X
বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪
১৪ চৈত্র ১৪৩০

মুহিবুল্লাহর মৃত্যু হৃদয়বিদারক: হিউম্যান রাইটস ওয়াচ

টেকনাফ প্রতিনিধি
৩০ সেপ্টেম্বর ২০২১, ২০:৪৩আপডেট : ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২১, ২১:৩১

মুহিবুল্লাহর হত্যাকাণ্ডকে ‘খুবই হৃদয়বিদারক’ আখ্যায়িত করেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক পরিচালক মীনাক্ষী গাঙ্গুলি। এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, ‘মুহিবুল্লাহ রোহিঙ্গাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একজন নেতা ছিলেন। তিনি যথাযথ সম্মান ও অধিকার নিয়ে নিজ দেশে ফেরার জন্য তৎপর ছিলেন।’

মীনাক্ষী আরও বলেন, বাংলাদেশে আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকারের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশের পাশাপাশি যথাযথ নিরাপত্তার বিষয়েও সোচ্চার ছিলেন মুহিবুল্লাহ। 

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা ফর্টিফাই রাইটসের প্রধান নির্বাহী ম্যাথিউ স্মিথ এক বিবৃতিতে বলেন, ‘জঙ্গিরা এর আগেও মুহিবুল্লাহকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছিল। এ কারণে তখন তাকে আত্মগোপনে যেতে হয়।’ 

কক্সবাজারের শরণার্থী শিবিরগুলোতে ‘সহিংসতা একটি ক্রমবর্ধমান সমস্যা’ উল্লেখ করে বিবৃতি দিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। বিবৃতিতে মুহিবুল্লাহর হত্যাকাণ্ড তদন্তে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি। পাশাপাশি শরণার্থী ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সবার নিরাপত্তা নিশ্চিতে জাতিসংঘ ও বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে তারা। 

‘খুনিদের চিনি, নাম বললে জান থাকবে না’

‘প্রত্যাবাসনবিরোধীরাই হত্যা করেছে মুহিবুল্লাহকে’

গুলি চালানোর আগে মুহিবুল্লাহর সঙ্গে কথা বলেছিল তারা

 

মুহিবুল্লাহর হত্যাকাণ্ডকে ‘দুঃখজনক’ আখ্যা দিয়ে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর জানিয়েছে, শরণার্থী শিবিরের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ ও সেখানে শান্তি বজায় রাখার জন্য তারা নিবিড়ভাবে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছে।

জানা যায়, রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমার সেনাদের হাত থেকে প্রাণে বাঁচতে মংডু টাউনশিপের সিকদারপাড়া গ্রাম থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন। আশ্রয় নেন কক্সবাজারের উখিয়া ক্যাম্পে। তার বাবার নাম মৌলভী সিরাজ। মুহিবুল্লাহ ছিলেন ৯ সন্তানের জনক। মিয়ানমারে থাকতে তিনি একটি স্কুলে শিক্ষকতা করতেন। ক্যাম্পের বাসিন্দাদের কাছে তিনি ‘মাস্টার মুহিবুল্লাহ’ নামে পরিচিত ছিলেন।

২০১৯ সালে মাসের ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা নাগরিকদের বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়ার দুই বছর পূর্তি উপলক্ষে উখিয়ার কুতুপালং এক্সটেনশন-৪-এ রোহিঙ্গা গণহত্যাবিরোধী যে মহাসমাবেশ হয়েছিল, তার নেতৃত্ব দিয়েছিলেন মুহিবুল্লাহ। গণহত্যাবিরোধী ওই সমাবেশে পাঁচ লাখ রোহিঙ্গা জড়ো হন। ওই সমাবেশে তিনি রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব প্রদান, নিরাপত্তা, রাখাইনে ফেলে আসা জন্মভিটা ফেরতসহ সাত দফা দাবি জানিয়েছিলেন। একই বছরের জুলাইয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাতের পর বিশ্ববাসীর নজর কাড়েন রোহিঙ্গাদের অধিকার আদায়ে গঠিত আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের (এআরএসপিএইচ) চেয়ারম্যান মুহিবুল্লাহ। 

প্রসঙ্গত, মিয়ানমার সেনাবাহিনীর দমন-পীড়নের মুখে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর দেশটির রাখাইন রাজ্য থেকে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন প্রায় সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা। বর্তমানে নতুন ও পুরনো নিয়ে কক্সবাজারের ৩৪টি রোহিঙ্গা শিবির এবং নোয়াখালীর ভাসানচরে বসবাস করছেন প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা।

/টিটি/এমওএফ/
সম্পর্কিত
কানাডায় যাচ্ছেন মুহিবুল্লাহর পরিবারের আরও ১০ সদস্য
রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ হত্যা: আরও দুজনের সাক্ষ্যগ্রহণ
রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ হত্যার এক বছরে ক্যাম্পে আরও ২৭ খুন 
সর্বশেষ খবর
বিএনপির ‘ইন্ডিয়া-আউট’ ক্যাম্পেইন: বাস্তবতা ও সম্ভাব্য ফলাফল
বিএনপির ‘ইন্ডিয়া-আউট’ ক্যাম্পেইন: বাস্তবতা ও সম্ভাব্য ফলাফল
নায়কের জন্মদিনে নায়িকারা...
নায়কের জন্মদিনে নায়িকারা...
মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র আধুনিকায়নে কাজ করবে জাইকা ও বিএফডিসি
মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র আধুনিকায়নে কাজ করবে জাইকা ও বিএফডিসি
ট্রেনের ৪৫ হাজার টিকিট কিনতে দেড় কোটির বেশি হিট
ট্রেনের ৪৫ হাজার টিকিট কিনতে দেড় কোটির বেশি হিট
সর্বাধিক পঠিত
যেভাবে মুদ্রা পাচারে জড়িত ব্যাংকাররা
যেভাবে মুদ্রা পাচারে জড়িত ব্যাংকাররা
আয়বহির্ভূত সম্পদ: সাবেক এমপির পিএস ও স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
আয়বহির্ভূত সম্পদ: সাবেক এমপির পিএস ও স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
কুড়িগ্রাম আসছেন ভুটানের রাজা, সমৃদ্ধির হাতছানি
কুড়িগ্রাম আসছেন ভুটানের রাজা, সমৃদ্ধির হাতছানি
নিউ ইয়র্কে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি তরুণ নিহত, যা জানা গেলো
নিউ ইয়র্কে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি তরুণ নিহত, যা জানা গেলো
বিএনপির ইফতারে সরকারবিরোধী ঐক্য নিয়ে ‘ইঙ্গিতময়’ বক্তব্য নেতাদের
বিএনপির ইফতারে সরকারবিরোধী ঐক্য নিয়ে ‘ইঙ্গিতময়’ বক্তব্য নেতাদের