যশোরের অভয়নগরে পৃথক স্থানে পুকুরের পানিতে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। তারা হচ্ছে রুকসানা (১০) অভয়নগর উপজেলার বুইকারা গ্রামের জাহাঙ্গীর হোসেনের মেয়ে এবং মাগুরা সদরের মিঠাপুকুর গ্রামের মেহেদী হাসানের ছেলে আরিয়ান হোসেন (দেড় বছর)।
বুধবার (১২ মার্চ) দুপুর ৩টার দিকে অভয়নগর উপজেলার বুইকারা গ্রামে রুকসানা এবং একই দিন বেলা ১১টার দিকে একই উপজেলার প্রেমবাগ ইউনিয়নের মাগুরা গ্রামে আরিয়ান হোসেন তার নানা বাড়ির পুকুরের পানিতে ডুবে মারা যায়।
জানা গেছে, নানাবাড়ি বেড়াতে এসে শিশু আরিয়ান হোসেনের মৃত্যু হয়েছে। আর কর্তব্যরত চিকিৎসকের অবহেলায় রুকসানার মৃত্যু হয়েছে বলে নিহতের পরিবার অভিযোগ করেছেন।
ভাঙচুর এড়াতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
রুকসানার বাবা জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, দুপুরে রুকসানা তার কয়েক বন্ধুর সঙ্গে বাড়ির পাশের পুকুরে গোসল করছিল। একপর্যায়ে পুকুরের গভীর অংশে রুকসানা তলিয়ে গেলে অন্য শিশুরা তাদের খবর দেয়। দ্রুত উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রায় ৩০ মিনিট পর জরুরি বিভাগে আসেন এবং রুকসানাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। সঠিক সময় চিকিৎসক উপস্থিত হলে তার মেয়ের মৃত্যু হতো না বলে তিনি অভিযোগ করেন।
এদিকে, রুকসানার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে বিকালে বুইকারা এলাকাবাসী হাসপাতাল ঘেরাও করেন ভাঙচুর ও চিকিৎসককে মারপিটের চেষ্টা করে। তখন অভয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, অভয়নগর থানার ওসি হাসপাতালে উপস্থিত হন। বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসীর হাত থেকে হাসপাতাল ভাঙচুর ও মারপিটের ঘটনা এড়াতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করেন তিনি।
অপরদিকে, আরিয়ান হোসেনের নানা সেলিম বিশ্বাস বলেছেন, বেলা ১১টার দিকে আরিয়ান বাড়ির পাশে আব্দুল হাকিমের পুকুর পাড়ে খেলা করছিল। কিছু সময় পর তার স্ত্রীর চিৎকারে জানতে পারেন আরিয়ান পুকুরে ভাসছে। দ্রুত উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আলীমুর রাজিব বলেন, ‘পানিতে ডুবে ২ শিশুর মৃত্যুর ঘটনা মর্মান্তিক। চিকিৎসকের অবহেলায় রুকসানা নামে রোগীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ পেয়েছি। জরুরি বিভাগের চিকিৎসকের অবহেলা প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
অভয়নগর থানার ওসি আব্দুল আলিম বলেন, ‘দুই শিশুর মৃত্যুর বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।’
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়দেব চক্রবর্তী বলেন, ‘দুই পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা নেই। তারপরও সরকারি হাসপাতাল ভাঙচুর ও চিকিৎসকদের মারপিট এড়াতে ওসি সাহেবের সহযোগিতায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’