে ফোন দিলে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

পরে বস্ত্র ব্যবসায়ী কর্মচারী সমিতির সদস্যরা সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করে। এরপর তারা দুপুর সোয়া একটায় ওই সড়কে লকডাউনবিরোধী বিক্ষোভ শুরু করেন। দুপুর দেড়টার দিকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আসাদুজ্জামান ব্যবসায়ী ও শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনায় মিলিত হন।

ব্যবসায়ীরা এসময় স্বাস্থ্যবিধি মেনে দোকানপাট খোলা রাখার দাবি জানিয়ে বলেন, প্রয়োজনে আমাদের একটি নির্ধারিত সময় বেঁধে দেওয়া হোক। আমরা সেই নির্ধারিত সময় পর্যন্ত দোকানপাট খোলা রেখে পরিবার-পরিজন নিয়ে যেন বাঁচতে পারি।

দোকান কর্মচারীদের যুক্তি আরও স্পষ্ট। তারা বলেন, ‘কোনও উৎসবে আমরা বোনাস পাই না। একদিন কাজে না আসলে বেতন পাই না। দোকানপাট বন্ধ থাকলে আমাদের পরিবারের সদস্যরা কী খেয়ে বাঁচবে?’

আর দোকান মালিকদের প্রশ্ন, দোকান খোলা না রাখলে দোকান ভাড়া কিভাবে উঠবে? এ টাকা কে দেবে? পণ্য বেচে লাভ করতে না পারলে তাদের পরিবার পরিজনই বা খাবে কী?’

বস্ত্র ব্যবসায়ী কর্মচারী সমিতির সভাপতি কবির বলেন, গতবারের লকডাউনে আমাদের মানবেতর জীবন কেটেছে। কোনও প্রকার সাহায্য সহযোগিতা আমরা পাইনি। সরকারের কাছে দাবি, সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত স্বাস্থবিধি মেনে ব্যবসা করার অনুমতি দেওয়া হোক।

ব্যবসায়ী ও কর্মচারীদের সঙ্গে আলোচনা শেষে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আসাদুজ্জামান ব্যবসায়ী সংগঠনের পক্ষে জেলা প্রশাসককে লিখিতভাবে বিষয়টি জানানোর কথা বলেন।

কুমিল্লা নগরীর কান্দির পাড়ে অবস্থান ও  বিক্ষোভ পালন করে বিভিন্ন শপিং মল, দোকানপাটের ব্যবসায়ী ও ব্যবসায়ী সমিতির নেতৃবৃন্দ

কুমিল্লা প্রতিনিধি জানান, কুমিল্লায় লকডাউনে দোকানপাট খোলা রাখার দাবিতে আন্দোলন করেছেন ব্যবসায়ীরা। মঙ্গলবার ( ৫ এপ্রিল) কুমিল্লা নগরীর কান্দির পাড়ে অবস্থান ও বিক্ষোভ পালন করেন বিভিন্ন শপিং মল, দোকানপাটের ব্যবসায়ী ও ব্যবসায়ী সমিতির নেতৃবৃন্দ। এসময় নগরীর লিবার্টি মোড় থেকে শুরু করে কান্দিরপাড় পর্যন্ত রাস্তায় ব্যবসায়ীরা জড়ো হয়ে সড়ক অবরোধ করে রাখেন। বিক্ষোভের অংশ হিসেবে শহরের অন্যান্য এলাকায়ও ব্যবসায়ীরা নিজেদের দোকান-প্রতিষ্ঠান ও শপিংমলের সামনে অবস্থান নেন।

ব্যবসায়ীরা বলেন, লকডাউনে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই তারা দোকানপাট খোলা রাখতে চান। এর আগেও লকডাউন পালন করে বিশেষ করে ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা যে সংকটে পড়েছে তা এখনও কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়নি। তাই এবার আর লকডাউন মেনে ব্যবসা বন্ধ রাখা সম্ভব হচ্ছে না। সরকার এ বিষয়ে যথাযোগ্য ব্যবস্থা নেবেন বলেও তারা দাবি জানান।

বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আতিক উল্যাহ খোকন, খন্দকার হক টাওয়ারের সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফুল ইসলাম, টাউন হল সুপার মার্কেটের সাধারণ সম্পাদক মো. কাজল ও দোকান কর্মচারীদের পক্ষে মোহাম্মদ সুমন।

কুমিল্লা দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আতিক উল্যাহ খোকন সমাপনী বক্তব্যে বলেন, এর আগেও আড়াই মাস কুমিল্লার ব্যবসায়ীরা লকডাউন পালন করেছে। সে ক্ষতি এখনও পুষিয়ে ওঠা সম্ভব হয়নি। এখন লকডাউনে সরকার কল-কারখানা খোলা রেখেছে কিন্তু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখেছে-এটা হতে পারে না। এ বিষয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। কুমিল্লার ব্যবসায়ীরা চায় স্বাস্থ্যবিধি মেনেই দোকানপাট খোলা রাখতে। ব্যবসায়ীদের প্রতিষ্ঠান খুলতে না দিলে আমাদের মাঠে বসে যাওয়া ছাড়া আর কোনও উপায় থাকবে না।

তিনি আরও জানান, সরকার আমাদের দাবি না মানলে আমাদের সড়ক অবরোধ করে বসে পড়া ছাড়া কোনও উপায় থাকবে না। এছাড়া তিনি ব্যবসায়ীদের নিয়ে আন্দোলনের হুমকিও দেন।

বিক্ষোভ শেষে বিভিন্ন শপিং মলেরও ব্যবসায়ী নেতা-কর্মীরা নগরীর কান্দিরপাড়ে বিক্ষোভ মিছিল করেন। এসময় পূবালী চত্বরে জড়ো হয়েও তারা বিক্ষোভ করে।

বরিশালে লকডাউন বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে নগরীর বিভিন্ন মার্কেটের দোকান মালিক ও কর্মচারীরা

বরিশাল প্রতিনিধি জানান, খেয়ে পড়ে বেঁচে থাকতে বরিশালে লকডাউন বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বরিশাল নগরীর বিভিন্ন মার্কেটের দোকান মালিক ও কর্মচারীরা। মঙ্গলবার (৫ এপ্রিল) বেলা ১২টায় নগরীর চকবাজার এলাকা থেকে চকবাজার, মহসিন মার্কেট ও সিটি মার্কেটের গার্মেন্টস দোকানের মালিক ও কর্মচারীরা এই বিক্ষোভ করে। পরে তারা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যান।

সেখানে জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপের মাধ্যমে আশ্বস্ত হয়ে তারা বিক্ষোভ কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন।
এ সময় তারা জানান, এক বছর আগে করোনা সংক্রমনের শুরুতে তাদের দীর্ঘদিন দোকান বন্ধ রাখতে হয়েছিল। সেই সময়ের লোকসান তারা এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেনি। এখন আবার লকডাউনে দোকান বন্ধ রাখায় তারা চরম ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন।

এই অবস্থায় তাদের দাবি, কোনোরকমে খেয়ে পড়ে বেঁচে থাকতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে তাদের যেন সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত দোকানের কার্যক্রম চালানোর অনুমতি দেওয়া হয়। এ বিষয়ে তারা জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত আবেদনও জমা দেন।
জেলা প্রশাসক জসিম উদ্দিন হায়দার জানিয়েছেন, প্রাপ্ত লিখিত আবেদনটি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়ার হবে।

পটুয়াখালীতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে দোকানপাট খোলা রাখার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন ব্যবসায়ী সমিতির নেতারাসহ শ্রমিক-কর্মচারীরা

পটুয়াখালী প্রতিনিধি জানান, পটুয়াখালীতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে দোকানপাট খোলা রাখার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন ব্যবসায়ী সমিতির নেতারাসহ শ্রমিক-কর্মচারীরা।

মঙ্গলবার ( ৬ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে পটুয়াখালী লঞ্চঘাট থেকে মিছিল বের করেন ব্যবসায়ী সমিতি ও শ্রমিক-কর্মচারীরা। মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে নিউমার্কেট গোলচত্বরে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন নিউ মার্কেট বাজার সমিতির সভাপতি মনির হোসেন তালুকদার, পটুয়াখালী গার্মেন্ট সমিতির সভাপতি আলহাজ হেমায়েত শিকদার ও সৈয়দ হাফিজুর রহমান প্রমুখ।

এসময় বক্তারা স্বাস্থ্যবিধি মেনে দোকানপাট খুলে দিতে সরকারের কাছে দাবি জানায়। আসন্ন পহেলা বৈশাখ ও ঈদ সামনে রেখে দোকানপাট খুলে দেওয়া না হলে ব্যবসায়ীরা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।

তারা আরও বলেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণের মধ্যেও বইমেলা চলছে, সরকারি-বেসরকারি অফিসের কার্যক্রম চলছে, খোলা রাখা হয়েছে শিল্প-কারখানা। শুধু মার্কেট বন্ধ। তাদের প্রশ্ন, বইমেলা, অফিস, শিল্প-কারখানা থেকে করোনা ছড়ায় না শুধু মার্কেট থেকে ছড়ায়? মার্কেট বন্ধ রেখে ব্যবসায় ধ্স নামিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

তাদের দাবি, গত বছরও পহেলা বৈশাখে, ঈদের আগে মার্কেট বন্ধ ছিল। কোনও ব্যবসা করতে পারিনি। এবারও পহেলা বৈশাখে ঈদের আগে মার্কেট বন্ধ রাখা হলে বড় ধরনের লোকসান গুনতে হবে আমাদের।

স্বাস্থ্যবিধি মেনে দোকান খোলার দাবিতে সিরাজগঞ্জে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে ব্যবসায়ী সমাজ

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, স্বাস্থ্যবিধি মেনে দোকান খোলার দাবিতে সিরাজগঞ্জে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে ব্যবসায়ী সমাজ।
মঙ্গলবার (৬ মার্চ) সকালে সিরাজগঞ্জ শহরের এস এস রোডস্থ এলাকায় সিরাজগঞ্জ শহর ব্যবসায়ী সমিতির আয়োজনে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। এ কর্মসূচিতে শহরের সর্বস্তরের ব্যবসায়ীরা অংশগ্রহণ করেন।

সিরাজগঞ্জ শহর ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ফেরদৌস রবিনের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন ফরিয়াপট্টি ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি রফিকুল ইসলাম খান, রড সিমেন্ট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি নজরুল ইসলাম, ইলেকট্রিক পণ্য ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি শহীদ কামাল লিটন, সাধারণ সম্পাদক মোবারক আলী, দোকান কর্মচারী সমিতির সভাপতি আলাউদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।

লকডাউনের প্রতিবাদে ও দোকান খোলা রাখার দাবিতে ঝিনাইদহের শৈলকুপায় বিক্ষোভ এবং সড়ক অবরোধ করেছেন ব্যবসায়ীরা

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি জানান, লকডাউনের প্রতিবাদে ও দোকান খোলা রাখার দাবিতে ঝিনাইদহের শৈলকুপায় বিক্ষোভ এবং সড়ক অবরোধ করেছেন ব্যবসায়ীরা।

মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ব্যবসায়ীরা শহরের চৌরাস্তা মোড়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকেন। এ সময় শৈলকুপা শহরে ছোট যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সংবাদ পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কানিজ ফাতেমা লিজা ঘটনাস্থলে এসে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করলে তারা অবরোধ তুলে নেন।

এদিকে জেলা শহরে কিছুটা লকডাউন মানলেও উপজেলা শহরে মানুষ করোনা প্রতিরোধে সরকারের ১৮ দফা নির্দেশনা মানা হচ্ছে না।

এদিকে হাট বাজারগুলোতে ভিড় মোটেই কমেনি। কেনাবেচায় নিরাপদ দূরত্বের বালাই নেই। এমনকি অনেকে মাস্ক পর্যন্ত ব্যবহার করছে না।

সীমিত সময়ের জন্য দোকান খোলার অনুমতি চেয়েছেন দিনাজপুর মালদাহ্পট্টি ব্যবসায়ী সমিতি

দিনাজপুর প্রতিনিধি জানান, লকডাউনে বিপাকে পড়ার হাত থেকে রক্ষা পেতে সীমিত সময়ের জন্য দোকান খোলার অনুমতি চেয়ে দিনাজপুর মালদাহ্পট্টি ব্যবসায়ী সমিতি অনুরোধ জানিয়েছেন।

আজ মঙ্গলবার সকালে লকডাউন সীমিত সময়ের জন্য হইলেও দোকান খোলার অনুমতি চেয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবর ‘দোকান ব্যবসায়ীদের বাঁচান’ ব্যানারে অনুরোধ জানান তারা। অনুমতি মিলবে এমন আশায় তালাবদ্ধ দোকানের সামনে বসে সময় কাটিয়েছেন এসব দোকানের কর্মচারীরা।

জামালপুরের বকশীগঞ্জে লকডাউনবিরোধী বিক্ষোভ ও সমাবেশ করেন ব্যবসায়ীরা

জামালপুর প্রতিনিধি জানান, জামালপুরের বকশীগঞ্জে লকডাউনবিরোধী বিক্ষোভ ও সমাবেশ করেছেন ব্যবসায়ীরা। মঙ্গলবার ( ৬ এপ্রিল) দুপুরে বকশীগঞ্জ শহরে এ কর্মসূচি পালন করেন ব্যবসায়ীরা। বিক্ষোভ কর্মসূচিতে প্রায় এক হাজার ব্যবসায়ী ও দোকান কর্মচারী অংশগ্রহণ করেন। এ ঘটনায় জরুরি সভা ডেকেছে বকশীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন।

এ সময় বিক্ষোভকারীরা ‘লকডাউন মানি না, মানবো না’ স্লোগানে এলাকা প্রকম্পিত করেন। বিক্ষোভ মিছিল শেষে মধ্য বাজার সড়ক অবরোধ করেন ব্যবসায়ীরা।

উপজেলা শিল্প ও বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবদুল হামিদ জানান, ‘আপাতত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪ টা দোকান পাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।’
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মুন মুন জাহান লিজা ব্যবসায়ীদের লকডাউন বিরোধী মিছিল সম্পর্কে জানান, ‘সরকারের দেওয়া নির্দেশনা অবশ্যই অনুসরণ করতে হবে। এর বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। তবুও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে’।

লকডাউনবিরোধী বিক্ষোভ

নোয়াখালী প্রতিনিধি জানান, নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে লকডাউনে দোকানপাট ও শপিং মল বন্ধের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে ব্যবসায়ী ও কমর্চারীরা। মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার সোনাইমুড়ী বাজার এলাকায় ওই বাজারের ২ শতাধিক দোকান মালিক ও কর্মচারীরা মিলে এ বিক্ষোভ সমাবেশ করে।

এসময় বিক্ষোভকারীরা স্লোগান দেয়, ‘লকডাউন মানি না, মানবো না’, ‘স্বাস্থ্যবিধি মানবো, দোকানপাট খুলবো।’

ব্যবসায়ী মো. ফয়সাল জানান, গত বছরের লকডাউনে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এবার ঈদের আগে লকডাউন থাকলে, তাদের ব্যবসায় ধস নামবে। সবই চলছে, সবাই রাস্তায়। তাহলে, আমরা কেন লকডাউনের শিকার হবো? শুধু আমাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা কেন? ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে ব্যবসার পরিকল্পনা করেন। এ সময়ই সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয়।

সোনাইমুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. গিয়াস উদ্দিন বলেন, সোনাইমুড়ী বাজার এলাকায় ব্যবসায়ীদের লকডাউনবিরোধী বিক্ষোভ সম্পর্কে তিনি অবগত নন।

কুষ্টিয়ায় লকডাউন

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, লকডাউনে সীমিত পরিসরে ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে মার্কেট খোলার দাবি জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জের ব্যবসায়ীরা। তারা বলেছেন, নইলে তারা লকডাউন অমান্য করে নিজেরাই দোকান খুলতে বাধ্য হবেন। তারা বলেন, দোকান খুলতে না পারলে আমরা ঋণের চাপেই মারা যাবো। আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। আমরা সরকারের বিরুদ্ধে না। কিন্তু সরকার দাবি না মানলে পেটের তাগিদে আমাদের লকডাউন অমান্য করতে হবে।

নারায়ণগঞ্জ জেলা দোকান মালিক সমিতির উদ্যোগে মঙ্গলবার সকালে নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধনে বক্তারা একথা বলেন। নারায়ণগঞ্জ জেলা দোকান মালিক সমিতির সহ-সভাপতি হাজী হাসানের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আরিফ দিপু, সহ-সভাপতি শাহীন, যুগ্ম সম্পাদক মিনার, সাংগঠনিক সম্পাদক নিজামুদ্দিন, দপ্তর সম্পাদক আলম প্রমুখ। মানববন্ধন শেষে তারা একটি মিছিল বের করেন।

উল্লেখ্য, লকডাউনের প্রথম দিনে গতকাল জেলার বেগমগঞ্জ উপজেলার চৌমুহনী বাজারেও ব্যবসায়ীরা লকডাউনবিরোধী বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে। এছাড়াও একইদিনে দোকানপাট খোলা রাখার দাবিতে মাগুরায় ব্যবসায়ীদের বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। শহরের বেবী প্লাজা মার্কেটের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে মাগুরা পৌরমেয়রের বাসভবনে গিয়ে তারা এ দাবি জানান। এসময় ব্যবসায়িক ক্ষতি থেকে বাঁচতে স্বাস্থবিধি মেনে দোকান খোলার দাবি করেন তারা।

এছাড়াও এদিন, ঝিনাইদহের কালীগঞ্জেও লকডাউন তুলে নেওয়ার দাবিতে ব্যবসায়ীদের সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

/টিএন/
সম্পর্কিত
স্বামীকে ভিডিও কলে রেখে প্রাণ দিলেন পার্লারের মালিক
কোটি টাকার সোনা ভারতে পাচারের সময় একজন আটক
ছাত্রলীগের ২ গ্রুপের সংঘর্ষ, সাতক্ষীরা মেডিক্যালের হল বন্ধ ঘোষণা
সর্বশেষ খবর
প্রথম ধাপে ভোটের হার ৬০ শতাংশ, সর্বোচ্চ পশ্চিমবঙ্গে
লোকসভা নির্বাচনপ্রথম ধাপে ভোটের হার ৬০ শতাংশ, সর্বোচ্চ পশ্চিমবঙ্গে
ইসরায়েলি বিমান কীভাবে এল বাংলাদেশে, প্রশ্ন নুরের
ইসরায়েলি বিমান কীভাবে এল বাংলাদেশে, প্রশ্ন নুরের
মিয়ানমারের ২৮৫ জন সেনা ফেরত যাবে, ফিরবে ১৫০ জন বাংলাদেশি
মিয়ানমারের ২৮৫ জন সেনা ফেরত যাবে, ফিরবে ১৫০ জন বাংলাদেশি
১৬ বছর ধরে পুনরুদ্ধার করা ‘নেপোলিয়ন’ দেখাবে কান
কান উৎসব ২০২৪১৬ বছর ধরে পুনরুদ্ধার করা ‘নেপোলিয়ন’ দেখাবে কান
সর্বাধিক পঠিত
আমানত এখন ব্যাংকমুখী
আমানত এখন ব্যাংকমুখী
উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীকে অপহরণের ঘটনায় ক্ষমা চাইলেন প্রতিমন্ত্রী
উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীকে অপহরণের ঘটনায় ক্ষমা চাইলেন প্রতিমন্ত্রী
ইরানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল!
ইরানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল!
বাড়ছে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানি, নতুন যোগ হচ্ছে স্বাধীনতা দিবসের ভাতা
বাড়ছে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানি, নতুন যোগ হচ্ছে স্বাধীনতা দিবসের ভাতা
ইরানের ওপর কোনও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়নি: ইরানি কর্মকর্তা   
ইরানের ওপর কোনও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়নি: ইরানি কর্মকর্তা