২০২০-২১ অর্থবছরে বিদ্যুৎ বিভাগ ৯৭ দশমিক ৭ ভাগ এবং জ্বালানি বিভাগ ১০৪ দশমিক ২৭ ভাগ এডিপি বাস্তবায়ন করেছে। বিদ্যুৎ বিভাগে আরএডিপিতে ২৪ হাজার ৭৬৮ দশমিক ২২ কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল। অর্থ বিভাগ নির্ধারিত ব্যয়সীমা ছিল মোট ২৩ হাজার ৬১৩ দশমিক ২১ কোটি টাকা। জুন পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে মোট ২৩ হাজার ৭৯ দশমিক ৬০ কোটি টাকা। একইভাবে জ্বালানিতে বরাদ্দ ছিল ২ হাজার ৯৫৮ দশমিক ৪৬ কোটি টাকা কিন্তু ব্যয় করা হয়েছে ৩ হাজার ৮৪ দশমিক ৭৩ কোটি টাকা।
বুধবার (২৮ জুলাই) অনলাইনে উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর জুলাই ২০২০ থেকে জুন ২০২১ পর্যন্ত বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনা সভায় এসব তথ্য জানানো হয়।
বিদ্যুৎ বিভাগের সভায় বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, গ্রাহকসেবা সমৃদ্ধ প্রকল্প গ্রহণ করে দ্রুত বাস্তবায়নে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। উৎপাদন, সঞ্চালন ও বিতরণ ব্যবস্থার মাঝে সমন্বয় করে প্রকল্প গ্রহণ করা উচিৎ। রোডম্যাপ অনুসারে প্রকল্প বাস্তবায়নে তদারকি বাড়ানো প্রয়োজন।
‘বিদ্যুৎ বিভাগের উন্নয়ন প্রকল্প সমূহের জুলাই ২০২০ থেকে জুন ২০২১ পর্যন্ত বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনা’ সভায় অন্যদের মধ্যে বিদ্যুৎ সচিব মো. হাবিবুর রহমান, পিডিবির চেয়ারম্যান বেলায়েত হোসেন, আরইবির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মঈন উদ্দিন (অব.), পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসেনসহ অন্যান্য দফতর প্রধানরা বক্তব্য রাখেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, পরিস্থিতি বিবেচনায় বিদ্যুৎ বিভাগ এবং জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের অগ্রগতি সন্তোষজনক । মে মাসেই যেন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়—এই রোড ম্যাপ বাস্তবায়ন করতে প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের আন্তরিক হয়ে কাজ করা প্রয়োজন। এডিপি বাস্তবায়নে আরএডিপি বরাদ্দের শতভাগ/সর্বোচ্চ বাস্তবায়নের জন্য সংস্থা প্রধানসহ সকল প্রকল্প পরিচালককে জোরালো প্রচেষ্টা গ্রহণ করতে হবে।
বিদ্যুৎ বিভাগের পক্ষ থেকে সভায় জানানো হয়, তাদের ২০২০-২১ অর্থ বছরের আরএডিপিতে ২৪ হাজার ৭৬৮ দশমিক ২২ কোটি টাকা (জিওবিতে ১০ হাজার ৮০০ দশমিক ১৮ কোটি, পিএ খাতে ১২ হাজার ৯৫৯ দশমিক ৯৯ কোটি ও নিজস্ব অর্থায়নে ১০০৮ দশমিক ০৫ কোটি টাকা ) বরাদ্দ ছিল। অর্থ বিভাগ কর্তৃক নির্ধারিত ব্যয়সীমা জিওবিতে ৯ হাজার ৬৪৫ দশমিক ১৭ কোটি, পিএ খাতে ১২ হাজার ৯৫৯ দশমিক ৯৯ কোটি ও নিজস্ব অর্থায়নে ১ হাজার ৮ দশমিক ০৫ কোটি অর্থাৎ মোট ২৩ হাজার ৬১৩ দশমিক ২১ কোটি টাকা নির্ধারিত ছিল। জুন ২০২১ পর্যন্ত ব্যয় জিওবিতে ৯ হাজার ৪৯৩ দশমিক ০৪ কোটি, পিএ খাতে ১২ হাজার ৭৭২ দশমিক ৪৫ কোটি ও নিজস্ব অর্থায়নে ৮১৪ দশমিক ১৪ কোটি অর্থাৎ মোট ২৩ হাজার ৭৯ দশমিক ৬০ কোটি টাকা। আরএডিপি বরাদ্দ অনুযায়ী জুন ২০২১ পর্যন্ত ব্যয়ের শতকরা হার ৯৩ দশমিক ১৮ ভাগ আর সিলিং অনুযায়ী জুন ২০২১ পর্যন্ত ব্যয়ের শতকরা হার ৯৭ দশমিক ৭৪ ভাগ। অর্থাৎ আর্থিক অগ্রগতি ৯৭ দশমিক ৭৪ ভাগ। বিদ্যুৎ বিভাগ চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরে মোট ৯৭টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে । এরমধ্যে বিনিয়োগ ৮২টি, টি.এ ১০ টি ও নিজস্ব অর্থায়নে ৫ টি প্রকল্প রয়েছে।
এদিকে আজ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আনিছুর রহমানের সভাপতিত্বে ‘জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের আওতাধীন ২০২০-২১ অর্থ বছরের আরএডিপিতে জিওবি ও বৈদেশিক সহায়তাপুষ্ট, সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন এবং গ্যাস উন্নয়ন তহবিলভুক্ত প্রকল্পগুলোর জুন ২০২১ পর্যন্ত বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনা’ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় এসব তথ্য জানানো হয়।
জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ জানায়, তাদের ২০২০-২১ অর্থবছরে মোট ৩০টি প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে। এর মধ্যে জিওবি ও বৈদেশিক সহায়তাপুষ্ট ৮টি, নিজস্ব অর্থায়নে ১৬টি ও জিডিএফ (গ্যাস উন্নয়ন তহবিল) ৬টি প্রকল্প ছিল। ২০২০-২১ অর্থ বছরের জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগে আরএডিপি বরাদ্দ ছিল ২ হাজার ৯৫৮ দশমিক ৪৬ কোটি টাকা কিন্তু ব্যয় করা হয়েছে ৩ হাজার ৮৪ দশমিক ৭৩ কোটি টাকা। অর্থাৎ আর্থিক অগ্রগতি ১০৪ দশমিক ২৭ ভাগ। যদিও আরএডিপি অনুমোদনের পর আরও ১১টি প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে।