করোনাভাইরাসের টিকা আনতে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে করা চুক্তিটি বাণিজ্যিক, এটি সরকারের সঙ্গে সরকারের (জিটুজি) চুক্তি নয় বলে জানিয়েছেন বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল হাসান।
সোমবার (৪ জানুয়ারি) গুলশানে নিজ বাসভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে নাজমুল হাসান বলেন, ভারত থেকে টিকা পাওয়ার ব্যাপারে কোনও অনিশ্চয়তা নেই।
প্রসঙ্গত, সোমবার বার্তা সংস্থা এপির খবরে বলা হয়, ভারতের চাহিদা মেটানোর পর সেরাম ইনস্টিটিউট অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রেজেনেকার টিকা বিদেশে রফতানি করতে পারবে। গত ৫ নভেম্বর বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট ত্রিপক্ষীয় চুক্তি সই করে। চুক্তির আওতায় সেরাম ইনস্টিটিউট ৩ কোটি টিকা বাংলাদেশকে দেওয়ার কথা।
দুপুরের সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব আবদুল মান্নান জানান, টিকা আমদানি নিয়ে সরকারের সঙ্গে সরকারের চুক্তি হয়েছে। এ কারণে ভারত সরকারের নেওয়া সিদ্ধান্ত এক্ষেত্রে কার্যকর হবে না।
তবে সন্ধ্যায় নাজমুল হাসান বলেন, ‘স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব হয়তো অন্য কোনও টিকা আমদানির চুক্তির কথা বলেছেন। এখানে জিটুজির কোনও প্রশ্নই ওঠে না। আমার জানা নাই। স্বাস্থ্য সচিব কোন ভ্যাকসিনের কথা বলছেন আমি জানি না। এটা হতে পারে অন্য ভ্যাকসিন, সরকারের অন্য কোম্পানির সঙ্গে থাকতেই পারে…আমার জানা নাই। এখানে বেক্সিমকো ফার্মাও গভর্নমেন্ট না সেরাম ইনস্টিটিউটও গভর্নমেন্ট না। কাজেই এখানে গভর্নমেন্ট টু গভর্নমেন্ট কীভাবে হতে পারে? এটা ত্রিপক্ষীয় চুক্তি।’
নাজমুল হাসান বলেন, ভারত টিকা দেবে না এমন একটা খবর এসেছে। কিন্তু বেক্সিমকো আজও সেরামের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেছে। চুক্তি অনুযায়ীই সেরাম বাংলাদেশকে টিকা দেবে। ওদের কাছ থেকে আমরা কোনও নেতিবাচক কথা শুনিনি। আমার ধারণা কেউ কোনও ভুল করছে। এখানে কোথাও বলা হয়নি এক্সপোর্ট করা যাবে না। নিউজটা আমিও শুনেছি।
তিনি বলেন, সত্যি কথা বলতে আমি বা আমরা এটা নিয়ে অতটা চিন্তিত না। কারণ, আমার অ্যাগ্রিমেন্টটা হয়ে গেছে। ওই চুক্তিতে ক্লিয়ার বলা আছে, আমাদের দেশে অ্যাপ্রুভাল দেওয়ার এক মাসের মধ্যে তারা টিকা পাঠাবে।
নাজমুল হাসান জানান, এখন সরকারের সামনে দুটো কাজ, যত দ্রুত সম্ভব এই টিকার অনুমোদন দেওয়া এবং দ্রুত টাকা পাঠিয়ে দেওয়া। অনুমোদনের জন্য বেক্সিমকো সোমবার ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরে আবেদন করেছে। আমরা আমাদের ব্যাংক গ্যারান্টি সরকারের কাছে পৌঁছে দিয়েছি। ব্যাংক গ্যারান্টি পাওয়ার পর এক সপ্তাহের মধ্যে সরকারের এটা পৌঁছে দিতে হবে। আরেকটা হচ্ছে রেজিস্ট্রেশন, যেটা ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর দেবে। আমরা ডকুমেন্টস সব আগেই জমা দিয়েছি। আজকে আনুষ্ঠানিকভাবে আবেদন করেছি। এখন তারা এটা (অনুমোদন) কখন দেবে সেটা তাদের ব্যাপার।
পাপনের মতে, ভারত সরকার যা বলেছে তা যৌক্তিক, তাদের দেশের মানুষকে না দিয়ে রফতানি করা যাবে না। তারা তাদের দেশে জরুরি ব্যবহারের জন্য অনুমোদন দিয়েছে। এটা সব দেশই করে। আমার ধারণা ইট কুড বি ওয়ান ইন্টারপ্রিটেশন, কেউ ভুল করছে বা অন্য কিছু করছে। ওখানে কোথাও লেখা নাই যে এক্সপোর্ট করতে পারবে কি পারবে না। তবে এক্সপোর্টের ওপর একটা বার (নিষেধাজ্ঞা) দিতেই পারে।
আমার দৃঢ় বিশ্বাস, অ্যাগ্রিমেন্ট যেহেতু আগেই হয়ে গেছে এইটাতে সমস্যা হওয়ার কোনও কারণ নেই মন্তব্য করে পাপন বলেন, এটা নিয়ে আমি আজও সেরামের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের কাছ থেকেও আমরা এখন কোনও ইন্ডিকেশন বা কিছু পাইনি যে এটা দেরি হতে পারে।