X
শনিবার, ১৮ মে ২০২৪
৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

কঠোরতার ফল পাচ্ছে তিতাস, কমছে অবৈধ লাইন

সঞ্চিতা সীতু
১১ জুন ২০২২, ২৩:৩০আপডেট : ১২ জুন ২০২২, ১৫:৪২

কঠোরতায় সফলতা পেয়েছে তিতাস গ্যাস বিতরণ কোম্পানি। সোনারগাঁও ও কামরাঙ্গীরচরের গ্রাহকরা এখন আইন মানতে শুরু করেছেন। পরিশোধ হচ্ছে বকেয় বিল। কমছে অবৈধ লাইন। দুই এলাকার তিতাসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপ করে এমনটা জানা গেছে।

তারা বলছেন, সব এলাকায় অভিযান চালানো গেলে গ্যাসের অবৈধ সংযোগ শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনা সম্ভব। বৈধ গ্রাহকরাও তখন বিল দিতে উৎসাহ পাবেন।

প্রসঙ্গত, জ্বালানি বিভাগ সম্প্রতি অবৈধ সংযোগের বিষয়ে অনেক কঠোর হয়েছে। জ্বালানি বিভাগের তরফ থেকে নিয়মিত বিষয়টি মনিটরিংও হচ্ছে।

অবৈধ সংযোগের কারণে সরকারের রাজস্ব কমার সঙ্গে সঙ্গে উচ্চদরের এলএনজি আমদানির ফলে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রারও প্রয়োজন হয়। দুই দিক দিয়েই গুনতে হয় লোকসান।

আবাসিকে নতুন করে গ্যাস সংযোগ বন্ধ করার পর গ্যাসের অবৈধ ব্যবহার বাড়তে শুরু করে। দেখা যায় কোনও বাড়িতে আগে একটি বা দুটি চুলার অনুমোদন ছিল। বাড়িটা বড় করার পর আরও সংযোগের চাহিদা তৈরি হয়। কিন্তু তিতাস নতুন করে সংযোগ না দেওয়ায় যে যেভাবে পেরেছে সংযোগ নেয়।

তিতাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একটি সিন্ডিকেটও এ কাজে সহায়তা করেছে।

অবৈধ ব্যবহারকারী এখন কত জন তার সঠিক পরিসংখ্যান কারও কাছে নেই। পেট্রেবাংলা ও মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, কোনও এলাকায় অবৈধ লাইন বিচ্ছিন্ন করার পরই আবার লাইন জুড়ে দেওয়া হতো। এতে কোনোভাবেই অবৈধ ব্যবহারকারীদের দমানো সম্ভব হচ্ছিল না।

গত বছরের ১৬ মে সোনারগাঁওয়ের কাঞ্চন ব্রিজের কাছে অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার জন্য মূল লাইন বিচ্ছিন্ন করে তিতাস। এতে বৈধ-অবৈধ সবার লাইন বন্ধ হয়ে যায়।

ওই সময় তিতাস জানায়, সেখানকার ২০ হাজারেরও বেশি গ্রাহক অবৈধ। দুই উপজেলায় বৈধ গ্রাহক মাত্র ১১শ। তাদের আবার ৯০ শতাংশের গ্যাস বিল বকেয়া। অধিকাংশই ৮/১০ বছর ধরে বিল দেয় না।

এই ঘটনার পর স্থানীয়ভাবে প্রথমে উত্তেজনা দেখা দিলেও পরে সুফল পাওয়া গেছে। তিতাস বলছে, ওই এলাকায় যারা অবৈধ লাইন ব্যবহার করতো তারা অনেকে নিজ থেকেই লাইনটি বিচ্ছিন্ন করেছে। আগে অনেক গ্রাহক বিল জমিয়ে রাখতো। সেটার পরিমাণও কমেছে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিতাসের সোনারগাঁ আঞ্চলিক বিপণন বিভাগের উপ-মহাব্যবস্থাপক মো. সুরুজ আলম বলেন, প্রতি সপ্তাহে অভিযান চলছে। ওই এলাকার অবৈধ লাইন এখন নেই বললেই চলে। এখন কেউ অবৈধ লাইন স্থাপনও করতে পারবে না। ওদের কারণে ভোগান্তির শিকার হওয়ায় বৈধরাও এখন সচেতন। বকেয়া বিলের বেশিরভাগই ওই সময় তুলে আনা গিয়েছিল। এখন গ্রাহকরা নিয়মিত বিল দিচ্ছেন।

তিনি আরও বলেন, মদনপুর থেকে বন্দর পর্যন্ত এই লাইনেও আমরা লাইন বন্ধ করে কাজ করেছিলাম। এতে লাভ হয়েছে। বিল আদায় হচ্ছে। লাইন কাটার পর যারা বড় গ্রাহক তারাই অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে সহযোগিতা করেছে।

একই অভিজ্ঞতা কামরাঙ্গীরচরেরও। তিতাস অভিযানে গিয়ে দেখেছে সেখানে বৈধর চেয়ে অবৈধ লাইন ৫ গুণেরও বেশি। বৈধ ব্যবহারকারীরাও বিল দিচ্ছিলেন না। গণহারে লাইন কাটা আর জরিমানার মধ্যে পড়ে এখন গ্রাহকরা সতর্ক। অর্ধেকের বেশি বকেয়া বিল আদায় হয়েছে ইতোমধ্যে। অনেকে জরিমানার ভয়ে নিজেই অবৈধ লাইন বিচ্ছন্ন করছেন।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিতাসের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) নজিবুল হক বলেন, ‘অবৈধ সংযোগ যারা নিতেন তাদের অনেকেই ক্ষমতাশালী। এ কারণেও অনেক সময় লাইন কাটতে পারিনি। হাজার হাজার অবৈধ লাইন থাকে। সব কেটেও শেষ করা যায় না।’

তিনি বলেন, ‘কামরাঙ্গীরচরে বৈধ গ্রাহক ১২ হাজার ৪৮০ জন। নিয়মিত বিল দেন ১০৫ জন। যা মোট গ্রাহকের এক শতাংশও নয়। লাইন কাটার পর মোট বকেয়ার ৮৪ কোটি টাকার মধ্যে পরিশোধ করা হয়েছে ১০ কোটি টাকা। বাকিটা ছয় মাসের কিস্তিতে পরিশোধ করার শর্তে আমরা আবার সংযোগ দিয়েছি। এখন মনিটরিং করবো। দেখা যাক কী হয়।’

এই বিষয়ে তিতাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হারুনুর রশীদ মোল্লাহ বলেন, এই ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে। এত দামি গ্যাস আমরা অবৈধভাবে ব্যবহার করতে দিতে পারি না। সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে। আমরা বিল পাচ্ছি না। কঠোর হতেই হচ্ছে।

/এফএ/
সম্পর্কিত
শনিবার ১৫ ঘণ্টা গ্যাসের চাপ কম থাকবে রাজধানীর কিছু এলাকায়
মেশিনের আঘাতে গ্যাস লাইনে লিকেজ, ১৫ কারখানার উৎপাদন বন্ধ
সাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে দরপত্র কিনেছে ৭ আন্তর্জাতিক কোম্পানি
সর্বশেষ খবর
বিকল্প অর্থনীতি ও গ্রাম্য কায়কারবার
উপন্যাসবিকল্প অর্থনীতি ও গ্রাম্য কায়কারবার
ভাসমান বন্দর হয়ে গাজায় ত্রাণ পৌঁছানো শুরু
ভাসমান বন্দর হয়ে গাজায় ত্রাণ পৌঁছানো শুরু
বার্সা-মেসির চুক্তির ন্যাপকিন পেপার নিলামে বিক্রি হয়েছে ১১ কোটি টাকায়
বার্সা-মেসির চুক্তির ন্যাপকিন পেপার নিলামে বিক্রি হয়েছে ১১ কোটি টাকায়
গতিশীল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাদুঘরে ‘শিক্ষার্থী’ কোথায়?
গতিশীল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাদুঘরে ‘শিক্ষার্থী’ কোথায়?
সর্বাধিক পঠিত
অতিরিক্ত ডিআইজি মনিরুজ্জামানের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ ইসির
অতিরিক্ত ডিআইজি মনিরুজ্জামানের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ ইসির
ত্বক তারুণ্যদীপ্ত দেখানোর ৮ টিপস 
ত্বক তারুণ্যদীপ্ত দেখানোর ৮ টিপস 
যাত্রীর জামাকাপড় পুড়িয়ে পাওয়া গেলো সাড়ে চার কোটি টাকার স্বর্ণ
যাত্রীর জামাকাপড় পুড়িয়ে পাওয়া গেলো সাড়ে চার কোটি টাকার স্বর্ণ
কাশ্মির সীমান্তের দুই দিকে বিপরীত দুই দৃশ্য
কাশ্মির সীমান্তের দুই দিকে বিপরীত দুই দৃশ্য
ইসরায়েলগামী অস্ত্রের জাহাজ নোঙর করতে দেয়নি স্পেন
ইসরায়েলগামী অস্ত্রের জাহাজ নোঙর করতে দেয়নি স্পেন