বান্দরবানের লামায় বালুভর্তি ট্রাক, মাহিন্দ্র জিপ ও মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে তিনজন নিহত হয়েছেন। রবিবার (১১ জুলাই) দুপুর ১টার দিকে লামা-চকরিয়া সড়কের মিরিঞ্জা পাহাড়ের পশ্চিম লাইনঝিরি এলাকায় হওয়া এ দুর্ঘটনার জন্য ট্রাফিক পুলিশের এটিএসআই (অ্যাসিস্ট্যান্ট টাউন সাব-ইন্সপেক্টর) আরজুর ভুলকে দায়ী করছেন স্থানীয়রা।
নিহতরা হলেন- বান্দরবান আলীকদমের চিনু দে (৩০) ও রুপসি দাশ (২২) এবং অপরজন চট্টগ্রামের লোহাগাড়ার মোক্তার মিয়া (৫০)।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বান্দরবানের আলীকদম থেকে একটি মাহিন্দ্র জিপ যাত্রী নিয়ে লামার লাইনঝিরি এলাকায় আসে। সেখানে পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশের ভয়ে চালক যাত্রীদের নামিয়ে খালি গাড়ি নিয়ে ফাঁড়ি পার হয়ে ২০০ ফুট সামনে গিয়ে যাত্রীদের তোলেন। খবরটি ট্রাফিক পুলিশের এটিএসআই আরজু জানতে পেরে রাসেল নামের একজন থেকে তার ভাড়ায়চালিত মোটরসাইকেল নিয়ে জিপটি তাড়া করে একটি ঝুঁকিপূর্ণ বাঁকে গতিরোধ করেন। পরে জিপ থেকে যাত্রীদের নামিয়ে রাস্তার পাশে দাঁড় করিয়ে চালকের সঙ্গে তর্কে জড়ান। এ সময় বিপরীত দিক থেকে একটি বালুভর্তি ট্রাক পাহাড়ি ঢালু রাস্তা দিয়ে নামার সময় বাঁকটিতে এসে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে জিপ-মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দিয়ে উল্টে যায়। এতে দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রীরা বালুর নিচে চাপা পড়েন। ফলে ঘটনাস্থলেই তিনজন নিহত হন। জিপ-মোটরসাইকেলটি দুমড়ে-মুচড়ে যায়।
এ বিষয়ে লামা উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল বলেন, ট্রাফিক পুলিশ যেখানে গাড়িটি দাঁড় করিয়েছেন, সেখানে গাড়ি দাঁড় করানোর মতো কোনও জায়গা নেই।
তার প্রশ্ন, ট্রাফিক পুলিশের এমন কী দরকার ছিল যে, মোটরসাইকেলে করে ৩-৪ কিলোমিটার তাড়া করে যাত্রী নিয়ে যাওয়া গাড়িটি ঝুঁকিপূর্ণ জায়গায় দাঁড় করানোর? এ সময় তিনি দুর্ঘটনার জন্য ট্রাফিক পুলিশ আরজুকেই পুরো দায়ী করেন এবং তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেন।
লামা থানার সার্কেল পুলিশ সুপার (এসপি) রেজওয়ানুল ইসলাম বলেন, দুর্ঘটনার কারণ জানতে তদন্ত করা হচ্ছে। এখনও ট্রাকটির মালিক বা চালক কাউকেই পাওয়া যায়নি। এমন একটি বাঁকে ট্রাকটি কেন দ্রুতগতিতে আসছিলো বা গাড়ির ফিটনেসে কোনও সমস্যা ছিলো কি-না তাও যাচাই করা হবে। সঠিক তদন্ত ছাড়া এখনও কাউকে দোষারোপ করা যাচ্ছে না।
এ বিষয়ে জানতে এটিএসআই আরজুর মোবাইল নম্বরে কল দিলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। মোটরসাইকেলের মালিক মো. রাসেলের মোবাইল নম্বরটিও বন্ধ রয়েছে।