চাঁদপুরের মতলব উত্তরে কলকারখানার দূষিত কেমিক্যালযুক্ত পানি মেঘনা নদীর তলদেশে ছড়িয়ে পড়ায় দেশি জাতের মাছ মরে ভেসে উঠছে। এতে নদীর তীরবর্তী এলাকার পরিবেশ দূষিত হচ্ছে।
শনিবার (২৫ জানুয়ারি) সকাল থেকে উপজেলার দশানী, ষাটনল, জেলেপাড়া, বাবুবাজার এলাকায় মেঘনা নদীতে মরা মাছ ভাসতে দেখা যায়। ওই এলাকায় পানি থেকে দুর্গন্ধ বের হচ্ছে বলে জানান স্থানীয়রা।
স্থানীয়রা বাসিন্দারা বলেন, ‘বুড়িগঙ্গা ও শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে গড়ে ওঠা বিভিন্ন কলকারখানার দূষিত কেমিক্যালযুক্ত পানি মেঘনা নদীর তলদেশ দিয়ে নদীর নিম্নাঞ্চলে আসছে। নদী দূষিত হয়ে দেশি ছোট-বড় মাছ মরে ভেসে উঠছে। পচা মাছের দুর্গন্ধে নদীপাড়ের মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে।’
স্থানীয় দশানী জামে মসজিদের খতিব মাওলানা ইমদাদুল হক বলেন, ‘শুক্রবার সকালে নদী এলাকায় কিছু দেশি প্রজাতির মাছ মরে পাড়ে ভেসে ওঠে। তবে ওই দিনের পর আর মাছ ভেসে ওঠেনি। গত বছরও এই সময়ে এইরকম মাছ মরার ঘটনা ঘটে।’
উপজেলা মৎস্য বিভাগ জানায়, ঢাকা, মুন্সীগঞ্জ ও নারায়ণগঞ্জ জেলার নদীর পানি এখানে প্রবেশ করেছে। শহরের বিভিন্ন কারখানার দূষিত বর্জ্য ও ময়লা-আবর্জনা নদীতে ফেলা হচ্ছে। ফলে এক সপ্তাহ ধরে নদীর পানির রঙ বদলে যাচ্ছে। দূষিত পানির কারণে পানির পিএইচ ও অ্যামোনিয়া মাত্রার চেয়ে কয়েক গুণ বেড়ে গেছে। দ্রবীভূত অক্সিজেন প্রায় শূন্য হয়ে যাওয়ায় নদীতে থাকা বিভিন্ন জাতের বড় মাছ, মাছের পোনা ও জলজ প্রাণী মারা যাচ্ছে। মাছগুলো মরে ভেসে গেছে এবং নদীর পাড়ে জমাট হয়ে পচে এলাকায় দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।
মতলব উত্তর উপজেলার জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা বিজয় কুমার দাস বলেন, ‘মাছ মারা যাওয়ার কারণ অনুসন্ধান করা হবে। বর্জ্যের কারণে নদীর পানিতে অক্সিজেন কমে যাওয়ায় মাছ মরে ভেসে ওঠে। পানিতে মিশে থাকা দূষিত পানির নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। ওই পানি পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে।’
এর আগে গত বছরও মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল এলাকায় পানিতে দূষণের মাত্রা বেড়ে যায় এবং অক্সিজেন কমে যাওয়ায় মাছ মরে ভেসে ওঠে। তবে এই বিষয় নিয়ে মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের কর্মকর্তারা কাজ করছেন বলে জানা গেছে।