গত দুই দশক ধরে পুরান ঢাকার লক্ষ্মীবাজারে বাস করছেন শাহনাজ আক্তার। শীতে তো বটেই, শীত চলে যাওয়ার পরও রান্না নিয়ে চরম বিপাকে পড়েন তিনি। তীব্র গ্যাস সংকটে পানিও ফোটাতে পারেন না। গ্যাস নিয়ে শাহনাজের মতো এলাকার আরও অনেকের ভোগান্তির অন্ত নেই।
পুরান ঢাকার অধিকাংশ এলাকায় বছরের সবসময়ই গ্যাস নিয়ে হাহাকার লেগে আছে। চুলা জ্বললেও নিভু নিভু করে। বেশিরভাগ এলাকায় সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত গ্যাসের চাপ থাকে না। বাধ্য হয়ে মাঝ রাতে কিংবা ভোরে রান্না করতে হয়।
ডিএনসিসির ৪৩ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা শারমিন আক্তার বলেন, সকালে গ্যাসের চাপ এতই কম থাকে যে সামান্য চা বানাতেও ঘণ্টাখানেক লেগে যায়। শীতের শুরু থেকে টানা কয়েক মাস চলে এ দশা। এমনও হয়েছে দিনের বেশ খানিকটা সময় না খেয়ে থাকতে হয়েছে।
কলতাবাজারের বাসিন্দা কামাল হোসেন বলেন, কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার বলেও সমাধান পাইনি।
পুরান ঢাকার সদরঘাট, বাংলা বাজার, লালকুঠি, কলতাবাজারের ১ এবং ২ নং কুঞ্জবাবু লেন, ছোট মসজিদ এবং বড় মসজিদ, কাজী বাড়ি, ভাঙ্গা বাড়ি, কাজী আব্দুর রউফ লেন, হাজী আব্দুল মজীদ লেন, রোকনপুর, ৫ ভাই ঘাট লেন, রসের গলি, দক্ষিণ মুহসেন্দী, রায় সাহেব বাজার, বাণীয়া নগর রাজার গেট, টং মার্কেট, পাহাড় টুলি, ধোলাইখাল, বংশাল, নবাবপুর, নাজিরাবাজার, নন্দলাল দত্ত লেন, উর্দু রোড, ডাইলপট্টি, বকশীবাজার, ছুরিটোলা, কুলুটোলা, মীর হাজীরবাগ, খোকার মাঠসহ আরও বিভিন্ন জায়গায় গ্যাসের তীব্র সংকট রয়েছে।
তিতাসের এক কর্মকর্তা জানান, পুরান ঢাকার গ্যাসের লাইনগুলো অনেক পুরনো আর প্রচুর অবৈধ সংযোগ রয়েছে। এর ফলে গ্যাস সরবরাহে সংকটে পড়তে হয় আমাদের। প্রায়ই অভিযানে গিয়ে এসব লাইন বিচ্ছিন্ন করি। আবার সেটা লাগানো হয়।
তিনি আরও জানান, এমনিতে একটি এলএনজি টার্মিনালের মুরিং দড়ি ছিঁড়ে যাওয়ায় ঢাকায় গ্যাস সরবরাহে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। এই অবস্থায় আমরা পুরান ঢাকার পুরনো লাইনগুলো বদলে নতুন লাইন বসানোর পরিকল্পনা নিয়েছি। ধীরে ধীরে সংকট কমে আসবে বলে আশা করছি।