দিনাজপুরের হিলিতে ‘রোহিঙ্গা’ বলে সম্বোধন করায় ইলিয়াস হোসেন (৩৪) নামের এক মাইক্রোবাসচালককে পিটিয়ে হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী। একই সঙ্গে ইলিয়াসের হত্যাকারী সাফিন ও লাবুসহ অন্যদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন তারা। অন্যথায় বড় ধরনের কর্মসূচি দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন।
রবিবার (২৫ জুলাই) সকালে বাংলাহিলি মাইক্রোবাসচালক সমিতি ও স্থানীয় এলাকাবাসীর আয়োজনে হিলি স্থলবন্দরের চারমাথা মোড় থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে একই স্থানে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন পালন করেন তারা। মানববন্ধনে বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড হাতে মাইক্রোবাসচালক ও এলাকাবাসী অংশ নেন। এ সময় সমিতির নেতারাও উপস্থিত ছিলেন।
মানববন্ধনে ইলিয়াসের ছেলে সজিব বলেন, আমার বাবার হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই। তারা আমার বাবাকে নির্মমভাবে হত্যা করলো। এখন আমাদের কে দেখবে। বাবার স্বপ্ন ছিল, আমাকে পুলিশ অফিসার বানাবে, স্বপ্ন ভেঙে গেলো। আমার এক ছোট বোন আছে। কে নেবে আমাদের দায়িত্ব?
ইলিয়াসের ভাই রুহুল হোসেন ও আব্দুর নূর জানান, বিনা দোষে তারা ইলিয়াসকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করেছে। তাকে কথা বলার সুযোগ দেয়নি। ঈদের সময় যেখানে আনন্দ করার কথা; সেখানে কবরে শায়িত রয়েছে। তার ছোট দুই ছেলে ও মেয়ে আছে। এখন তাদের কে দেখবে। আমরা চাই, লাবু ও শাফিনকে দ্রুত গ্রেফতার করা হোক।
তাদের আন্দোলনে একাত্মতা জানিয়ে হাকিমপুর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান শাহিনুর রেজা শাহীন বলেন, ইলিয়াসের হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। হত্যাকাণ্ডে যারা তাদের সহযোগিতা করেছে তাদেরও আইনের আওতায় আনার দাবি জানাই।
হাকিমপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদৌস ওয়াহিদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে ইলিয়াসের লাশ বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। ওই ঘটনায় পাঁচ জনকে আসামি মামলা করেছে নিহতের পরিবার। আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে। তবে ঘটনার পর থেকে আসামিরা পলাতক। আমরা তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চালাচ্ছি।
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার হিলির বৈগাম এলাকার বাসিন্দা আকতারুজ্জামানকে ‘রোহিঙ্গা’ বলে সম্বোধন করায় তিনি ও তার স্বজনরা ইলিয়াসকে মারধর করে স্থলবন্দরের চারমাথা মোড়ে ফেলে রেখে যান। শনিবার সকালে বিরামপুর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। ইলিয়াস হিলির পাইকপাড়া গ্রামের মৃত মহসিন আলীর ছেলে। হিলি এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে মাইক্রোবাস চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন।