ময়মনসিংহে বাম গণতান্ত্রিক জোটের মিছিলে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে। বুধবার (১২ মার্চ) বিকালে ময়মনসিংহ-নগরীর নতুন বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ হামলায় দায়ী করা হয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীদের।
এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ধর্ষণ, নারী নির্যাতনের বিচার, আইনশৃঙ্খলার উন্নয়ন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধের দাবিতে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিকালে নগরীর মালগুদাম থেকে মিছিল শুরু করেন বাম গণতান্ত্রিক জোট ময়মনসিংহ জেলার নেতাকর্মীরা। মিছিলটি গাঙ্গিনাপাড়ে ঢোকার পরই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একটা মিছিল বাম জোটের মিছিলের ওপর চড়াও হওয়ার চেষ্টা করে। বিভিন্ন উসকানিমূলক স্লোগান দিতে থাকে। এর কিছুক্ষণ পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের সঙ্গে যুক্ত হয় ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের একটা মিছিল। এরপর পরই তারা নতুন বাজার মফিজউদ্দিন প্লাজার সামনে বাম জোটের নেতাকর্মীদের ওপর যৌথভাবে হামলা করে।
প্রথমেই নারী কর্মীদের ওপর হামলা, ইটপাটকেল ছুড়ে নেতাকর্মীদের গণহারে লাথি, কিল, ঘুষি মারতে থাকে। সন্ত্রাসীদের এই ন্যক্কারজনক হামলায় আহত হন জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম সংগঠক ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট ময়মনসিংহ জেলা আহ্বায়ক আরিফুল হাসান, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট বাকৃবি শাখার সহ-সভাপতি অর্ণব দাস, আনন্দমোহন কলেজের যুগ্ম আহ্বায়ক জুঁই সহ বাম জোটের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ। হামলার পর বাম জোটের নেতাকর্মীরা আবারও মিছিল সংগঠিত করেন।
মিছিল পরবর্তী সমাবেশে বক্তব্য দেন– বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক শেখ বাহার মজুমদার, সিপিবি জেলা সভাপতি অ্যাডভোকেট এমদাদুল হক মিল্লাত, বাসদ (মার্কসবাদী) সমন্বয়ক শেখর রায়, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির আহ্বায়ক আজহারুল ইসলাম আজাদ, বাসদ মহানগর কমিটির সদস্য অপূর্ব চন্দ্র দেবনাথ ও অন্য নেতৃবৃন্দ।
সমাবেশে বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতৃবৃন্দ এই হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর একটা গণতান্ত্রিক প্রতিবাদ মিছিলে বর্বরোচিত হামলা আবারও ফ্যাসিবাদী সংস্কৃতির লক্ষণ। সারা দেশে হত্যা, ধর্ষণ, নিপীড়নের বিরুদ্ধে সাধারণ ছাত্র-জনতা যখন আন্দোলন করছেন, সেই আন্দোলনকে “শাহবাগী” ট্যাগ দিয়ে দমনের চেষ্টা করছে কিছু সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী। তারই অংশ হিসেবে আজ বাম জোটের নেতাকর্মীদের ওপর এই ন্যক্কারজনক হামলা করলো। অবিলম্বে এই হামলায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।’
ময়মনসিংহ কোতয়ালি মডেল থানার ওসি শফিকুল ইসলাম খান বলেন, ‘হামলার ঘটনা শুনেছি। তবে এখনও কোনও অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’