X
শনিবার, ১০ মে ২০২৫
২৬ বৈশাখ ১৪৩২

মহিষের দুধের কাঁচা দইয়ের চাহিদা দেশব্যাপী

আহাদ চৌধুরী তুহিন, ভোলা
১৯ মার্চ ২০১৯, ০৭:০০আপডেট : ২০ মার্চ ২০১৯, ১৭:০৭

মহিষের দুধের দই দ্বীপজেলা ভোলার মহিষের দুধের কাঁচা দইয়ের চাহিদা রয়েছে দেশব্যাপী। এ টক দই গুড়, মিষ্টি অথবা চিনি দিয়ে খাওয়া হয়। এছাড়া মুড়ি, চিড়া ও খৈ দিয়েও খাওয়া যায়। সামাজিক, পারিবারিক ও ঘরোয়া ভোজেও থাকে এ দই।  এছাড়া খাবার হজমে কাঁচা দুধের দই বাড়তি সহায়তা করায় এর জনপ্রিয়তা তুঙ্গে। অনেকেই আত্মীয় বাড়িসহ দূর-দূরান্তের পছন্দের মানুষদের জন্য নিয়ে যান। এছাড়া দেশের বাইরেও প্রিয়জনদের কাছে দই পাঠান অনেকে।
প্রায় ৪৫ বছর ধরে দধির ব্যবসায়ী সূনীল চক্রবর্তী বলেন, ‘মহিষের দুধের দধি তৈরিতে তেমন কোনও বাড়তি ঝামেলা নেই। দুধ জ্বাল বা শোধন করতে হয় না। শুধু কাঁচা দুধটা ছেঁকে মাটির পাত্রটি (টালি) পরিষ্কার করে তাতে দুধ ঢেলে বসিয়ে দিলেই দধি হয়ে যায়। পরে সম্পূর্ণ নিজস্ব পদ্ধতিতে তা বেঁধে দেওয়া হয়। যাতে সহজেই পরিবহন করা যায় দূর-দূরান্তে। এই দধি প্রতিদিন ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মানুষের কাছে পাঠানো হয়।’
পারিবারিকভাবে দধির ব্যবসা পরিচালনা করা গাজীপুর রোডের আদর্শ দধি ভান্ডারের আব্দুল হাই জানান, ‘সাধারণত দেড় থেকে ২ কেজি ওজনের দধির (টালির) চাহিদা বেশি। বর্তমানে দেড় কেজি ওজনের দধি দেড়শ ও দুই কেজি দুইশ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এ দধি থেকে মাখন, ঘি ও ঘোল বানানো হয়। মাখনের কেজি ৮শ ও ঘিয়ের কেজি ১২শ টাকা। তবে, দুধের দাম বাড়লে দধির দামও বাড়ে।’

ভোলা পৌরসভার স্যানিটারি ইন্সপেক্টর মো. ফারুকের মন্তব্য, ভোলার এ মহিষের দধি স্বাস্থ্যসম্মত। এই দধি খেয়ে কারও কোনও সমস্যা হয়েছে বলে তিনি শোনেননি।

মহিষের বাথানের মালিক ও সদর উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান  মো. ইউনুছ জানান, ‘দৌলতখান উপজেলার মদনপুর চরে তাদের বাথানে প্রায় আড়াইশ মহিষ রয়েছে। যা তারা চার পুরুষ ধরে লালন করে আসছেন। দৈনিক এখান থেকে ১৩০ থেকে ১৫০ কেজি দুধ হয়।’

দৈনিক আজকের ভোলা সম্পাদক মু. শওকাত হোসেন বলেন,  ‘ভোলা দ্বীপ হওয়াতে এখানকার ছোট-বড় অসংখ্য চরে মহিষ পালনে বাড়তি সুবিধা পাওয়া যায়। বিশেষ করে অবস্থাসম্পন্ন গৃহস্ত পরিবারগুলো মহিষ পালন করে।  ধারণা করা হচ্ছে, প্রায় দুশ বছর আগে স্থানীয়রা মহিষের দুধ থেকে কাঁচা দধি উৎপাদন শুরু করে। যা ব্রিটিশ আমল থেকে শুরু হয়ে বর্তমান সময়েও সমান জনপ্রিয়।’

ভোলা শহরের দধি ব্যবসায়ী তৃপ্তি দধি ঘরের মালিক নুরুজ্জামান বলেন, ‘দধি বসানোর পর থেকে এর মেয়াদ মূলত এক সপ্তাহ থাকে। তবে ফ্রিজে ৮-১০ দিনও রাখা যায়।’

মনপুরা উপজেলার তিন নম্বর সাকুচিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাকির হোসেন জানান, ভোলার মহিষের দুধের দধি জেলার ঐতিহ্য। মনপুরার বিভিন্ন চরে মহিষের বাতান থেকে প্রতিদিন অন্য জেলার ব্যবসায়ীরা কয়েক হাজার লিটার মহিষের দুধ, দধি ও ঘি কেনেন।

সদর উপজেলার বাংলাবাজার এলাকার দধি বিক্রেতা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘সারাদেশের মধ্যে শুধু এ অঞ্চলেই এক সময় মহিষের দুধের দধির কদর ছিল। অন্যান্য জেলার মানুষ প্রথম প্রথম এর স্বাদ বোঝেনি। বার বার যারা এটা খেয়েছে, তারাই বোঝে এ দধি কতটা মজাদার। সেই প্রাচীন আমল থেকেই দধির প্রচলন। সময়ের সঙ্গে এর চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে।’

 

/এনআই/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের অবরোধ তুলে নিলেন শিক্ষার্থীরা
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের অবরোধ তুলে নিলেন শিক্ষার্থীরা
শাহবাগে মধ্যরাতেও উপচেপড়া ভিড়, চলছে ডকুমেন্টারি প্রদর্শনী
শাহবাগে মধ্যরাতেও উপচেপড়া ভিড়, চলছে ডকুমেন্টারি প্রদর্শনী
আ.লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ, ২০ কিলোমিটার যানজট
আ.লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ, ২০ কিলোমিটার যানজট
আ.লীগের নিষিদ্ধের বিষয়ে বিএনপি সুস্পষ্ট অবস্থান না নেওয়ায় ছাত্রদল নেতার পদত্যাগ
আ.লীগের নিষিদ্ধের বিষয়ে বিএনপি সুস্পষ্ট অবস্থান না নেওয়ায় ছাত্রদল নেতার পদত্যাগ
সর্বাধিক পঠিত
জার্সি পরেই যমুনার সামনে দায়িত্বে রমনার ডিসি মাসুদ আলম
জার্সি পরেই যমুনার সামনে দায়িত্বে রমনার ডিসি মাসুদ আলম
সাবেক শিবির নেতাদের নেতৃত্বে নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ
সাবেক শিবির নেতাদের নেতৃত্বে নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ
যেভাবে বানাবেন কাঁচা আমের টক-মিষ্টি-ঝাল আমসত্ত্ব 
যেভাবে বানাবেন কাঁচা আমের টক-মিষ্টি-ঝাল আমসত্ত্ব 
তিন শিক্ষক আর পাঁচ শিক্ষার্থী দিয়ে চলছে সরকারি বিদ্যালয়
তিন শিক্ষক আর পাঁচ শিক্ষার্থী দিয়ে চলছে সরকারি বিদ্যালয়
কলকাতায় যুদ্ধের প্রস্তুতি মমতা সরকারের
কলকাতায় যুদ্ধের প্রস্তুতি মমতা সরকারের