X
শুক্রবার, ০৯ মে ২০২৫
২৬ বৈশাখ ১৪৩২

আজ ঠাকুরগাঁও মুক্তদিবস

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
০৩ ডিসেম্বর ২০২০, ০৭:১১আপডেট : ০৩ ডিসেম্বর ২০২০, ০৭:১৭

ঠাকুরগাঁওয়ে নির্মিত মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্মারক

আজ ৩ ডিসেম্বর। ৪৮তম ঠাকুরগাঁও মুক্তদিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানি হানাদার মুক্ত হয় এ জেলা। ৯ মাস মরণপণ যুদ্ধ শেষে  বীরের বেশে ঠাকুরগাঁওয়ে প্রবেশ করে জনমানবহীন শহরে নতুন করে প্রাণ সঞ্চারণ করেছিলেন মুক্তিযোদ্ধারা । লক্ষ লক্ষ মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত সংবর্ধনা আর জয় বাংলার ধ্বনি শুনে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েছিলেন তারা । উড়িয়েছিলেন স্বাধীন বাংলার পতাকা এই জেলার মাটিতে।

১৯৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কাল রাতে পাকসেনারা ঝাঁপিয়ে পড়ে নিরীহ বাংলাদেশি মানুষের ওপর। তাদের প্রতিরোধ করতে সারাদেশের মতো ঠাকুরগাঁওবাসীও গড়ে তুলেছিল দুর্বার আন্দোলন। মুক্তিকামী মানুষ তাই মুক্তির স্বাদ নিতে অংশ নিয়েছিল মুক্তিযুদ্ধে।

প্রায় ৮ মাস যুদ্ধের পর ৩০ নভেম্বর পঞ্চগড় হাতছাড়া হওয়ার পর ঠাকুরগাঁওয়ে ঘাঁটি স্থাপন করে পাকবাহিনী। ২ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা বালিয়ার ভুল্লী ব্রিজ উড়িয়ে দেন।  ২ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমনে পিছু হটতে বাধ্য হয় পাকবাহিনী। ৩ ডিসেম্বর বিজয়ের বেশে ঠাকুরগাঁওয়ে প্রবেশ করে মুক্তিযোদ্ধারা। ২৬ মার্চ আমরা পিছু হটলেও পরবর্তীতে আমরা বেশি শক্তি নিয়ে সম্মুখ যুদ্ধ করে বহু পাক সেনাকে খতম করি ।

এ ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বদরুদ্দোজা বদর বলেন, যুদ্ধে পাকসেনারা পিছু হটতে শুরু করে। ঠাকুরগাঁওয়ের অদূরে ভূল্লি ব্রিজ আমরা বোমা মেরে উড়িয়ে দিলে পাকসেনারা সৈয়দপুরে পালিয়ে যায় । আমরা বীরের বেশে প্রবেশ করি ঠাকুরগাঁও শহরে।

ঠাকুরগাঁওয়ে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম প্রধান সংগঠক প্রবীণ রাজনীতিবিদ মো. আকবর হোসেন বলেন, ‘ভারতীয় মিত্রবাহিনীর কমান্ডার এলাহাবাদী ডিসেম্বরের ১ তারিখে আমাদের বললেন, আগামী পরশু আমরা ঠাকুরগাঁওয়ে যেতে পারবো বলে আশা করছি।’ তিনি জানান, ‘পরবর্তীতে ভারতীয় সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা জেনারেল জ্যাকব এর বইয়েও এই তথ্যের উল্লেখ পাওয়া যায়।’

পাকিস্তান হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসররা এই বধ্যভূমিতে হত্যা করে অসংখ্য নিরীহ বাঙালিকে।

উদীচী জেলা সংসদ, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও প্রশাসন দিবসটি যথাযথ মর্যাদায় পালন করে থাকে। নতুন প্রজন্ম এভাবে নিজ জেলা মুক্ত হওয়ার ইতিহাস জানতে পেরে দেশপ্রেমে জাগ্রত হয়। এ বছর জেলা আওয়ামী লীগও জেলা প্রশাসনের সাথে যৌথভাবে দিবসটি পালনে কর্মসূচি দিয়েছে।

মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের দার্শনিক ভিত্তি সম্পর্কে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক মাহবুবুর রহমান বাবলু বলেন, মুক্তিযোদ্ধারা কখনও এটা ভেবে জীবন উৎসর্গ করেননি যে একদিন তাঁরা ভাতা পাবেন, বিশেষ সম্মান পাবেন। তাঁরা দেশমাতা ও জনগণের সামগ্রিক মুক্তির জন্যই জীবনবাজি রেখে লড়াই করে গেছেন। তাই এদেশে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান জানাতে একটি পৃথক দিবস ও প্রত্যেক জেলায় পৃথক গোরস্থানের দাবি জানান তিনি যাতে কোনও যুদ্ধাপরাধীর পাশে কোনও মুক্তিযোদ্ধার কবর না হয়।

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে বিজয় দিবসের পাশাপাশি ৩ ডিসেম্বর গর্বের সঙ্গে স্মরণ করুক এই জেলার মানুষ আর তা ছড়িয়ে পড়ুক প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে এই প্রত্যাশা সকলের।

 

/টিএন/
সম্পর্কিত
নানা আয়োজনে রাজধানীবাসীর বিজয় উদযাপন
বিজয় দিবস উপলক্ষে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সংবর্ধনা
জাবিতে আলোকচিত্র প্রদর্শনী
সর্বশেষ খবর
চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪১.২ ডিগ্রি, বইছে তীব্র তাপপ্রবাহ
চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪১.২ ডিগ্রি, বইছে তীব্র তাপপ্রবাহ
জাতি আ.লীগের তওবার ধোঁকায় আর পড়বে না: হেফাজত
জাতি আ.লীগের তওবার ধোঁকায় আর পড়বে না: হেফাজত
রিমান্ড শেষে কারাগারে সাবেক এমপি জাফর 
রিমান্ড শেষে কারাগারে সাবেক এমপি জাফর 
ফরিদপুরে বিস্ফোরক মামলায় আওয়ামী লীগের ৫ নেতাকর্মী গ্রেফতার
ফরিদপুরে বিস্ফোরক মামলায় আওয়ামী লীগের ৫ নেতাকর্মী গ্রেফতার
সর্বাধিক পঠিত
জার্সি পরেই যমুনার সামনে দায়িত্বে রমনার ডিসি মাসুদ আলম
জার্সি পরেই যমুনার সামনে দায়িত্বে রমনার ডিসি মাসুদ আলম
‘সাবেক রাষ্ট্রপতির দেশত্যাগে জড়িতদের শাস্তি দিতে না পারলে আমি চলে যাবো’
‘সাবেক রাষ্ট্রপতির দেশত্যাগে জড়িতদের শাস্তি দিতে না পারলে আমি চলে যাবো’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে ৫৬ জনের পদত্যাগ, তুলেছেন দুর্নীতির অভিযোগ
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে ৫৬ জনের পদত্যাগ, তুলেছেন দুর্নীতির অভিযোগ
জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন থেকে পদত্যাগ করলেন স্নিগ্ধ
জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন থেকে পদত্যাগ করলেন স্নিগ্ধ
রাতভর নাটকীয়তার পর সকালে গ্রেফতার আইভী, দিলেন ‘জয় বাংলা’ স্লোগান
রাতভর নাটকীয়তার পর সকালে গ্রেফতার আইভী, দিলেন ‘জয় বাংলা’ স্লোগান