রুয়ান্ডার গণহত্যার সময় মানুষ বাঁচানোর চেষ্টাকারী হিসেবে বীর আখ্যা পেয়েছিলেন পল রসেসেবাগিনা (৬৭)। তাকে নিয়ে নির্মিত হয়েছে সাড়া জাগানো সিনেমাও। তবে এবার তাকে সন্ত্রাসবাদে অভিযুক্ত করেছে রুয়ান্ডার একটি আদালত।
২০১৮ সালে এক হামলায় নয় বেসামরিক হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত হয়েছেন তিনি। পল রসেসেবাগিনার বিরুদ্ধে অভিযোগ নির্বাসনে থেকে হামলা চালানো বিদ্রোহী গ্রুপটিকে সমর্থন দেন তিনি। তার পরিবারের অভিযোগ তাকে জোর করে রুয়ান্ডায় নেওয়া হয়েছে। এছাড়া তিনি ন্যায় বিচার পাননি বলেও অভিযোগ তাদের।
সেলিব্রেটি চরিত্র থেকে পল রসেসেবাগিনার রাষ্ট্রীয় শত্রুতে পরিণত হওয়ার নেপথ্যে রয়েছে সরকারের সমালোচনা। গণহত্যার সময় বেশ কিছু মানুষের প্রাণ বাঁচিয়ে প্রশংসায় ভাসেন পল রসেসেবাগিনা। ১৯৯৪ সালের এপ্রিলে একশ’ দিনের মধ্যে আট লাখ মানুষ হত্যার শিকার হয়। এদের বেশিরভাগই তুতসি নৃতাত্বিক গোষ্ঠীর সদস্য।
পল রসেসেবাগিনার উপর নির্মাণ করা হয় অস্কার পুরস্কারের জন্য মনোনীত ছবি হোটেল রুয়ান্ডা। এতে পল রসেসেবাগিনার চরিত্রে অভিনয় কনে ডন সেডল। হোটেল ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত এই চরিত্রটি আশ্রয় প্রার্থী এক হাজারের বেশি মানুষের জীবন রক্ষা করেন।
২০০৫ সালে ছবিটি মুক্তির পর পল রসেসেবাগিনা ব্যাপক প্রশংসিত হন। আর তারপরই গণহত্যা পরবর্তী সরকার এবং প্রেসিডেন্টপল কাগামের সমালোচনা শুরু করেন তিনি। মানবাধিকার হরণ নিয়ে কথা বলার পাশাপাশি তিনি অভিযোগ করেন সরকার হুতুস জনগোষ্ঠীকে লক্ষ্যবস্তু বানাচ্ছে।
নির্বাসনে থেকে পল রসেসেবাগিনা একটি বিরোধী জোটের নেতৃত্ব দিতে থাকেন। এই জোটের একটি সশস্ত্র শাখা ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্ট (এফএলএন) রয়েছে। ২০১৮ সালে একটি ভিডিও বার্তায় তিনি সরকার পরিবর্তনের ডাক দিয়ে বলেন, ‘রুয়ান্ডায় পরিবর্তন আনতে সম্ভাব্য যেকোনও শক্তি প্রয়োগের সময় চলে এসেছে।’
২০১৮ সালে এক হামলার জন্য এফএলএনকে দায়ী করা হয়। সরকার বলছে ওই হামলায় নয় বেসামরিক নিহত হয়। তবে পল রসেসেবাগিনা কোনও সময়ই বেসামরিক নাগরিককে লক্ষ্যবস্তু বানানোর কথা বলেননি।
রসেসেবাগিনার পরিবারের অভিযোগ গত বছর তাকে জোর করে অপহরণ করে রুয়ান্ডায় নিয়ে যাওয়া হয়।