গাজীপুর-২ (গাজীপুর সদর ও টঙ্গী) আসনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেলের নগদ অর্থের পাশাপাশি সম্পদও বেড়েছে। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকে বর্তমান দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে জমা দেওয়া হলফনামার ভিত্তিতে এ জানা গেছে।
জাহিদ আহসান রাসেলের বাবা প্রয়াত আহসান উল্লাহ মাস্টার গাজীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন। আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হিসেবে ২০০৪ সালে উপ-নির্বাচনের মাধ্যমে রাসেল প্রথমবারের মতো নির্বাচিত হন। আওয়ামী লীগের মনোনয়নে ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে তিনি ওই আসনের সদস্য সদস্য। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাহিদ আহসান রাসেলের দাখিল করা হলফনামার তথ্যমতে এবং অন্যান্য সময়ের হলফনামা বিশ্লেষণ করে সম্পত্তির পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার তথ্য পাওয়া যায়।
এবার নিয়ে পঞ্চম দফায় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন রাসেল। কৃষি খাত থেকে তার কোনও আয় না থাকলেও হলফনামায় তিনি এবার ব্যবসা ও কৃষিকে পেশা হিসেবে দেখিয়েছেন। তার শিক্ষাগত যোগ্যতা স্নাতক।
জাহিদ আহসান রাসেল নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দাখিল করা হলফনামায় পেশা হিসেবে ছাত্র ও ব্যবসা দেখিয়েছেন। সে সময় ব্যবসা থেকে ৪ লাখ ৩৫ হাজার টাকা বার্ষিক আয় দেখানো হয়েছিল। নগদ ১৫ হাজার টাকা অস্থাবর সম্পত্তি ছিল। ২ কোটি ১০ লাখ ৫ হাজার ৪৯০ টাকা মূল্যের গাড়ি পৈতৃক সূত্রে দেখিয়েছিলেন। ঋণ হিসেবে সুদহীন ২ কোটি ১০ লাখ টাকা ছিল। ব্যাংকে জমা দেখিয়েছিলেন ৭০ হাজার ৭৯৫ টাকা।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে দায়ের করা হলফনামা অনুযায়ী, জাহিদ আহসান রাসেলের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে নিজের নামে জমা অর্থের পরিমাণ ১৪ লাখ ১৬ হাজার ১৩১ টাকা, স্ত্রীর নামে ৯ লাখ ৪০ হাজার ৩৪৫ টাকা। ব্যবসায় রাসেলের বাৎসরিক আয় ১ লাখ ২৬ হাজার টাকা এবং শেয়ার, সঞ্চয়পত্র, ব্যাংক আমানত ৯৮ হাজার ৩৯০ টাকা। এ ছাড়া বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার ২৩ লাখ ৭২ হাজার ৮১০ টাকা এবং চট্টগ্রাম আবাহনী লিমিটেডের শেয়ার আছে ৫ লাখ টাকা।
নিজ নামে করমুক্ত একটি এসইউভিসহ তিনটি গাড়ি রয়েছে; যার মূল্য ৩ কোটি ৭৪ লাখ ৯৩ হাজার ৬৩৪ টাকা। তার স্ত্রীর নামে একটি গাড়ি আছে, মূল্য ১৩ লাখ টাকা। টঙ্গীতে স্থাবর সম্পত্তি পৈতৃক সূত্রে পাওয়া ১ দশমিক ৬৫০ শতাংশ জমি, উত্তরায় তৃতীয় প্রকল্পে ৫ কাঠা জমি। রাজধানীর বনানীতে তার স্ত্রীর নামে পৈতৃক সূত্রে পাওয়া দুটি ফ্ল্যাট আছে। প্রতিমন্ত্রী হিসেবে বাৎসরিক সম্মানী ভাতা পান ১৭ লাখ ৯৪ হাজার ৪২০ টাকা এবং বিশেষ সুবিধাদি হিসেবে পান ৩৫ লাখ ৫৬ হাজার ৮৩৮ টাকা। নিজ নামে তার নগদ টাকা আছে ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা।
প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল গণমাধ্যমকে জানান, তার বেশির ভাগ সম্পত্তি পৈতৃক সূত্রে পাওয়া।
এই আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী জয়নাল আবেদিনের অস্থাবর সম্পত্তি হিসেবে নগদ ১৬ লাখ ৪০ হাজার টাকা এবং ব্যাংকে জমা ৪ লাখ ৩০ হাজার টাকা রয়েছে। স্ত্রীর নামে ৩৫ ভরি সোনা আছে। তার বার্ষিক আয় ৪ লাখ ৬০ হাজার টাকা।
এ আসনে আওয়ামী লীগ নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী কাজী আলিম উদ্দিনের পেশা ব্যবসা। নগদ ২৩ লাখ ১ হাজার ৫৭৫ টাকা অস্থাবর সম্পত্তি রয়েছে। আয়ের উৎস ব্যবসা থেকে আয় ১৫ লাখ টাকা। গাড়ি আছে দুটি। স্থাবর সম্পত্তির মধ্যে তার অকৃষিজমি আছে ৯৫ দশমিক ২৫ শতাংশ। রয়েছে গাজীপুর শহরে একটি বাড়ি ও একটি ফ্ল্যাট। ব্যাংক ঋণ আছে ৫০ লাখ টাকা।
যুবলীগ নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী সাইফুল ইসলামের পেশা ব্যবসা। নগদ টাকা আছে নিজের ২০ লাখ টাকা এবং স্ত্রীর ১০ লাখ টাকা। ৪ লাখ ৮১ হাজার ৪২৩ টাকা বাড়ি ভাড়া পান। ব্যবসা থেকে আয় ১৮ লাখ ১০ হাজার। ব্যাংকে নিজ নামে আছে ১০ লাখ টাকা এবং স্ত্রীর নামে আছে ৫০ হাজার টাকা। গাড়ি আছে একটি। ব্যাংকে নিজের নামে ঋণ আছে ২ কোটি ২০ লাখ টাকা, স্ত্রীর নামে ঋণ আছে ১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। সাড়ে ৫ একর অকৃষি জমি আছে তার। স্ত্রীর নামে আছে ৩৫ শতাংশ জমি। রয়েছে দোতলা একটি বাড়ি। আছে ৬২টি টিনশেড রুম।