শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের মধ্যে সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অর্ধ শতাধিক আহত হয়েছেন। শুক্রবার (১৬ জুন) বিকাল ৫টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী একাধিক শিক্ষার্থী জানান, বহিরাগতদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে ঢুকতে না দেওয়ায় নিরাপত্তাকর্মীদের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে নিরাপত্তাকর্মীদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী তাদের ভেতরে যেতে বাধা দেন। একপর্যায়ে শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বহিরাগতদের মধ্যে হাতাহাতি হয়। এতে উভয়পক্ষ বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটের সামনে মুখোমুখি অবস্থান নেয়। শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় ফটকের সামনের সড়ক অবরোধ করেন। এসময় উভয়পক্ষ দেশিয় অস্ত্রসহ অবস্থান নেন এবং ইট-পাটকেল ছুড়তে থাকেন।
এদিকে এ ঘটনা যুবলীগের সভাপতি পদপ্রার্থী ও সিলেট মহানগর পেশাজীবী পরিষদের সহ-সভাপতি দুলাল মিয়ার নির্দেশে হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তাদের অভিযোগ, দুলাল মিয়ার স্থানীয় কার্যালয় রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের বিপরীতে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের যৌন হয়রানি করে আসছেন। এছাড়া গেটে থাকা দোকানপাটে চাঁদাবাজি ও মাদকের ব্যবসা করেন। বিভিন্ন সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ঝামেলা করেন।
এ বিষয়ে জানতে দুলাল মিয়াকে কল দিলে পাওয়া যায়নি। তবে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল হান্নান বলেন, ‘দুলাল একটি রাজনৈতিক সংগঠনের নেতা। তিনি কখনও এমন কাজ করতে পারেন না। তার বিরুদ্ধে এ ধরনের কোনও অভিযোগ আগে শোনা যায়নি।’
এদিকে স্থানীয় যুবলীগ নেতা দুলালের গাড়ি ও কার্যালয় ভাঙচুর করার অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন শিক্ষার্থীরা।
এ বিষয়ে শাবি শাখা ছাত্রলীগের সাবেক পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক খলিলুর রহমান বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা তাদের কার্যালয়ের সামনেই যায়নি। তাদের গাড়ি ও কার্যালয় তারা ভাঙচুর করছে, শিক্ষার্থীরা কেউ ভাঙচুর করেননি।’
আহতদের বিষয়ে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. কামরুজ্জামানসহ অন্তত ৩০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়ে সিলেটের এম এ জি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল সেন্টারে চিকিৎসা নেন। এছাড়া গুরুতর আহত হয়ে ওসমানী মেডিক্যালে তিন শিক্ষার্থী ভর্তি রয়েছেন। স্থানীয়দের মধ্যেও ৮-১০ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
জালালাবাদ থানার এসআই পীযুষ কান্তি তালুকদার বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছেন।
এ ঘটনায় কোনও পক্ষই পদক্ষেপ নেয়নি বলে জানান এ পুলিশ কর্মকর্তা।
বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. কামরুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের মধ্যে ঝামেলা হয়েছে। এখন পুলিশের সহায়তায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। দুই পক্ষের সঙ্গে বসে এ বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’