লেম্বুরবন থেকে গঙ্গামতি পর্যন্ত কুয়াকাটার দীর্ঘ ১৮ কিলোমিটার সৈকতই এখন পর্যটকে টইটুম্বুর। এ ছাড়া শুক্রবার (১৮ মার্চ) দিনব্যাপী শ্রীমঙ্গল বৌদ্ধ বিহার, রাখাইন মার্কেট, ইলিশ পার্ক ও মৎস্য বন্দর মহিপুর-আলীপুরসহ সব পর্যটন স্পটে পর্যটকদের আনাগোনা ছিল চোখে পড়ার মতো। টানা তিন দিনের ছুটিকে কেন্দ্র করে গত বুধবার থেকে প্রায় অর্ধলক্ষাধিক পর্যটকের আগমন ঘটেছে কুয়াকাটায়।
আগত পর্যটকরা সৈকতের বালিতে গা ভাসিয়ে আনন্দে মেতেছেন। পর্যটকদের এমন ভিড়ে বুকিং হয়েছে কুয়াকাটার দুই শতাধিক হোটেলে মোটেলের প্রায় সব রুম। বিক্রি বেড়েছে সংশ্লিষ্ট ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে। তবে আগত পর্যটকরা স্বাস্থ্যবিধি না মানলেও ট্যুরিস্ট পুলিশের পক্ষ থেকে বারবার সচেতনতামূলক মাইকিং করতে দেখা গেছে।
পর্যটক মো. মামুন আর রশিদ বলেন, ‘আমার বাড়ি ভোলা সদর উপজেলায়। বরিশাল কর্মসংস্থান ব্যাংকে চাকরি করি। ছুটি কাটাতে স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে কুয়াকাটায় এসেছি। মেয়ের জন্য বিভিন্ন খেলনাও কিনেছি।’
ঝিনাইদহ থেকে আসা পর্যটক রানা হোসেন বলেন, ‘তিন দিনের ছুটিতে পরিবারের সবাইকে নিয়ে কুয়াকাটায় এসেছি। বিশেষ করে বাচ্চাদের আনন্দ দিতে আমারা এই ভ্রমণের উদ্যোগ নিয়েছি। ওরা সৈকতে সাঁতার কেটেছে, বালুর মধ্যে লাফালাফি, দুষ্টুমিসহ বেশ উপভোগ করছে। অনেক কিছু কেনাকাটাও করেছি।’
ঢাকা থেকে আসা আসমা আক্তার বলেন, ‘আমার হাজব্যান্ড কলেজে চাকরি করেন। কলেজ থেকে ছুটি পাইলেও কোচিং থাকায় ভ্রমণে যাওয়া হয় না। এবার পরিবারের সবাইকে নিয়ে আসলাম, বাবা-মা ছাতার নিচে বসে আছেন। আমরা ছবি তুলছি, বাচ্চাদের বল কিনে দিয়েছি তারা বালুর মধ্যে খেলছে। সৈকতের তীরে উন্মুক্ত যায়গা পেয়ে বাচ্চারা আনন্দে মেতে উঠেছে। আগের থেকে কুয়াকাটার পরিবেশটাও অনেক সুন্দর ও ভালো লাগছে।’
ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব কুয়াকাটার (টোয়াক) সভাপতি রুমান ইমতিয়াজ তুষার জানান, টানা তিন দিনের ছুটিতে অনেক আগেই বুকিং হয়ে গেছে কুয়াকাটার বেশিরভাগ হোটেল-মোটেলগুলো। আর বেশি পর্যটক হওয়ায় বিগত দিনের থেকে ব্যবসায় লাভবান ও ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারবেন পর্যটন সংশ্লিষ্টরা।
কুয়াকাটা পৌরসভার মেয়র আনোয়ার হাওলাদার বলেন, ‘পর্যটকরা যেন স্বাচ্ছন্দ্যে ঘুরতে পারে এবং কোনও প্রকার প্রতারণার স্বীকার না হয় সেজন্য ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ জন্য কুয়াকাটা পৌরসভার টিম সার্বক্ষণিক তদারকি করছে।’
ট্যুরিস্ট পুলিশের কুয়াকাটা জোনের সহকারী পুলিশ সুপার আব্দুল খালেক জানান, তিন দিনের ছুটিতে অসংখ্য পর্যটকের আগমন ঘটেছে কুয়াকাটায়। যে কারণে আগে থেকেই ট্যুরিস্ট পুলিশের কয়েকটি টিম মোতায়েন রয়েছে। সার্বক্ষণিক নজরদারি ও মাইকিং করে বারবার মাস্ক পরা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ পর্যটকদের নিরাপদে থাকার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।’