নিখোঁজের ২৯ দিন পর উদ্ধার হওয়া মা রহিমা বেগমের সঙ্গে মরিয়মসহ অন্য মেয়েরা রবিবার দুপুরে খুলনা পিবিআই কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করার সুযোগ পান। পিবিআই পুলিশ সুপারের (এসপি) কক্ষে তাদের সাক্ষাৎ হয়। এ সময় তারা একে অপরকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
পিবিআই কার্যালয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে ১৫ মিনিট মাকে জড়িয়ে ধরে মেয়েরা কাঁদতে থাকেন। একপর্যায়ে পিবিআই সদস্যরা পরিস্থিতি শান্ত করেন এবং তাদের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার কথা বলেন।
কান্নারত অবস্থায় মেয়েরা মাকে বলতে থাকেন, ‘আমাদের ছেড়ে আর কোনোদিন কোথাও যাবে না! আমাদের জমি দরকার নেই। মাকে দরকার, তোমাকে দরকার!’
নিখোঁজ রহিমা খাতুনকে ফরিদপুরের বোয়ালমারী ইউনিয়নের সৈয়দপুর গ্রামের কুদ্দুস বিশ্বাসের বাড়ি থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। খুলনার দৌলতপুরের বণিকপাড়া থেকে নিখোঁজের ২৮ দিন পর শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) রাত পৌনে ১১টার দিকে তাকে উদ্ধার করা হয়।
উল্লেখ্য, গত ২৭ আগস্ট রাত সাড়ে ১০টার দিকে পানি আনতে বাড়ি থেকে নিচে নামেন রাহিমা বেগম (৫২)। একঘণ্টা পার হলেও তিনি বাসায় ফিরে আসেন না। পরে মায়ের খোঁজে সন্তানরা সেখানে গিয়ে তার ব্যবহৃত স্যান্ডেল, গায়ের ওড়না ও কলস রাস্তার ওপর পড়ে থাকতে দেখেন। রাতে সম্ভাব্য সকল স্থানে সন্ধান নেওয়ার পর মাকে পান না। এরপর সাধারণ ডায়েরি ও পরে কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে দৌলতপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। এ মামলার তদন্তকালে পুলিশ ও র্যাব ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৬ জনকে গ্রেফতার করে। এরা হলেন খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) প্রধান প্রকৌশল কার্যালয়ের সহকারী প্রকৌশলী মো. গোলাম কিবরিয়া, নিখোঁজ গৃহবধূর দ্বিতীয় স্বামী হেলাল হাওলাদার, দৌলতপুর মহেশ্বরপশা বণিকপাড়া এলাকার মহিউদ্দিন, পলাশ, জুয়েল ও হেলাল শরীফ। এ অবস্থায় বাদীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১৪ সেপ্টেম্বর আদালত মামলাটির তদন্তভার পিবিআইতে পাঠানোর আদেশ দেন। এরপর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করে নথিপত্র ১৭ সেপ্টেম্বর বুঝে নেয় পিবিআই খুলনা। এখন এই মামলা তদন্ত করছেন পিবিআই পরিদর্শক আব্দুল মান্নান। ২২ সেপ্টেম্বর রহিমার মেয়ে মরিয়ম আক্তার ওরফে মরিয়ম মান্নান দাবি করেন, তার মায়ের লাশ তিনি পেয়েছেন। তিনি ২৩ সেপ্টেম্বর ময়মনসিংহের ফুলপুরে দিনভর অবস্থান নেন এবং ব্যস্ততম সময় অতিবাহিত করেন। একই সাথে সেখানে ১০ সেপ্টেম্বর উদ্ধার হওয়া অজ্ঞাত এক মহিলার লাশকে নিজের মা বলে শনাক্ত করেন। এবং ডিএনএ প্রোফাইল করার জন্য সম্মত হন। ২৫ সেপ্টেম্বর ময়মনসিংহের আদালতে ডিএনএ প্রোফাইল করার আবেদন করার কথা রয়েছে।
আরও পড়ুন:
- খুলনা থেকে গোপালগঞ্জ-চট্টগ্রাম ঘুরে ফরিদপুরে যান রহিমা
- জীবিত উদ্ধার রহিমা, বস্তাবন্দি লাশটা তাহলে কার?
- এতদিন কোথায় ছিলেন রহিমা?
- খুলনার নিখোঁজ সেই রহিমা ফরিদপুরে জীবিত উদ্ধার
- ‘আমার মাকে পেয়ে গেছি’
- দাফন হওয়া লাশটি কি মরিয়মের মায়ের?
- ‘ফুলপুরে দাফন হওয়া লাশটি আমার মায়ের’
- ২৭ দিন ধরে নিখোঁজ নারী, মামলা তদন্তের দায়িত্বে পিবিআই